1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজেপির নতুন মুখ নাড্ডা

গৌতম হোড়
২০ জানুয়ারি ২০২০

এতদিন তিনি ছিলেন কার্যকরি সভাপতি, অমিত শাহ সভাপতি৷  এবার জে পি নাড্ডা অনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির সভাপতি নির্বাচিত হলেন৷ 

https://p.dw.com/p/3WSoS
ছবি: IANS

গত এক বছরে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে হয় হার হয়েছে অথবা ক্ষমতা হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে বিজেপির৷  সিএএ নিয়ে দেশজুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে৷ দিল্লি বিধানসভায় কঠিন লড়াইও চলছে৷ এই আবহে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির সভপতি হলেন জগত প্রকশ নাড্ডা। যিনি জে পি নাড্ডা বলেই বেশি পরিচিত৷  প্রায় ছয় বছর সভাপতি থাকার পর আপাতত বিদায় নিলেন অমিত শাহ৷ সাধারণত, বিজেপিতে 'এক ব্যক্তি এক পদ' নীতি অনুসরণ করা হয়৷  কিন্তু বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন থাকায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরেও অমিত শাহ সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন৷  নাড্ডা ছিলেন কার্যকরি সভাপতি৷ তাঁকে হাতে কলমে কাজ শেখাচ্ছিলেন অমিত শাহ৷ পূর্ব পরিকল্পনামতোই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন অমিত শাহ৷  এ দিন শুধুমাত্র নাড্ডার মনোনয়নপত্রই জমা পড়েছে৷ ফলে কোনওরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই নাড্ডা বিজেপি সভাপতি হয়েছেন৷

তবে দলের পক্ষে একটা কঠিন সময়ে নাড্ডা সভাপতি হলেন৷ সামনেই দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন৷  প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা বলছে, দিল্লিতে কেজরিওয়াল এগিয়ে৷ দিল্লিতে যদি শেষ পর্যন্ত কেজরিওয়াল জিতে যান, তা হলে নাড্ডাকে হার দিয়েই শুরু করতে হবে৷  দিল্লির ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পর এই বছর আর একটি রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচন হবে-- বিহার৷  নীতীশ কুমারের রাজ্যে ভোট নভেম্বরের মধ্যে করতে হবে৷ নীতীশের সঙ্গে জোট বহাল থাকলে বিহারে বিজেপি ভালো করতে পারে, কিন্তু লড়াই হবে৷ ২০২১ এ অসম, পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, পুডুচেড়িতে ভোট হওয়ার কথা৷  প্রতিটি রাজ্যেই কড়া মোকাবিলার মধ্যে পড়তে হবে বিজেপিকে৷  কেরল ও পুডুচেড়িতে বিজেপির উপস্থিতি সামান্য৷  প্রবল লড়াই হতে পারে অসম ও পশ্চিমবঙ্গে৷ ফলে নাড্ডার কাছে আগামী দিন খুব মসৃন নাও হতে পারে৷ লোকসভা নির্বাচনকে বাদ দিলে অমিত শাহের কাছেও গত একবছর নিঃসন্দেহে কঠিন ছিল৷ তৃণমূলের সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, বিজেপির রাজনৈতিক রেখচিত্র এখন নিচের দিকে৷ এই অবস্থায় নাড্ডার কাজটা কঠিন৷ গত প্রায় ন-বছর ধরে তাঁকে রাজ্যসভায় দেখেছি৷ তিনি বলা যেতে পারে দলের নরমপন্থী মুখ৷ কিন্তু পিছনের আসল চেহারা তো মোদী-শাহ৷

প্রশ্ন হল, নাড্ডা বিজেপি সভাপতিহলেও দলের রাশ কি মোদী-শাহের হাতেই থাকবে?  তাঁরা যেভাবে আগে চালাতেন, সেভাবেই কি চালাবেন, কেবল সামনে থাকবেন নরমপন্থী নাড্ডা? এমনিতে ধারেভারে অমিত শাহের ধারেকাছে নাড্ডা আসতে পারবেন না৷  তিনি হিমাচলের মতো ছোট রাজ্যের নেতা৷ সেরকম দাপুটে নেতাও নন৷  এমনিতে নাড্ডা খুবই ভদ্র ও কেন্দ্রে এবং রাজ্যে মন্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সেরকম সর্বভারতীয় ভাবমূর্তি নেই৷ অবশ্য বিজেপি সভাপতি হওয়ার সুবাদে অদূর ভবিষ্যতে তা পেয়ে যাবেন তিনি৷  কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক  সায়ন্তন বসু ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, ''মোদী-শাহ দলকে যে জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, সংগঠনকে য়ে রূপ দিয়েছেন, তাতে চাপ নিয়েই কাজ শুরু করতে হবে নাড্ডাকে। তবে আমি মনে করি, তিনি সেই পরীক্ষায় ভালোভাবেই উত্তীর্ণ হবেন৷''

সুখেন্দু শেখর বলছেন, ''নাড্ডা আসলে কাঠের পুতুল৷ তাঁকে যেভাবে চালানো হবে, তিনি সেভাবেই চলবেন৷ সে জন্যই তাঁকে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ দল আসলে চলবে মোদী-শাহের অঙ্গুলিহেলনেই৷ তাঁর দায়িত্ব হবে মোদী-শাহ ফর্মুলাকে রূপায়ণ করা৷''

বিজেপির একটা মজবুত পরিকাঠামো আছে৷ মোদী-শাহর কাজের একটা ধারা আছে৷ তাঁরা অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা ছকে রাখেন৷ এ সবের পরেও বেশ কয়েকটি রাজ্যে সম্প্রতি বিজেপিকে হারতে হয়েছে বা জোটসঙ্গী জোগাড় করে কোনওমতে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পেরেছে তারা৷ ফলে নরমপন্থী নাড্ডার কাছে সামনের চ্যালেঞ্জ সত্যিই রীতিমতো বড়৷