সুইজারল্যান্ডে রাজনৈতিক আশ্রয়
১২ জুন ২০১৩২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আইন পরিবর্তন করে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান প্রক্রিয়ায় রদবদল করেন সুইস সরকার৷ এবার একটি গণভোটের মাধ্যমে সরকারের সেই প্রচেষ্টাকে বিপুল সমর্থন জানালো সুইস জনগণ৷
সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বোধহয় এই যে, বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা থেকে পলায়নকে আর রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার কারণ হিসেবে গণ্য করা হবে না৷ বিশেষ করে এরিট্রিয়া থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা আসছিল ঠিক এই কারণ দেখিয়ে৷ সেখানে সব সক্ষম পুরুষ ও মহিলাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অতি কম বেতনের সামরিক সেবাতে নিযুক্ত করা চলে৷ গত বছর এরিট্রিয়া থেকেই সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী সুইজারল্যান্ডে এসেছে৷
দ্বিতীয়ত, সুইজারল্যান্ড ছিল ইউরোপের মধ্যে একমাত্র দেশ, বিদেশে যাদের দূতাবাসে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা চলতো৷ সে সুযোগও তুলে নেওয়া হয়েছে৷ নতুন আইনে যে সব রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা ‘ট্রাবলমেকার' বলে পরিগণ্য, তাদের স্পেশাল সেন্টারে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ অপরদিকে পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হবার সুযোগ শুধুমাত্র স্ত্রী কিংবা স্বামী এবং পুত্রকন্যায় সীমিত করা হয়েছে৷
সুইসদের রক্ষণশীল – ও সংখ্যাগুরু অংশের ধারণা যে, তাদের দেশে যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে, তাদের দশজনের মধ্যে ন'জনই আসে অর্থনৈতিক উন্নতির আশায়৷ অপরদিকে এও সত্য যে, সুইজারল্যান্ডের প্রতি ৩৩২ জন নাগরিক পিছু একজন করে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী রয়েছে৷ অর্থাৎ জনসংখ্যার অনুপাতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানে সুইজারল্যান্ড শুধুমাত্র মাল্টা, সুইডেন ও লুক্সেমবুর্গের চেয়ে পিছিয়ে৷ জনসংখ্যার অনুপাতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর পরিসংখ্যানে ইউরোপীয় গড় হল ৬২৫ জন বাসিন্দা পিছু একজন রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী৷
সুইসদের বিরুদ্ধে বহিরাগত বিদ্বেষের অভিযোগ করার আগে এটাও মনে রাখা দরকার যে, ৫২ লাখ সুইস ভোটারদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও কম ভোটার এই গণভোটে অংশগ্রহণ করেছেন – যার একটা কারণ, সুইজারল্যান্ডে প্রায়ই নানা ধরনের গণভোটের আয়োজন করা হয়ে থাকে৷
রবিবারের গণভোটের ফলাফলে অবশ্য বিশেষ আশ্চর্য হবার কিছু নেই৷ ১৯৮১ সাল যাবৎ সুইজারল্যান্ড তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদান আইন ক্রমেই আরো কড়া করেছে৷
এসি/এসবি (এএফপি)