উৎরে গেল সরকার
৫ ডিসেম্বর ২০১২খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নিয়ে সরকার ও বিপক্ষ দলের মধ্যে দু'দিন ধরে চলা বিতর্ক শেষে বুধবার ঐ প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়৷ এফডিআই-এর পক্ষে ভোট পড়ে ২৫৩ এবং বিপক্ষে ২১৮টি৷ পক্ষে ভোট দেয় কংগ্রেস ছাড়া শরিক দল ডিএমকে, এনসিপি, আরজেডি ও জেডি-এস৷ বিপক্ষে ছিল বিজেপি ছাড়া বাম, তৃণমূল, এআইএডিএমকে ও বিজেডি৷ ভোটদানে বিরত থেকে মুলায়েম সিং-এর এসপি এবং মায়াবতীর বিএসপি, যারা কার্যত সরকারকে জিতিয়ে দেয়৷ এসপি ও বিএসপি ভোট না দেয়ায় লোকসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০৭৷ এফডিআই-এর পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ‘ফেমার' একটি ধারা সংশোধনও ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে যায়৷
এর আগে সরকার ও বিরোধী শিবিরের সাংসদরা এফডিআই-এর পক্ষে ও বিপক্ষে নিজেদের বক্তব্য রাখেন৷ সিপিএম সাংসদ বাসুদেব আচার্য মনে করেন, উৎপাদন মূল্য ও গ্রাহক মূল্যের মধ্যে বিস্তর ফারাক৷ এর জন্য দায়ী সরকারের নীতি৷ এ জন্য না কৃষকরা, না গ্রাহকরা উচিত দাম পাবে৷
সরকারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ২১টি রাজ্য সরকারকে এফডিআই সম্পর্কে চিঠি দেয়া হয়েছিল, তারমধ্যে ১১টি রাজ্য তা সমর্থন করে এবং ৭টি রাজ্য বিরোধীতা করে এবং ৩টি রাজ্য নিরুত্তর থাকে৷ তার মানে সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য এর পক্ষে৷ এছাড়া কৃষি ও গ্রাহক সংগঠনের সঙ্গে মত বিনিময় হয়৷ তারাও এর পক্ষে মত প্রকাশ করে৷
এনসিপি নেতা বলেন, আজকের পরবর্তিত পরিস্থিতিতে এফডিআই নীতির কথা মাথায় রাখতে হবে৷ শিবসেনা সাংসদের মতে, ৫১ শতাংশ বিদেশি বিনিযোগ এলে ২৫ কোটি ছোট ব্যবসায়ী এবং কৃষিজীবী মার খাবে৷
আসলে সংসদে এফডিআই ইস্যুতে ভোটাভুটির দাবি তুলে সরকারকে অপদস্থ করতে চেয়েছিল বিজেপি ও বামদল৷ কিন্তু সেটা বুমেরাং হয়ে মনমোহন সিং-এর সুযোগ করে দিল৷ সরকারকে আত্মবিশ্বাস এনে দিল৷ তবে কাঁটা একটা রয়ে গেছে৷ উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই৷ সেটার মোকাবিলা করতে কোমর কষে নেমে পড়েছে সরকার বন্ধুদলগুলিকে পাশে পেতে৷
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির শর্তগুলির মধ্যে কমপক্ষে ১০কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে৷ এবং তার ৫০ শতাংশ করতে হবে গ্রামাঞ্চলে৷ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ মালপত্র কিনতে হবে স্থানীয় স্তরে৷ কোনো রাজ্য চাইলে অবশ্য বিদেশি বিনিয়োগের অনুমতি নাও দিতে পারে৷