1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুদানে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি

১ সেপ্টেম্বর ২০২০

সুদানের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি অস্থায়ী সরকারের। গৃহযুদ্ধের অবসান হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

https://p.dw.com/p/3hpoL
ছবি: Reuters/S. Bol

১৭ বছরেরও কিছু বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে সুদানে। সোমবার তার সমাধানসূত্র মিলল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সুদানের অস্থায়ী সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী জোটের ঐতিহাসিক চুক্তি সই হয়েছে এ দিন। সব ঠিক থাকলে আপাতত গোটা দেশে শান্তি সুনিশ্চিত হবে বলেই মনে করছে দুই পক্ষ। টেলিভিশনে চুক্তি সইয়ের অনুষ্ঠানটি দেখার পরে খুশি সুদানের সাধারণ মানুষও। তবে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই চুক্তিতে অংশ নেয়নি। ফলে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়ে গিয়েছে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের অন্য অংশ।

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তাল সুদান। একের পর এক সরকারের পতন হয়েছে। সেনা বিদ্রোহে দেশ ছাড়তে হয়েছে সাবেক শাসকদের। এক একটি অঞ্চলের দখল নিয়েছে বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিদ্রোহীরা। এ ভাবেই দীর্ঘ দিন ধরে গোলা বারুদের মধ্যে জীবন কাটছিল সুদানবাসীর। লাখ লাখ মানুষ একবার নয়, বার বার ঘরছাড়া হয়েছেন। তাঁদের দিন কাটছে আশ্রয়শিবিরে। ঘোর অনিশ্চয়তায়। এই পরিস্থিতিতে সোমবারের চুক্তিকে অধিকাংশ মানুষই ঐতিহাসিক বলে মনে করছেন।

সুদানের অস্থায়ী সরকারের সঙ্গে রেভোলিউশনারি ফ্রন্ট বা এসআরএফ-এর চুক্তি সই হয়েছে এ দিন। প্রায় নয় মাস ধরে এই চুক্তির পরিকল্পনা চলছিল। কিন্তু বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে এক ছাতার তলায় আনা যাচ্ছিল না। দীর্ঘ আলোচনার পরে অধিকাংশ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এক ছাতার তলায় আসতে রাজি হয়। সুদানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদাক চুক্তিতে সই করেছেন। বস্তুত, তাঁর চেষ্টাতেই এই চুক্তি সম্ভব হলো বলে মনে করছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। দক্ষিণ সুদানের রাজধানী শহরে এই অনুষ্ঠান হয়েছে। পুরো অনুষ্ঠানটিই টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ক্ষমতায় বন্টন, ক্ষতিপূরণ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও উল্লেখ আছে চুক্তিতে। এর ফলে নীল নদের উপত্যকা ঘিরে দীর্ধদিন ধরে যে বিতর্ক ছিল, তারও সুরাহা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। গৃহহীনরা তাঁদের বাসস্থানে ফিরতে পারবেন।

নীল নদের ধারে দক্ষিণ কোরদফান এবং পশ্চিম কোরদোফান নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে সমস্যা রয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, ওই দুই অঞ্চলে স্বায়ত্ত্ব শাসনের সুযোগ দেওয়া হবে। বস্তুত, গত ১৭ বছর ধরে যে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিকে এক মঞ্চে আনা যায়নি, সোমবার তা-ই সম্ভব হয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলিও জানিয়েছে, এই চুক্তি শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে। সাধারণ মানুষ যন্ত্রণার থেকে মুক্তি পাবেন।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, সুদানের সব চেয়ে বড় দুইটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী এই চুক্তিতে অংশ নেয়নি। ফলে শান্তি প্রক্রিয়া কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ওই দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠী শান্তির পক্ষে কথা না বললে ভবিষ্যতে সমস্যা আছে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে অস্থায়ী সরকার চুক্তিটি নিয়ে আশাবাদী। তাদের বক্তব্য, নতুন করে সুদানকে গড়ে তোলার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করা হয়েছে। সেনার বাজেট কমিয়ে তা মানুষের উন্নতিতে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সোমবারের এই ঐতিহাসিক চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামেরিকা, নরওয়ে এবং যুক্তরাজ্য। সুদানের উন্নতির জন্য তারা সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।

এসজি/জিএইচ (ডিপিএ, এপি)