সরে দাঁড়াচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সুগা
৩ সেপ্টেম্বর ২০২১করোনাকালে প্রবল প্রতিবাদ সত্ত্বেও জাপানে সফল অলিম্পিকের আয়োজন করেছেন সুগা। কিন্তু তিনি দেশে করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে পারেননি। তার জন্য প্রবল চাপে ছিলেন। শুক্রবার তিনি ঘোষণা করলেন, আগামী মাসে ক্ষমতাসীন দলে নেতৃত্বের লড়াইয়ে তিনি থাকবেন না। ফলে জাপানে ক্ষমতাসীন দলের অন্য কোনো নেতা প্রধানমন্ত্রী হবেন।
আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পর্টির(এলডিপি) প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন হওয়ার কথা। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার শুরু হবে। সুগা জানিয়েছেন, তিনি এই নির্বাচনে লড়বেন না। প্রচারও কবেন না। করোনা মোকাবিলা করবেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
সুগা বলেছেন, ''একই সঙ্গে করোনার মোকাবিলা করা এবং নির্বাচনে লড়া কঠিন কাজ। তার জন্য প্রচুর শক্তি দরকার। তাই ঠিক করেছি, আমি করোনা মোকাবিলার দিকে নজর দেবো। নির্বাচনে দাঁড়াবো না।'' আগামী অক্টোবরে জাপানে সাধারণ নির্বাচন হতে পারে। সেখানে সুগা আর দলের নেতৃত্ব দেবেন না।
গত বছর সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য সমস্যার কথা বলে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন শিনজো আবে। তারপর সুগা প্রধানমন্ত্রী হন। একবছর থাকার পর তিনিও সরে যাচ্ছেন।
জনপ্রিয়তা কমে গেছে
সুগা যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন তখন তার জনপ্রিয়তার হার ছিল ৭০ শতাংশ। তিনি ছিলেন জাপানের এক স্ট্রবেরি কৃষকের ছেলে। কোনো রাজনৈতিক পরিবারের উত্তরাধিকার তার ছিল না।
কিন্তু করোনা সব বদলে দিলো। প্রথম দিকে করোনার মোকাবিলায় সরকার ধীর গতিতে কাজ করেছে। সরকারের এই ব্যর্থতা নিয়ে জাপানে প্রবল বিতর্ক হয়েছে, সুগার সমালোচনা হয়েছে। তার উপর তিনি প্রতিবাদকে আমলে না নিয়ে করোনাকালে অলিম্পিক করেছেন। এতেও তার জনপ্রিয়তা কমেছে। শুক্রবার তিনি সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর শেয়ার বাজার আরো চাঙ্গা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ টোরু সুইহিরো রয়টার্সকে বলেছেন, ''সুগা সরে যাওয়ায় এলডিপির জেতার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে গেল। তাই শেয়ার বাজারের এই প্রতিক্রিয়া।''
নতুন নেতার সন্ধানে
ক্ষমতাসীন এলডিপি এখন নতুন নেতার সন্ধান করছে। দৌড়ে অনেকেই আছেন। সাবেক মন্ত্রী ফুমিও কিশিডা তার মধ্যে একজন। গত বৃহস্পতিবারেও তিনি করোনা নিয়ে সুগার সমালোচনা করেছেন। সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে সোফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক কোশিনি নাকানো বলেছেন, ''দলে নেতৃত্বের ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কিশিডাই সব চেয়ে এগিয়ে আছেন। কিন্তু তাই বলে তিনি জিতবেনই তা বলা যাবে না।''
এবার তৃণমূল স্তরের সদস্যরাও নেতাবাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন। তাই কে নেতা হবেন, তা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।
জিএইচ/এসিবি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)