প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় হিসেবে পরিচিত খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি তদন্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ সরকারমন্ত্রী সত্যিই একটি হিন্দু পরিবারের সম্পদ দখল করে নিয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্যই গঠন করা হয়েছে এই তদন্ত কমিটি৷
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক বন্ধু মন্ডল রতনের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে৷ ব্রাহ্ম দাসও অনেকটা সেরকমই ভাবছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘যে লাউ সেই কদু৷ এটা সবাই জানে, যে সরিষা ভূত তারানোর জন্য জোগার করা হয়েছে, ঐ সরিষার মধ্যেই ভূত আছে৷ অতএব বুঝতেই পারছেন...৷''
বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডের ওপর ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু মিলন সেনের মোটেই আস্থা নেই, নেই কোনো বিশ্বাস৷ তিনি তাই তাঁর মতামত জানিয়েছেন অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে, ‘‘এই সরকার খুবই চালাক, পুলিশকে লাগিয়েছে জামাত শিবির দমন করতে আর বিএনপিকে ফাঁসিয়েছে মামলার গেরাকলে৷ এছাড়া তাদের পার্টির নেতা থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা পর্যন্ত দায়িত্ব পেয়েছে সংখালঘুদের সম্পত্তি দখল করার৷ অতি চালাকের ভবিষ্যত ভালো হয় না৷ আর এক মাঘে সব শীত যায় না, এদের কপালে দুঃখ আছে৷ সামান্যতম দেশ প্রেম থাকলে এই বির্তকিত মন্ত্রীরা পদত্যাগ করতো, যাতে তদন্ত সঠিক হয়৷''
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
নেই নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া
যশোরের অভয়নগরের চাপাতলী গ্রামের প্রবেশপথে পুলিশের সতর্ক অবস্থান৷ গত ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের দিন এই গ্রামের নিম্নবর্ণের হিন্দু অধ্যুষিত মালোপাড়ায় বসবাসরতদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটে৷ আক্রান্তরা জানান, ঘটনাস্থলের মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে থানার অবস্থান হলেও অনেক ফোন করেও সে সময়ে পুলিশ কিংবা কোনো নিরাপত্তাকর্মীর সাড়া মেলেনি৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
‘নদী ঠাকুর’
দুর্বৃত্তদের হামালায় লণ্ডভণ্ড মায়া রানি বিশ্বাসের একমাত্র মাথা গোঁজার ছোট্ট নিবাস৷ সেদিন হামলা শুরু হলে পাশের বুড়ি ভৈরব নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ওপারে উঠে প্রাণে বেঁচে যান বিধবা এই নারী৷ তাঁর ভাষায় ‘নদী ঠাকুর’ সেদিন না থাকলে জানটা হয়ত থাকতো না৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
প্রাণ বাঁচাতে নদীতে
নিজের ঘরের ভাঙা আসবাব, টেলিভিশনের পাশে মালোপাড়ার গৃহবধু উজ্জ্বলা বিশ্বাস৷ হামলাকারীদের ভয়াবহ রূপ সামান্য দেখেছিলেন তিনি৷ প্রাণ বাঁচাতে তিনিও ঝাঁপ দেন বুড়ি ভৈরবে৷ হামলার সময়ে তাঁর মনে হয়েছিল যে ভগবান সেদিন পাশে ছিলেন না৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
বই-পত্র পুড়িয়ে দিয়েছে
কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের বই-পত্র, এমনকি সার্টিফিকেটও পুড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
সুন্দর স্বপ্নে চির
হামলাকারীদের ভেঙে দেয়া আয়নায় কলেজ পড়ুয়া মঙ্গলা বিশ্বাসের প্রতিবিম্ব৷ বাড়ির দেয়ালে টাঙানো এই ভাঙা আয়নার মতোই মঙ্গলার সুন্দর স্বপ্নেও চির ধরিয়েছে হামলাকারীরা৷ মঙ্গলার আক্ষেপ, তাঁর বই-পত্র আর সার্টিফিকেট কী দোষ করলো?
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয়
হামলার ছয় দিন পরে এঁরা ফিরছেন বাড়িতে৷ হামলার সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
হামলার প্রত্যক্ষদর্শী
৮৬ বছর বয়সি মৃত্যুঞ্জয় সরকার সেদিনের হামলার প্রত্যক্ষদর্শী৷ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও দেশ ছাড়েননি তিনি৷ কিন্তু হামলার পর তাঁর মনে হচ্ছিল যে, সে সময়ে ছেড়ে যাওয়াটাই উচিত ছিল তাঁর৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
গাছও রেহাই পায়নি
বাড়ি-ঘরের পাশাপাশি মালোপাড়ার গাছও জ্বালিয়ে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
পলাতক জামায়াত নেতা
মালোপাড়ায় হামলার পরে চাপাতলী গ্রামের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বালিয়াডাঙ্গায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর থানা আমীর মাওলানা আব্দুল আজিজের বাড়ি ভাঙচুর করে যৌথবাহিনী৷ ঘটনার আগে থেকেই পলাতক রয়েছেন এ জামায়াত নেতা৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
আক্রান্তদের অভিযোগ
জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ আওয়ামী লীগ নেতা শেখ আব্দুল ওহাব৷ মালোপাড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য জামায়াত শিবির ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলকেও দায়ী করেছেন অনেকে৷ সাবেক এই সাংসদ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছেন৷ সেখানে নতুন প্রার্থী হিসেবে রণজিৎ রায় মনোনয়ন পাওয়ায় এই দুই জনের সমর্থকদের মাঝে বেশ উত্তেজনা ছিল পুরো নির্বাচনের সময়টায়৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
গণধর্ষণ
যশোরের আরেক ভয়াল জনপদ মনিরামপুর উপজেলার হাজরাইল গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা অনারতী দাস৷ ৭ জানুয়ারি রাতে তাঁর সামনেই অস্ত্রের মুখে একদল দুবৃত্ত গণধর্ষণ করে পুত্রবধু মনিমালা দাস আর ভাতিজি রূপালী দাসকে৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী
কার্তিক দাসকেও সেদিন রাতে সেই ভয়াবহ দৃশ্যের প্রত্যক্ষদর্শী হতে হয়েছিল৷ দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার নিম্নবর্ণের হিন্দু মনিমালা দাসের শ্বশুর ও রূপালী দাসের চাচা তিনি৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
বাড়িঘর ছেড়েছেন
দাসপাড়ায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া পরিবার দুটি আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়েছেন৷
-
মালোপাড়ার হিন্দুদের কান্না থামেনি
শুধুই আতঙ্ক
দাসপাড়ার এক নারী৷ দাসপাড়ার নারীদের এখন নির্ঘুম রাত কাটে আতঙ্কে৷
লেখক: নুরুননাহার সাত্তার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি তদন্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ এ প্রসঙ্গে মো.খালেদ আহমেদের মন্তব্য, ‘‘আরে এটা তো শুধু মাত্র লোক দেখানো, বুঝলেন?'' হাবীব মোল্লা, পলাশ মাহমুদ, সিদ্ধার্থ রায়ও খালেদ আহমেদের সাথে একমত প্রকাশ করেছেন৷
অন্যদিকে দুঃখ করে বন্ধু সুবীর মম প্রশ্ন করেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগের রির্জাভ ভোট বলা হয় হিন্দু ভোটারদের, আর তাঁদের সম্পদ যদি দখল করে ঐ দলের মন্ত্রীরা, তবে হিন্দুরা যাবে কোথায়?'' বন্ধু সুবীরও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন৷
বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে কিনা – তা নিয়ে সন্দীহান পাঠক জাভেদ হোসেন৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‘মিথ্যা উপর যেখানে মূলনীতি গঠিত, সেখানে কি আর সত্য বলা যায়? সত্য বলাটা এখন অপরাধ৷ গণতন্ত্রটা কী?'' জাভেদ হোসেনের এই মন্তব্যকে আশরাফ হোসেন সমর্থন করে বলেছেন, ‘‘মামা তোমার বুদ্ধি আছে৷''
সরকারমন্ত্রী একটি হিন্দু পরিবারের সম্পদ সরকারমন্ত্রী সত্যিই দখল করে নিয়েছেন কিনা – তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানার পর গৌতম মুখার্জির মন্তব্য, ‘‘গরু মেরে জুতা দান...! বিচিত্র বাংলাদেশ৷''
ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু নাজমুল লিখেছেন, ‘‘হাসিনাই অবৈধ সরকার, তাঁর চেলাপেলা এমন কাজ করবে না তো কে করবে?'' আর অমিত শর্মা অমি তো বলেই ফেলেছেন, ‘‘কিছু হবে না, শুধু নতুন করে আর একটি ফাইল ওপেন করা হলো মানুষকে দেখানোর জন্য !
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ