বিপ্লবের মধ্যেই বিয়ে, চলছে সরকার-বিরোধী সংলাপ
৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ
মিশরের রাজপথে বিক্ষোভ শুরু থেকেই ছিল স্বতঃস্ফূর্ত – রাজনৈতিক দলগুলি সেখানে গৌণ ভূমিকা পালন করেছে৷ কিন্তু বর্তমান অচলাবস্থা কাটাতে কোনো না কোনো পর্যায়ে সংলাপের প্রয়োজন রয়েছে৷ বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর সুলেইমান ও বিরোধী দলগুলির মধ্যে আলোচনার বিরোধিতা করছে৷ তাদের দাবি, সবার আগে অবিলম্বে প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারককে পদত্যাগ করতে হবে৷ তাছাড়া মুবারকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সুলেইমানকেও তারা বিশ্বাস করতে প্রস্তুত নয়৷ দীর্ঘ ২ সপ্তাহ ধরে একসঙ্গে বিক্ষোভ দেখিয়ে মানুষের মধ্যে সংহতির এক সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে৷ এমনকি এক তরুণ দম্পতি তাহরির স্ক্যোয়ারেই বিয়ে করেছেন৷ বিক্ষোভ সত্ত্বেও সোমবার কায়রোর জীবনযাত্রা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে৷
সরকার ও বিরোধীদের সংলাপ
স্বৈরচারী ব্যবস্থা থেকে দেশকে দ্রুত গণতান্ত্রিক কাঠামোর পথে নিয়ে যেতে আপাতত মুবারককে ক্ষমতায় রাখা প্রয়োজন – এমনটাই দাবি করছে বর্তমান প্রশাসন৷ কারণ সেদেশের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী এই কাজ একমাত্র প্রেসিডেন্টই করতে পারেন৷ অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই সংবিধানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে হবে৷ প্রথমত, যে কোনো প্রার্থী যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ দ্বিতীয়ত প্রেসিডেন্টের কার্যকাল সীমিত করে দিতে হবে, যাতে তিনি দুই বারের বেশি ক্ষমতায় না আসতে পারেন৷ তৃতীয়ত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে বিচার বিভাগের ক্ষমতা বাড়াতে হবে, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করার নিয়ম বদলাতে হবে৷ এছাড়া কিছু মৌলিক পরিবর্তনেও দাবি জানাচ্ছে বিরোধীরা, যেমন রাজনৈতিক দল গঠনের উপর বাধানিষেধ শিথিল করা৷
মুবারকের বিদায়ের চিত্রনাট্য
মান-সম্মান বাঁচিয়ে প্রস্থানের সুযোগ করে দিতে মুবারককে স্বাস্থ্যগত কারণে জার্মানি পাঠানোর কথা চলছে৷ এর আগে তিনি বেশ কয়েকবার চিকিৎসার জন্য জার্মানি গিয়েছিলেন৷ ফলে নতুন চেক-আপ'এর জন্য আবার সেখানে যেতেই পারেন৷ কিন্তু আজ জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সরকারি বা ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই মর্মে কোনো অনুরোধ আসে নি৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক