পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে
২৮ আগস্ট ২০২০সাংবাদিক সম্মেলন করে ইস্তফার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন আবে। তিনি বলেছেন, ''আমি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে চলেছি।'' প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে আলসারেটিভ কোলাইটিসে ভুগছেন।
৬৫ বছর বয়সী আবে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে খুব ক্লান্ত বোধ করছেন।
তাঁর এই সিদ্ধান্তে ক্ষমতাসীন জোট লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা শুরু হবে। যিনি সেই প্রতিযোগিতায় জিতবেন, তিনি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাপান শাসন করতে পারবেন।
জল্পনা ছিল
সম্প্রতি দুই বার হাসপাতালে গিয়ে চেক আপ করিয়েছিলেন আবে। তারপর থেকেই তাঁর স্বাস্থ্য ও পদত্যাগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
আবে হলেন দক্ষিণপন্থী রক্ষণশীল নেতা। তিনি প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হন ২০০৬ সালে। একবছর পদে থাকেন। তখনও স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেছিলেন। তবে তখন তাঁর মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে একের পর এক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠছিল। এর জেরেই ক্ষমতাসীন দল ভোটে হেরে যায়। এরপর দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হন ২০১২ সালে। তারপর থেকে সাত বছর আটমাস ধরে তিনি এই পদে আছেন।
এই সোমবারই তিনি জাপানের সব চেয়ে বেশিদিন প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ড করেছেন।
অবশ্য সম্প্রতি তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটার টান দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছিলেন। বিশেষ করে করোনা মোকাবিলায় তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের মানুষ খুশি হননি। অনেকের মনে হয়েছে. তিনি মানুষের স্বাস্থ্যের থেকে অর্থনীতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া ভোট কেনার অভিযোগে সাবেক ন্যায় মন্ত্রী ও তাঁর রাজনীতিক স্ত্রীর গ্রেফতারের ঘটনায় আবের জনপ্রিয়তা আরো কমেছে।
অ্যামেরিকা-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের পরে তাঁর আবেনমিকস বা তাঁর আর্থিক নীতিও মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। করোনার ফলে জাপানের অর্থনীতিতেও ধস নেমেছে। অর্থনীতিকে প্রাধান্য দিয়েও তিনি ধস ঠেকাতে পারেননি।
আবে জাপানের সংবিধান সংশোধন করতে চেয়েছিলেন। তা নিয়ে জাপানের মানুষদের মনে আশঙ্কাও ছিল। ধারণা হয়েছিল, আবে সামরিকীকরণের দিকে ঝুঁকতে পারেন। জাপানিদের বড় অংশ শান্তির পক্ষে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরের বছরগুলিতে শান্তি থাকায় জাপানের উন্নয়ন দ্রুত গতিতে হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মারকে আবে যাওয়ার পরে জাপানিদের মনে এই আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে ২০১৩-র পর আবে আর সেখানে যাননি।
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়ায় আবে আর সংবিধান সংশোধন করতে পারলেন না। তবে তিনি সামরিক খাতে বরাদ্দ আগের তুলনায় বাড়িয়েছেন।
জিএইচ/এসজি(এএফপি, রয়টার্স)