1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রোহিঙ্গা নেতারা এখন দেখবেন, জানাবেন পরে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

রোহিঙ্গাদের ৪০ জনের একটি দল এখন ভাসানচরে৷ সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ সরকার৷ তার আগে ভাসানচরের সার্বিক পরিস্থিতি দেখিয়ে আনতেই ৪০জন রোহিঙ্গাকে নেয়া হয়েছে সেখানে৷

https://p.dw.com/p/3i7E2
রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলছবি: bdnews24.com

৪০ জনের এই দলে দুইজন নারীও আছেন৷ তাদের শনিবার বিকেলে (৫ সেপ্টেম্বর ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়৷ মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাদের কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে ফিরে যাওয়ার কথা৷

ভাসানচরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে দুইজনের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে ডয়চে ভেলে৷ তারা এখনো ভাসানচরে আছেন৷ সেখানে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বেশ ভালো৷ ভাসানচরে বসে তারা যাতে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন সেজন্য তাদের মোবাইল ফোন সঙ্গে নিতে দেয়া হয়েছে৷

তাদের একজন মোহাম্মদ নূর জানান, নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাদের সেখানে নেয়া হয়েছে৷ সঙ্গে শরণার্থী কমিশনের লোকজনও আছেন৷ তাদের ভাসানচরের সুযোগ-সুবিধা দেখানোই এই সফরের উদ্দেশ্য৷ তিনি বলেন, ‘‘প্রতি আটটি পরিবারের থাকার জন্য একসঙ্গে এক রুমের আটটি করে পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে৷ এই আটটি পরিবারে জন্য কমন টয়লেট ও রান্নাঘর আছে৷’’

এছাড়া ‘‘টিউবওয়েল আছে, ডাক্তারখানা আছে, স্কুল আছে, পুলিশ ক্যাম্প আছে, বড় বড় পুকুর আছে, মহিষ আছে; যাতে বন্যার পানি না ঢুকতে পারে সেজন্য চারপাশ থেকে বাঁধ দেয়া আছে’’ বলেও জানান তিনি৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘অনেক দালান দেখলাম, অফিস দেখলাম, সাইক্লোন সেন্টার দেখলাম৷ এটা অনেক বড় জায়গা৷ আমাদের ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে৷ খাবার-দাবার ভালোই দিচ্ছে৷ আর মহিষ পালনের ব্যবস্থা আছে৷ মাছ ধরার ব্যবস্থা আছে৷’’ সেখানে কোনো কাজের ব্যবস্থা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আসলে কাজের ব্যবস্থা হবে, এখন নাই৷’’

মানুষ আসলে কাজের ব্যবস্থা হবে, এখন নাই: মোহাম্মদ নূর

যারা আগে থেকে ভাসানচরে আছেন তাদের সঙ্গেও দেখা হয়েছে মোহাম্মদ নূরের ৷ নূর জানান, ‘‘তারা কান্নাকাটি করছে৷” কেন কান্নাকাটি করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখানে তারা বিচ্ছিন্ন আছেন৷ বাবা-মা নাই৷ তাই তারা এভাবে থাকতে চাচ্ছেন না৷’’

কেমন লেগেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখান থেকে ক্যাম্পে গিয়ে তিন দিন পর তার কেমন লাগলো তা তিনি জানাবেন৷ তার আগে নয়৷’’

যা দেখছেন তাতে তিনি নিজে কক্সবাজারের ক্যাম্প ছেড়ে ভাসানচর যাবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তা তো এখন বলা যাবে না৷’’

আরেকজন রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতা মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, ভাসানচরে তার অনেক কিছুই ভালো লেগেছে৷ কিন্তু কক্সবাজারের ক্যাম্প ছেড়ে স্থায়ীভাবে ভাসানচরে যাবেন কিনা জানতে চাইলে তিনিও বলেন, ‘‘সেটা তো এখনই বলা যাচ্ছেনা৷ ফিরে গিয়ে পরিবারের সাথে আলাপ করি৷ সবার সাথে কথা বলি তারপর দেখব৷’’

তিনিও মোহাম্মদ নূরের মতোই সেখানকার থাকার ব্যবস্থাসহ অন্যান্য স্থাপনার বর্ণনা দেন৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘খানো কোনো খাবার নাই৷ লোকজন আসলে বাইরে থেকে খাবার আনতে হবে৷’’

তারা বেশ শান্ত এবং তাদের মধ্যে কোনো অপরাধ প্রবণতা আমরা এখনো দেখিনি: পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম ফারুক

তিনি জানান, ‘‘কাজের জন্য এখানে আমাদের খেত-খামার দেখানো হয়েছে, মহিষ, গরু ছাগল আছে৷ মাছের চাষ আছে৷ ভালোই মনে হয়েছে৷ সবাই আসলে তখন ভালো হবে৷ তার আগে তো বলা যায় না৷’’

ভাসানচরে আগে ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে নেয়া হয়েছে ৷ তাদের মধ্যে দুই শতাধিক নারী ও শিশু আছেন৷ তাদেরকে ক্যাম্পের বাইরে থেকে বা নৌকা থেকে উদ্ধার করে সেখানে নেয়া হয়৷

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় ভাসানচরের অবস্থান৷ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে৷ জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ তৈরি করেছে৷ এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের জন্য ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে৷

হাতিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) গোলাম ফারুক বলেন, ‘‘আমরা নৌবাহিনীর সাথে যৌথভাবে ভাসানচরের নিরাপত্তার কাজ করি৷ পুলিশের একটি ক্যাম্প আছে৷ আগে থেকেই যে ৩০৬ জন আছে, তাদের নিরাপত্তা দেয়াই আমাদের কাজ৷ তারা বেশ শান্ত এবং তাদের মধ্যে কোনো অপরাধ প্রবণতা আমরা এখনো দেখিনি৷’’

গতবছর জুনের ছবিঘরটি দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য