‘‘অবশ্যই ভালো উদ্যোগ৷ লেখক-প্রকাশক ভিন্ন কথা বলতেই পারে৷ তাতে দৃষ্টিপাত করার কোনো দরকার নাই৷ পুলিশের এই কাজকে পূর্ণ সমর্থন করলাম৷'' এই মন্তব্য পাঠক পল্লব দেবনাথের৷
বইমেলা শুরুর আগের দিন পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো বই কেউ প্রকাশ করছে কিনা, সেটা অনুসন্ধান করে দেখবে পুলিশ৷ কোনো বই ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরি করছে খবর পেলে সেই বই জব্দ করা হবে৷ তাছাড়া যারা সেই বই প্রকাশ করবেন ও বিক্রি করবেন তাদের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ৷''
পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ইঞ্জিনিয়ার মাজেদ ভুইয়ার মন্তব্য: ‘‘বাংলাদেশ পুলিশ ইচ্ছা করলেই সব পারে, এটা প্রায় শতভাগ মানুষই বিশ্বাস করে৷ তবে পুলিশের পক্ষে এত বড় দায়িত্বগ্রহণ বাস্তবে কি সম্ভব? তবু অতি প্রাচীন ও শতভাগ প্রমাণিত প্রবাদ দিয়ে শেষ করতে চাই, সব ভালো তার শেষ ভাল যার৷''
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
পাঠক সমাবেশ সেন্টার
ঢাকার শাহবাগে আজিজ কো-অপারেটিভ সুপার মার্কেটের বিপরীতে অগ্রণী ব্যাংকের দ্বিতীয় তলায় বৃহৎ বইয়ের দোকান ‘পাঠক সমাবেশ সেন্টার’৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
বই প্রেমীদের নতুন ঠিকানা
পাঠক সমাবেশ সেন্টার কেবল বইয়ের বিক্রয় কেন্দ্রই নয়, এখানকার বইয়ের জগতে অন্তত একবেলা সময় সাচ্ছন্দে সময় কাটাতে পারেন বইপ্রেমীরা৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
নানা আয়োজন
শুধু বই কেনা-বেচাই নয়, বইকেন্দ্রিক নানা অনুষ্ঠান, প্রকাশনা উৎসব, পাঠচক্র, সাহিত্য আড্ডা দেয়ারও চমৎকার জায়গা শাহবাগের এই পাঠক সমাবেশ সেন্টার৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
দীপনপুর
রাজধানীর কাটাবন মোড়ে আরেক বইয়ের জগত ‘দীপনপুর’৷ ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন৷ গত বছর তাঁর ৪৫তম জন্মদিনে যাত্রা শুরু হয় এই বইঘরটির৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
দীপনের স্মৃতি
দীপনের মৃত্যুর পর তাঁর সহধর্মিনী ডা. রাজিয়া রহমান জলি স্বামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে চালু করেন এই বইয়ের দোকান৷ জাগৃতির হাল ধরার পাশাপাশি দীপনের স্মৃতি ও চেতনাকে ধরে রাখতেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ভিন্নধর্মী এই বুকশপ ক্যাফে৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
শিশুদের জন্য ‘দীপান্তর’
দীপনপুরে শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে ‘দীপান্তর’৷ শিশুরা এখানে পড়তে পারবে বই, আঁকতে পারবে ছবিও৷ পাশাপাশি আছে খেলাধুলা করার ব্যবস্থা৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
দীপনপুরের যত আয়োজন
দীপনপুরে বই পড়তে পড়তে চুমুক দেয়া যাবে চা কিংবা কফির পেয়ালায়৷ প্রয়োজনীয় বইটি না থাকলে অর্ডার সাপেক্ষে যথাসময়ে বাড়িতে পৌঁছে যাবে৷ এছাড়া ক্রেতারা অনলাইনেও বই কিনতে পারেন দীপনপুর থেকে৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
বাতিঘর
ঢাকার বাংলা মোটর এলাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অষ্টম তলায় চালু হয়েছে বইঘর ‘বাতিঘর’৷ ৫০০০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে এ বইয়ের জগতে আছে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা শাখার বিষয়াবলীর পাশাপাশি খেলাধুলা, রাজনীতি ও সমকালীন বিজ্ঞান, দর্শন আর লোকসংস্কৃতির উপর রচিত লক্ষাধিক বইয়ের সংগ্রহ৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা
২০০৫ সালে চট্টগ্রামে ছোট পরিসরে যাত্রা শুরু করেছিল বাতিঘর৷ ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ভবনে তিন হাজার বর্গফুটের বড় পরিসরে পুরনো জাহাজের আদলে সম্প্রসারিত হয় বাতিঘর৷ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় আরো বড় পরিসরে চালু হলো বাতিঘরের দ্বিতীয় শাখা৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
বইয়ের ভাণ্ডার
ঢাকার বাতিঘরে প্রায় শতাধিক বিষয়ের ১০ হাজার লেখক ও এক হাজার দেশি-বিদেশি প্রকাশনা সংস্থার লক্ষাধিক বইয়ের বিষয়ভিত্তিক বৈচিত্র্যপূর্ণ সংগ্রহ রয়েছে৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
নানান কর্নার
বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাতিঘরে আছে বিষয় ভিত্তিক কর্নার৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘ভ্রমণ ও প্রবন্ধ কর্নার’, ‘কবিতা কর্নার’, ‘দর্শন কর্নার’,‘শীর্ষেন্দু-সুনীল-সমরেশ কর্নার’, ‘মুহম্মদ জাফর ইকবাল কর্নার’ ‘ছোটগল্প কর্নার’, ‘ইতিহাস কর্নার’ ‘রহস্যগল্প কর্নার’ ইত্যাদি৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
বেঙ্গল বই
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে দেশি-বিদেশি বই বিকিকিনির সাথে পড়ুয়াদের এক নতুন আড্ডাস্থল ‘বেঙ্গল বই’৷ গল্প, উপন্যাস থেকে শুরু করে এখানে মিলবে শিল্পকলা, সাহিত্য, স্থাপত্যবিষয়ক বইও৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
বিশাল আয়োজন
বেঙ্গল বইয়ের তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা জুড়ে আছে দেশি-বিদেশি বই৷ নিচতলায় সব শ্রেণির পাঠকের জন্য আছে পুরনো বই ও ম্যাগাজিন৷ দোতলার বারান্দায় বসে কফি খেতে খেতে গল্প করার ব্যবস্থাও আছে৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
নানা আয়োজন
বেঙ্গল বই-এ নিয়মিত পাঠচক্র, কবিতা পাঠের আসর, নতুন লেখা ও লেখকের সঙ্গে পরিচিতিমূলক সভা, প্রকাশনা উৎসব, চিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন থাকে৷ অসুস্থ বা প্রতিবন্ধীরা হুইলচেয়ারে পুরো জায়গা ঘুরে নিজের পছন্দমাফিক বই কিনতে পারবেন৷ প্রবীণদের জন্য রয়েছে বইয়ে বিশেষ ছাড় এবং বাগানে বসে আড্ডা দেওয়ার ব্যবস্থা৷
-
মেলার বাইরে বইয়ের মেলা
আকাশকুসুম
বেঙ্গল বই ভবনের তিনতলার প্রায় পুরোটাই শিশুদের জন্য৷ ‘আকাশকুসুম’ নামে সেই রাজ্যে শিশুবান্ধব পরিবেশে বইপড়া ছাড়াও গল্পবলা, আবৃত্তি, ছবি দেখা ও আঁকাআঁকির মধ্য দিয়ে শিশুরা হারিয়ে যেতে পারবে অন্য জগতে৷
লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান
এছাড়া রাসেল ভুইয়া এবং ফজলুর রহমান, সাগর আহমেদ, সুজনসহ অনেকেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে এমন বই পুলিশকে স্ক্যান করতে দেয়ার উদ্যোগকে ভালো উদ্যোগ বলেই মনে করছেন৷
পাঠক মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিনও এই উদ্যোগকে সমর্থন করেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি পুলিশকে ভালোবাসি৷''
ডয়চে ভেলের ফেসবুর পাতায় মঈন আহমেদ মন্তব্য, ‘‘বই জ্ঞানের উৎস, সেটা কেন দাঙ্গা-হাঙ্গামার উৎস হবে?''
পাঠক ইমরোজ আহমেদ অবশ্য মনে করেন না যে পুলিশের বই স্ক্যান করা উচিত৷ তাঁর মতে, এমন বই যাঁদের পড়া উচিত নয়, তাঁরা না পড়লেই তো হয়৷ স্ক্যান করে বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ কী? বাংলাদেশ কি ইসলামিক রিপাবলিক হয়ে গেছে? এ ব্যাপারে ইমরোজ আহমেদের সাথে পাঠক ইকবুল হোসেন পুরোপুরি একমত৷
সংকলন: নুরুননাহার সাত্তার
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ