ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে নতুনদিল্লিতে ওবামা
৭ নভেম্বর ২০১০প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তাঁর স্ত্রী মিশেল ওবামা নতুনদিল্লিতে পৌঁছোলে প্রথাগত প্রোটোকল না মেনে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাতে যান প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ও তাঁর স্ত্রী গুরশরণ কৌর৷ ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তিনি যোগ করলেন নতুন মাত্রা৷ বিকেলে ওবামা যান ষোড়শ শতাব্দীর মোঘল সম্রাট হুমায়ুনের সমাধিসৌধে৷ কথা বলেন ছোট ছোট স্কুল বাচ্চাদের সঙ্গে৷ যমুনা নদীর তীরে এই সমাধিসৌধকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্থানের স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো ১৯৯৩ সালে৷ তারপর ওবামা যান নতুনদিল্লির মার্কিন দূতাবাসে৷ প্রধানন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ঘরোয়া নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানান প্রেসিডেন্টকে৷
মুম্বই ছাড়ার আগে বারাক ওবামা ও মিশেল ওবামা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ ক্যাম্পাসে মিলিত হন মুম্বই-এর ৬টি কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে৷ খোলাখুলি মত বিনিময় করেন নানা বিষয় নিয়ে৷ কূটনীতি ও রাজনীতির পোষাক ঝেড়ে ফেলে ওবামা খোলামনে সব প্রশ্নের উত্তর দেন৷ তাঁর মধ্যে ছিল জেহাদি থেকে আধ্যাত্মিকতা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক থেকে আফগানিস্তান, অর্থনীতি থেকে আগামী ২০ বছরে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক কোথায় দাঁড়াবে নানা বিষয়৷
জেহাদিদের সম্পর্কে এক ছাত্রীর প্রশ্নের উত্তরে ওবামা বলেন, ইসলাম ধর্মের মূলমন্ত্র শান্তি, ন্যায়বিচার ও সহনশীলতা৷ কিন্তু কিছু উগ্রবাদী সহিংসতার পথে চলছে৷ এদের বিচ্ছিন্ন করা আজকের চ্যালেঞ্জ৷ সন্ত্রাস ও পাকিস্তান নিয়ে জনৈক ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তান এক সম্ভাবনাময় দেশ৷ কিন্তু সেদেশে সন্ত্রাসীরা সক্রিয়৷ পাকিস্তান সরকার তা জানে৷ এই উগ্রবাদীরা ক্যান্সারের মত পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে উদ্যত৷ তাদের নির্মূল করতে আমেরিকা সাহায্য করতে চায় পাকিস্তানকে৷ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের বিষয়ে ওবামার মন্তব্য, পাকিস্তানের সফলতায় যে দেশ সবথেকে বড় ভূমিকা নিতে পারে সে হলো ভারত৷ অস্থির পাকিস্তান ভারতের পক্ষে ক্ষতিকর৷ ভারত যে গতিতে এগিয়ে চলেছে, তাতে এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ভারতের পক্ষে বেশি কাম্য৷ দু'দেশের মধ্যে আলোচনা চলুক৷ প্রথমে কম বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে পরে বেশি বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে, অভিমত প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ওবামা৷ আফগানিস্তান বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১২ সালের পরও মার্কিন সেনা সেখানে থাকবে, যতক্ষণ না আফগান সেনারা তৈরি হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম