1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাইতির কলেরা মহামারিতে কাজে লাগছে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা

২৩ নভেম্বর ২০১০

কলেরার মতো রোগকে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়া ডিজিজ রিসার্চ' বা আইসিডিডিআরবি'র কল্যাণে এখন তা জানে বাংলাদেশের মানুষ৷ বাংলাদেশের এই অভিজ্ঞতা এখন কাজে লাগানো হচ্ছে হাইতির কলেরা মহামারিতে৷

https://p.dw.com/p/QFfx
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হচ্ছে হাইতির কলেরা মহামারিতেছবি: AP

বাংলাদেশের কলেরা হাসপাতালের ডাক্তার প্রদীপ কে বর্ধন ভাল করেই জানেন, কত সহজে কলেরার চিকিৎসা করা যায়৷ ঢাকায় তাঁর হাসপাতালে প্রতিবছর প্রায় দেড় লাখ কলেরায় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়, যেখানে মৃত্যুর হার প্রায় শূন্যের কোঠায়৷ প্রতিবছর সারা বিশ্বের ত্রিশ থেকে চল্লিশ লাখ মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হয় এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ৷ এর জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা৷ চিকিৎসা না দিলে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে যে রোগটি মানুষকে মেরে ফেলতে পারে, সেই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে কারো মারা যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷ কারণ, সাধারণ চিনি এবং লবন দিয়ে তৈরি মিশ্রণ মারাত্মক পানি শূণ্যতার হাত থেকে রক্ষা করে রোগীকে৷ ওরস্যালাইন এখন কলেরা আটকাতে অব্যর্থ৷ বাংলাদেশের নারীরা এখন জানেন, কলেরার জীবাণু থেকে খাবার পানিক বিশুদ্ধ করার জন্য শাড়িকে চার থেকে পাঁচ ভাজ করে ছাঁকনি হিসেবে ব্যবহার করা যায়৷ কিন্তু হাইতির মতো দেশের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আরও জটিল৷ ডাক্তার বর্ধন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটাচ্ছেন ঐ দেশে৷ সেখানে কলেরায় মৃতের সংখ্যা সাড়ে বারোশ' জন ছাড়িয়ে গেছে৷

Haiti Cholera Epidemie Frau im Krankenhaus in Archaie
একের পর এক বিপর্যয়ের ফলে হাইতির মানুষ অসহায়ছবি: AP

কলেরা পানিবাহিত একটি রোগ৷ এই রোগে ডায়রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং তার সঙ্গে বমি দেখা দেয়৷ বর্ধন হাইতির রাজধানী পোর্ট অফ প্রিন্স থেকে টেলিফোনে জার্মান বার্তা সংস্থা ডিপিএ বলেছেন,‘‘ এখানকার লোকজন কলেরার মতো রোগের ব্যাপারে অভ্যস্ত নয়, নয় প্রস্তুত৷ হাইতির লোকজন গত প্রায় এক শতাব্দী ধরে এখানে এই রোগটি দেখেনি৷''

সাম্প্রতিককালে হাইতিতে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার ফলে দেশটির বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার ক্ষতি হয়৷ যা কিনা কলেরা মহামারী আকার ধারণ করার একটি কারণ৷ ডাক্তার বর্ধন বলেন, ‘‘বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন না করা পর্যন্ত এত তাড়াতাড়ি এখান থেকে কলেরাকে দূর করা যাবেনা৷'' তিনি বলেন, ‘‘কলেরা প্রতিরোধের জন্য ব্যক্তিগত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও হাত ধোওয়ার মতো আচরণগত কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন, যা হতে এখানে আরও সময় লাগবে৷'' তারপরও ডা.বর্ধন এবং তাঁর সঙ্গী নয় সদস্যের চিকিৎসক দলটি হাইতির ডাক্তারদের তাঁদের অপরিচিত এই রোগটিকে কিভাবে মোকাবিলা করতে হবে তার প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক