1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিডিআর বিদ্রোহের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

হোসাইন আব্দুল হাই/রয়টার্স২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯

দু’বছর সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনের পর গত মাসে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন৷ সর্বজন প্রশংসিত জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে আবার গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসে৷

https://p.dw.com/p/H1se
বিদ্রোহী বিডিআর সেনাদের একাংশ৷ছবি: AP

নতুন সরকার আসার ফলে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতার যে স্বপ্ন দেশবাসী দেখেছিল বুধবারের বিডিআর বিদ্রোহ তা আবার ম্লান করে দিয়েছে৷ বেতন ভাতা ও নেতৃত্ব কাঠামো পরিবর্তনের প্রশ্নে আধাসামরিক বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) জওয়ানরা সশস্ত্র বিদ্রোহ করে৷

Bangladesh Meuterei von Grenzsoldaten
বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছেন এক সেনা সদস্য৷ছবি: Harun-ur-Rashid Swapan

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাহায্য ও ঋণ দাতা দেশগুলো বর্তমানে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে আসছে৷ কিন্তু বিডিআরের বিদ্রোহে দেশ আবারও তীব্র সংকটের মুখোমুখি৷

বিডিআর জওয়ানরা বুধবার সকালে ঢাকার পিলখানায় অবস্থিত তাদের সদর দপ্তরে বিদ্রোহ করে৷ বিদ্রোহীরা মূলত বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই এ সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে৷ এখন পর্যন্ত বিদ্রোহীরা রাজনৈতিক পরিবর্তনের কোন দাবি করেনি৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার যদি এ মুহূর্তে বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয় তবে তারা দুর্বল প্রমাণিত হবে৷ এক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীর অপর কোন পক্ষ থেকেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম নেয়ার আশংকা করছেন তাঁরা৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে সেনা বিদ্রোহ আর অভ্যুত্থানের বেশ কিছু নজির রয়েছে৷ অন্যদিকে সরকার যদি বিদ্রোহী জওয়ানদের সব দাবি মেনে নেয়, তবে তা সশস্ত্র বাহিনীর ভেতরে ও বাইরে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে যাবে৷ পরিণামে অন্যরাও যে কোন দাবি আদায়ের জন্য সংঘাত ও সহিংসতার পথ বেছে নিতে প্ররোচিত হবে ৷

BDR Dhaka Bangladesh
বিডিআর সদর দপ্তরের সামনে সেনাবাহিনীর অবস্থান৷ছবি: Harun-ur-Rashid Swapan

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই তাদের দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ঘটিয়ে থাকে – আর তা প্রতিরোধে সম্মিলিত সামরিক বাহিনীকেই ব্যারাক থেকে ডেকে আনা হয়৷ অথচ বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং দাতা দেশগুলো কখনই দীর্ঘ অস্থিতিশীলতা বা সামরিক হস্তক্ষেপ – কোনটিই ভালো চোখে দেখে না৷

এদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখা যাচ্ছে, সংসদে বিরোধী দলে থাকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সংসদে সামনের সারিতে আসন এবং বিরোধী দল থেকে একজন ডেপুটি স্পিকারের দাবিতে ওয়াক আউট করে৷ তাদের দাবি মেনে নেয়ার ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পরই তারা সংসদে ফিরে গেছে৷ কিন্তু বিশ্লেষকরা আশংকা করেন, বিরোধী জোট হয়তো শীঘ্রই নতুন কোন দাবি তুলবে এবং তা না মানা হলে তারা রাজপথে নেমে আসবে৷

বিডিআর বিদ্রোহের আগে সম্প্রতি ঢাকাসহ সারাদেশে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল৷ পুলিশের তথ্য মতে, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে সহিংস ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছে৷ এ হত্যাকান্ডগুলোর অধিকাংশই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগের দু'গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ঘটেছে৷

সরকার গঠনের অল্প সময়ের মধ্যেই জ্বালানী ও সারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কমানোর জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ এছাড়া তিনি মন্ত্রী পরিষদে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ নেই – এমন তরুণ নেতাদের রাখার জন্যও বেশ প্রশংসা পেয়েছেন৷ কিন্তু গত দু'দিনে বিডিআর বিদ্রোহীদের সহিংসতা দেশের শেয়ার বাজারের উপর ছাপ ফেলেছে৷ শেয়ার সূচক এক শতাংশ কমেছে৷ এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এ বছর জুনে শেষ হওয়া অর্থবছরে ৬.৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশংকা করছে৷ অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা দেশের অর্থনীতির আরও অবনতি ঘটাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য