বিদেশিদের সঙ্গে জর্ডানের পদচ্যুত যুবরাজের ষড়যন্ত্র
৫ এপ্রিল ২০২১২০০৪ সালে জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ তার সৎ ভাই প্রিন্স হামজার যুবরাজ পদবি কেড়ে নিয়ে নিজের ছেলেকে যুবরাজ পদে বসান৷ জর্ডানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অস্থিতিশীল করতে সাবেক প্রিন্স হামজাহ বিন হুসেন ও তার সহযোগীদের বিভিন্ন বিদেশি গোষ্ঠির সাথে যোগাযোগ থাকার কথা জানান উপ-প্রধানমন্ত্রী আয়মান সাফাদি৷ শনিবার নিরাপত্তা বাহিনী বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে৷ সরকারের সমালোচনা করায় হামজাহকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে সাফাদি বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনগণকে উস্কে দেওয়া "সাম্প্রতিক কার্যক্রম এবং আন্দোলনে” জড়িত ছিলেন হামজাহ৷
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সাফাদি বলেন, রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ তার সৎ ভাই হামজাহ এবং রাজপরিবারের সাথে সরাসরি এ বিষয়ে আলোচনা করবেন ৷ উপ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই তদন্ত বহু আগেই শুরু হয় তবে হামজাহর ষড়যন্ত্র প্রচেষ্টা সরকার ব্যর্থ করে দেয় ৷
জর্ডানের প্রতিক্রিয়া কী?
ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশের পরে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় সাবেক যুবরাজ হামজাহর মা রানী নূর এটাকে "মিথ্যা অপবাদ” বলে টুইটার বার্তায় তীব্র নিন্দা করেন৷
এদিকে শনিবার জর্ডানের সেনা প্রধান বলেন, সাবেক যুবরাজ হামজাহকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে জর্ডানের নিরাপত্তা অস্থিতিশীল করার কিছু কার্যক্রম বন্ধ করার বলা হয়েছে৷ যদিও একটি ভিডিও বার্তায় প্রিন্স হামজাহ এবিষয়টি অস্বীকার করেন৷ অন্য আরেক উপ-প্রধানমন্ত্রী তৌফিক ক্রিসান জানান, জর্ডান সরকার বিরোধীদলের কার্যক্রমে কখনও বাধার সৃষ্টি করেনি৷ জর্ডানের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা এরই মধ্যে বিপদসীমায় আছে যা কোনোভাবেই অতিক্রম করতে দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছে সরকারি পত্রিকা আল-রাই৷
উপ প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্তৃপক্ষ দু'জন শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৪ থেকে ১৬জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ আটকদের মধ্যে রয়েছেন রাজার দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী বাসেম আওয়াদাল্লাহ৷ তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উপদেষ্টাও ছিলেন ৷
জর্ডানের এক বিশ্লেষক লবিব কামহাবি সংবাদ মাধ্যম এপিকে বলেন, হামজা রাজ পরিবারের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অতিক্রম করেছেন এবং তিনি বাদশাহর বিকল্প হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা বাদশাহ মেনে নিতে পারেননি৷
যেসব দেশ বাহশাহকে সমর্থন করেন
জর্ডানের বেশ কিছু প্রতিবেশী দেশ ছাড়াও মার্কিন যক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন জর্ডানের বাহশাহর সমর্থক৷
ডয়চে ভেলের সাংবাদিক আয়া ইব্রাহীম বলেন, সাবেক প্রিন্স হামজাহ জর্ডানের বাদশাহ এবং দেশটির ক্ষমতাসীন ধনীদের দুর্নীতির সমালোচনা করেন৷ আম্মান ভিত্তিক সাংবাদিক রানা সুয়াইস ডয়চে ভেলের কাছে যুবরাজ হামজার ভিডিওটি "নজিরবিহীন” বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগে কখনও তিনি এমন ঘটনা দেখেননি৷
এনএস/কেএম(এএফপি, এপি, রয়টার্স)