1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্বল হয়ে পড়ছে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন

২৯ মে ২০২০

বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন৷ মিলেছে নোবেল শান্তি পুরস্কারও৷ কিন্তু বিশ্বনেতারা এখন এই মিশন থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন৷ পিছিয়ে যাচ্ছে সদস্য দেশগুলোও৷

https://p.dw.com/p/3cxv6
ছবি: AFP via Getty Images

প্রাথমিকভাবে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বন্ধের উদ্যোগ নিতে ১৯৪৮ সালে শান্তিরক্ষা মিশন গঠন করা হয়৷ জাতিসংঘের সদস্যভূক্ত বেশিরভাগ দেশ তাতে সমর্থন দেয়৷

ওই বছর ইউনাইটেড ন্যাশনস ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (ইউএনটিএসও) নামে প্রথম মিশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ব্লু হেলমেট'র যাত্রা শুরু হয়৷ ওই মিশনের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েল ও তাদের প্রতিবেশী আরব দেশগুলো মধ্যে যুদ্ধবিরতির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা৷

পরের বছর কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তিতে কাজ শুরু করে ইউনাইটেড ন্যাশনস মিলিটারি অবজারভেশন গ্রুপ (ইউএনএমওজিআইপি)৷  ইউএনটিএসও এবং ইউএনএমওজিআইপি-র কার্যক্রম এখনো চলছে৷ কিন্তু কোথাও শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি৷

বাজেট কমিয়েছেন ট্রাম্প

নানা দেশের প্রায় ৯০ হাজার সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছেন৷ ২০১৫ সালের আগে এই সংখ্যা এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ছিল৷

শান্তিরক্ষা মিশন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের আগ্রহ কমে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় স্টোকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিচ রিসার্চ ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ফর দের লিন বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনেক সদস্যের মতে শান্তিরক্ষা মিশনের খরচ অনেক বেশি, সেই তুলনায় অর্জন খুবই সামান্য৷

‘‘এ কারণে নেতারা এই খাতে বাজেট কমাতে চাইছেন৷ ট্রাম্প প্রশাসন যার নেতৃত্ব দিচ্ছে৷’’

শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন৷

অসহায় অবস্থা

১৯৯৫ সালে বসনিয়া যুদ্ধের সময় স্রেব্রেনিচা গণহত্যা , ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় তুতসি সম্প্রদায়ের উপর চালানো নির্মম হত্যাযজ্ঞ কিংবা মোগাদিসুর হত্যাকাণ্ড- সব ঘটনার সময়ই জাতিসংঘ অসহায়ের মত চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারেনি৷ শান্তিরক্ষী বাহিনী থাকার পরও ওই সব স্থানে গণহত্যা থামানো যায়নি৷ 

বরং ৯০ দশকের পর থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গঠিত আঞ্চলিক জোটগুলো তাদের লক্ষ্য থেকে সরে যেতে শুরু করে বলে মনে করেন লিন৷ তিনি বলেন, ‘‘শান্তিরক্ষা মিশনে তাদের অংশ গ্রহণ দ্রুত কমতে থাকে৷ বরং শান্তিরক্ষীদের সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানের মত নানা ‘নন-পিচকিপিং’ মিশনে ব্যবহার বাড়তে থাকে৷

‘‘যেমন, সহিল অঞ্চলে শান্তিরক্ষীরা চাড, নাইজার ও নাইজেরিয়ার বাহিনীর সঙ্গে মিলে বোকো হারাম জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করছে৷’’

সোমালিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক বা আফগানিস্তানেও একই অবস্থা বলে মনে করেন লিন৷ বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলো এমন জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে এখন পরষ্পরকে সহযোগিতার জন্য তাদের রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে৷ তারা একজন আরেকজনের উপর চেপে বসেছে৷  কখনো কখনো পরষ্পরকে সহযোগিতা করা বাদ দিয়ে যে যার মত কাজ করে যাচ্ছে৷’’ 

রক্ষী পাঠাতে অনাগ্রহ

এ অবস্থায় দেশগুলোর মধ্যে শান্তিরক্ষা মিশনে সেনা পাঠানো নিয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ পাচ্ছে৷ আফ্রিকায় মোতায়েন করা শান্তিরক্ষী বাহিনীর ৭০ শতাংশই এখন দক্ষিণ সাহারা অঞ্চলে অবস্থান করছে৷ এ অঞ্চলের বড় বড় কয়েকটি মিশন বন্ধ রেখে যুদ্ধ বিধ্বস্ত লিবিয়া ও ইয়েমেনে নতুন মিশন শুরু করতে হয়েছে৷

বর্তামনে শান্তিরক্ষী বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য সাব-সাহারা আফ্রিকা বা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলো থেকে আসে৷

লিন বলেন, ‘‘আফ্রিকার দেশগুলো এখন মূলত তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে রক্ষী পাঠায়৷ যেমন, ইথিওপিয়া শুধু সোমালিয়া বা সুদানে রক্ষী পাঠায়৷ তাদের লক্ষ্য খুবই পরিষ্কার৷ তারা আগে নিজেদের রক্ষা করতে চায়৷ একই ভাবে মালির প্রতিবেশী দেশগুলো শুধু মালিতে রক্ষী পাঠায়৷  তারা চায় মালির সমস্যা যেন শুধু সেখানে থাকে এবং তাদের দেশের শান্তি বিনষ্ট না হয়৷’’

পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র শান্তিরক্ষা মিশনে বলার মত আকারের সেনা পাঠায়৷ যদিও তাদের বেশিরভাগই আফগানিস্তানে কাজ করে৷  এই সংখ্যাও কমে যাবে৷ কারণ, যুক্তরাষ্ট্রর প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি আফগানিস্তানে সেনা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন৷

পিটার হিল/এসএনএল

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য