কলেরা মহামারী শুরু হওয়ার পরেও টিকাদানের গুরুত্ব আছে
২৮ জানুয়ারি ২০১১মার্কিন পাবলিক লাইব্রেরি অফ সায়েন্সের নেগলেক্টেড ট্রপিকাল ডিজিজেজ বা উপেক্ষিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ সংক্রান্ত পত্রিকায় চলতি সপ্তাহে দু'টি পৃথক গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে৷ উভয়েরই উপজীব্য ছিল কলেরা৷ তবে প্রথমটির গবেষণা ক্ষেত্র ছিল জিমবাবওয়ে, ভারত এবং টানজানিয়ায়৷ দ্বিতীয়টির, ভিয়েতনাম৷
প্রথম গবেষণাটি ইতিমধ্যেই সংগৃহীত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখে, মহামারী একবার শুরু হওয়ার পরেও যদি একটি ব্যাপক এলাকা জুড়ে দ্রুত এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে টিকা দেওয়া যায়, তা'হলে বহু মানুষের প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে৷ যেমন জিমবাবওয়ে'তে ২০০৮ সালের অগাস্ট থেকে ২০০৯ সালের জুলাই অবধি একটি কলেরা মহামারী চলে৷ সেখানে প্রথম চারশো রোগী কলেরায় আক্রান্ত হওয়ার পর পরই যদি জনসংখ্যার অর্ধেককে টিকা দেওয়া যেতো, তা'হলে প্রায় ৩৫,০০০ কম মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হতো এবং প্রায় ১,৭০০ মানুষের কলেরায় মৃত্যু রোধ করা যেতো৷ অর্থাৎ ৪০ শতাংশ কম মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হতেন এবং ৪০ শতাংশ কম মানুষের কলেরায় জীবনাবসান ঘটতো৷
কিন্তু গবেষণাটিতে এ'ও দেখা গেছে যে, ভারতের কলকাতা কিংবা টানজানিয়ার জাঞ্জিবার'এর মতো স্থানে, যেখানে কলেরা এন্ডেমিক বা সদা বর্তমান, সেখানে এই ব়্যাপিড রেস্পন্স বা দ্রুত প্রতিক্রিয়া পদ্ধতিতে বিশেষ কাজ হতো না৷
দ্বিতীয় গবেষণাটিতে ভিয়েতনামে কলেরার ওরাল ভ্যাক্সিন বা মুখে খাবার টিকার প্রভাব পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে৷ দেখা গেছে হানয়ে কলেরা দেখা দেবার পর এই টিকাটি ৭৬ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারতো৷
কাজেই বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন: মহামারী শুরু হবার পর আমরা এযাবৎ আক্রান্তদের চিকিৎসা, এবং বাদবাকিদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সূত্রে শুদ্ধ পানীয় জল এবং উন্নততর স্বাস্থ্যকর পরিবেশের ব্যবস্থা করে এসেছি৷ কিন্তু কলেরার সঙ্গে অসম যুদ্ধে আমাদের শ্রেষ্ঠ অস্ত্র হতে পারে সেই আদি ও অকৃত্রিম টিকা৷ তাই মহামারী শুরু হবার পরেই মানুষজনকে ব্যাপকভাবে টিকা দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই