‘ক্ষমতার দম্ভে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে আওয়ামী লীগ' | পাঠক ভাবনা | DW | 19.08.2015
  1. Inhalt
  2. Navigation
  3. Weitere Inhalte
  4. Metanavigation
  5. Suche
  6. Choose from 30 Languages

পাঠক ভাবনা

‘ক্ষমতার দম্ভে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে আওয়ামী লীগ'

‘‘আওয়ামী লীগ মনে হয় আর ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে না'' – ডয়চে ভেলের ফেসবুক পাতায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেপ্তার নিয়ে এই পোস্টটি পড়ে বাংলাদেশের অসুস্থ রাজনীতি ও সরকারের সমালোচনা করে মন্তব্য করেছেন বহু পাঠকবন্ধু৷

ফেসবুকবন্ধু মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক লিখেছেন, ‘‘বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীর সিকদারের সাথে এমন জঘন্য আচরণ জাতির জন্য চরম লজ্জাজনক....দেশের সাধারণ মানুষ এর তীব্র নিন্দা জানায় এবং প্রবীর সিকদারের মুক্তি দাবি করে৷''

বন্ধু নিয়ামুল ইসলামের মন্তব্য, ‘‘আসলেই, সামান্য ব্যাপার নিয়ে প্রবীর সিকদারকে গ্রেফতার করে ইস্যুটা বড় করে দিলো৷ ক্ষমতার দম্ভে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে এরা৷''

তবে প্রবীর সিকদার (বানানভেদে শিকদার) ইস্যুতে ভিন্ন মত পোষন করেছেন আইয়ার মুহাম্মদ৷ তিনি মনে করেন, ‘‘প্রবীর সিকদার সত্যিই শাস্তি পাবার যোগ্য৷ প্রবীর সিকদার নাকি একটি দলকে বগোলে রেখে বাকিদের গালিগালাজ করতো৷ এ সব সভ্য লোকদের বৈশিষ্ট্য নয়৷'' ফজলে রাব্বীও অনেকটা সেরকমই মনে করেন, অর্থাৎ তিনি আইয়ার মুদাম্মদের সাথে একমত৷

ওদিকে আবু বকরের সরাসরি প্রশ্ন, ‘‘একই আইনের আওতায় যখন বিরোধী দল সমর্থক মিডিয়া একের পর এক বন্ধ করা হলো, সাংবাদিকদের জেল-জুলুম-নির্যাতন করা হলো, তখন প্রবীর সিকদারের মতো চেতনাপন্থি সাংবাদিকরা কি সামান্যতম নিন্দা জানিয়েছিলেন? নাকি নীরবে অথবা সরবে সমর্থন জুগিয়েছিলেন?''

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশারফ হোসেনের সুনাম ক্ষুণ্ণের অভিযোগ তুলে একটি মামলা হয়েছে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে৷ এ বিষয়ে ডয়চে ভেলের ফেসবুকে দেয়া পোস্টে পাঠক জহিরুল আলমের মন্তব্য, ‘‘এই রকম হাজারো প্রবীর সিকদারকে এই ফ্যাসিস্ট সরকার রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করছে৷''

শামসুল হকও তাঁর মতামত জানিয়েছেন বেশ পরিষ্কারভাবে, ‘‘শেখ হাসিনা নিজেই নিজের দলটাকে ধ্বংস করছে৷ কারণ ওনার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে এই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবার মতো কোনো যোগ্য লোক এখনো আওয়ামী লীগে তৈরি হয়নি৷ তাই আমার মনে হয়, এই বিষয়টা উপলব্ধি করেই তিনি দলের বারটা বাজাচ্ছেন৷ আর সেই কারণেই আজ এত নোংরা রাজনীতি আমাদের দেখতে হচ্ছে৷ তাই আমিও বলবো, ধিক্কার এই নোংরা রাজনীতিকে...৷''

বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির ধিক্কার জানিয়েছেন অতনু কুমার সেনও৷ অন্যদিকে কাজি ইসমাইল বাংলাদেশিদের আবার জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘বাংলার মানুষ তোমাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করো ৷ এই দেশ আবার স্বাধীন করো৷''

অন্যদের মন্তব্য পড়ার পর পাঠক রাজভাই লিখেছেন, র্বতমানে এই দেশে উচিত কথা বলা দণ্ডনীয় অপরাধ'৷ তিনি ঠাট্টা করেছেন এভাবে, ‘‘তাই আমি চুপচাপ বসে বসে ফেসবুক চালাই৷''

সাংবাদিক প্রবীর সিকদার গ্রেপ্তার হওয়ায় ডয়চে ভেলের ফেসবুকে উত্তম জুরিয়ার মন্তব্য, ‘‘আমরা জানতাম সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, এখন দেখছি বিপক্ষেও৷'

বর্তমান সরকারকে কোনো কথা বলে কোনো লাভ নেই – এ কথাটাই তৌফিক ওমর শামীম বোঝাতে চেয়েছেন ‘‘কামারের দোকানে কোরআন পড়লে কোনো লাভ হবে না'' – এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে৷'

নীল আকাশের চাঁদনী ডয়চে ভেলের ফেসবুকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলছি, ক্ষমতার জোর তো আর কম দেখালেন না৷ এবার একটু থামুন!''

আরো কয়েকজন ফেসবুক বন্ধু বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নিয়ে তাঁদের হতাশা প্রকাশ করেছেন৷ টি. আই. জনির ভাষায়, ‘‘থানায় জিডি নেয় না, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া যাবে না তো যাবে কোথায়, আর মুখ খুললেই রিমান্ডে৷ এ জন্যই কি দেশ স্বাধীন হয়েছে?''

এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অনিকের প্রশ্ন, ‘‘এর নামই কি গণতন্ত্র? আপনি কি আসলেই কোনো গনতন্ত্রের দেশে বাস করছেন?''

নুরুন নবীর মন্তব্য, ‘‘এই দেশে তো মানুষ নাই৷ আমরা সবাই আসবাবপত্র হয়ে গেছি৷''

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে এত সহজে ভীত নন শ্রাবণ৷ ফেসবুকে তাঁর সাহসী মন্তব্য, ‘‘প্রবীর সিকদারের মতো প্রয়োজনে রক্ত দেবো!

ডয়চে ভেলের ফেসবুকে প্রবীর সিকদারের গ্রেপ্তার সম্পর্কিত এই পোস্টটিতে বেশিরভাগ ফেসবুকবন্ধুই সরকারের সমালোচনা করেছেন৷ পুলকেশ মন্ডলের মন্তব্য, ‘‘আওয়ামী লীগের এই অতি বাড়ানি খুব একটা ভালো হচ্ছে না৷ তবে মুসা সাব্বির বলছেন ‘‘চুপচাপ থাকাই ভালো৷''

কাজি মকসুদুল হাসান, আবদুল মতিন, রিয়াদ খন্দকার, সুজা তানভির, কাজি জাকারিয়া, দিপু ধরসহ অনেকেই এ ধরনের মন্তব্য করেছেন৷ তাঁরা সকলেই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত৷

‘‘ক্ষমতার স্বাদ কেউ একবার পেলে তা কি আর ছাড়তে চায়? ক্ষমতা ছাড়ার জন্যই কি জনসমর্থন না নিয়ে ক্ষমতায় আছে৷'' বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সম্পর্কে এই মন্তব্য ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু কাদির মিথুর৷ সোহাগ রাজ্জাক একেবারেই হতাশ হয়ে কাদির মিথুনকে সমর্থন করে নিজে লিখেছেন, ‘‘ঠিকই বলেছেন, আর ভালো লাগে না৷''

মো. এস. আলীও অন্যান্যদের মতো বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে সরকারের উপর বিরক্ত৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘দেশটাকে কি সরকার মগের মুলুক পাইছে যে, যেভাবে চলাবে আমরা সাধারণ মানুষ সেভাবে চলবো?'' তাঁর কথায়, ‘‘এর একটা বিচার অচিরেই আল্লাহ দেখাবে৷''

প্রসঙ্গত, রিমান্ডের ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই বুধবার জামিনে মুক্ত হন তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক প্রবীর সিকদার৷

সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

নির্বাচিত প্রতিবেদন