1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শহীদুল আলমের মুক্তি কেন নয়?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ নভেম্বর ২০১৮

খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ড. শহীদুল আলমকে হাইকোর্ট  জামিন দিয়েছে চার দিন হলো৷ রাষ্ট্রপক্ষ ওই জামিন স্থগিতের আবেদন করলেও তা শুনানি কার্যতালিকায় ওঠেনি৷ তাঁর জামিনও স্থগিত হয়নি৷ তারপরও তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না কেন?

https://p.dw.com/p/38W5Q
Bangladesch Dhaka Verhaftung Aktivist Shahidul Alam
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

গত বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) শহীদুল আলমের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি ভীষ্মদবে চক্রর্বতীর আদালত৷ সাধারণ বিবেচনায় ওইদিনই তাঁর কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি মুক্তি পাননি৷ এরপর শুক্র-শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটি৷ আশা করা হয়েছিল রবিবার মুক্তি পাবেন৷ কিন্তু রবিবারও পাননি৷ ওইদিনই শহীদুল আলমের জামিন স্থগিতের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ৷ তারা আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করলেও আবেদনটি শুনানির জন্য সোমবারও কার্যতালিকায় আসেনি৷ সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘কাল (মঙ্গলবার) চেম্বার জজ আদালতে আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে৷ আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপনের নাম্বার পড়েছে৷''

শহীদুল আল জাজিরায় সাক্ষাৎকারে স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব এবং সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন,‘‘তিনি (শহীদুল) আল জাজিরায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন৷ সেখানে তিনি স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব এবং সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন, সে কারণেই জামিন স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে৷''

শহীদুল আলমের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘চার দিন হলো তাঁর জামিনের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট৷ আমরা এখনো কাজগপত্র বের করতে পারিনি৷ আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় টেবিলে টেবিলে ঘুরছি৷ তারা জামিন স্থগিতের আবেদন করলেও তা মুভ করা হচ্ছে না৷ শহীদুলের জামিন স্থগিতও করা হয়নি৷ তারপরও তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না৷''

‘শহীদুলের জামিন স্থগিত করা হয়নি, তারপরও তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না’

তিনি বলেন,‘‘জামিন স্থগিতের আবেদনে তারা কোনো কারণ দেখাননি৷ আর যে কারণ দেখিয়ে মামলা হয়েছে, জামিন শুনানির সময় তারা আদালতের কাছে তা প্রমাণও করতে পারেননি৷ ফলে তিনি জামিন পেয়েছেন৷ এরপরও তাঁর মুক্তি বিলম্বিত করা হচ্ছে৷ আমার মনে হয়, তাঁর প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এটা করা হচ্ছে৷ জামিন শুনানি করতে গিয়ে ৩০-৩৫ দিন  ঘুরিয়েছে৷ অ্যাটর্নি জনারেল নিজেই ১০-১৫ বার সময় নিয়েছেন৷ আমাদের পাঁটটি কোর্টে ঘুরতে হয়েছে৷ রাষ্ট্র আইনের শাসনের মধ্যে আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না৷''

বাংলাদেশে ‘নিরাপদ সড়ক' আন্দোলন চলাকালে ‘উসকানিমূল মিথ্যা' তথ্য দেয়ার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট শহীদুল আলমকে তাঁর ধানমন্ডির বাসা থেকে আটক করা হয়৷পরের দিন তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়৷ এরপর শহীদুলকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ৷ নিম্ন আদালত দুই দফা তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে৷ এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে জামিনের আবেদন জানানো হয়৷ একবার হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাঁর জামিন আবেদন শুনানিতে বিব্রত হন৷ সাড়ে তিন মাস ধরে তিনি কারাগারে আছেন৷ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলায় আরো যাঁদের আটক করা হয়েছিল, তাঁদের কয়েক মাস আগেই জামিনে মুক্তি দেয়া হলেও শহীদুল আলমের এখনো মুক্তি মেলেনি৷

‘শহীদুল আলম রাষ্ট্রকে বিশ্বে তুলে ধরে গৌরব বাড়িয়েছেন, তার জামিনের বিরোধিতা করা দুঃখজনক’

মানবাবিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘আমরা লক্ষ্য করছি, আদালত জামিন দেয়ার পরও সেই জামিন আটকে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তৎপরতা চালানো হচ্ছে৷ জামিন সাংবিধানিক অধিকার৷ এর সঙ্গে ন্যায় বিচারের অধিকারও জড়িত৷ এটা বাধাগ্রস্ত হলে ন্যায় বিচার নিয়েই প্রশ্ন ওঠে৷''

তিনি আরো বলেন,‘‘শহীদুল আলম রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর কেউ নন৷বরং তিনি রাষ্ট্রকে বিশ্বে তুলে ধরেছেন৷ রাষ্ট্রের গৌরব বাড়িয়েছেন৷ তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা দুঃখজনক৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য