বাদ্যযন্ত্রের দাম যখন কোটি টাকা!
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২এমন এক চেলো, যার ধ্বনিই শুধু মুগ্ধ করে না, বাদ্যযন্ত্র হিসেবে সেটির দামও চমকে দেবার মতো – প্রায় তিন কোটি ইউরো! ২২ বছর বয়সি ব্রিটিশ তারকা শেকু কানে মেসন আজ ৩২০ বছরেরও বেশি পুরানো এই চেলোটি বাজান৷ তার মতে, ‘‘এর ধ্বনি বেশ ভরাট, একেবারেই ফিকে নয়৷ গভীরতাও রয়েছে৷ সব সময় একটা ভরাট ভাব থাকে৷ মনে হয় একেবারেই চিকন সুর নয়৷ নীচের দিকে কত অন্ধকার৷ একই ধ্বনির যে কত মাত্রা থাকে৷ এমন বাদ্যযন্ত্র হাতে পেয়ে বাজানোর সুযোগ সত্যি অসাধারণ৷’’
তরুণ এই সংগীতশিল্পীর এমন বাদ্যযন্ত্র কেনার সামর্থ্য ছিলো না৷ ছয় জন স্পনসর মিলে সেটি কিনে আজীবন তাকে ধার দিয়েছেন৷ রেনেসাঁর সময় থেকেই এমন পৃষ্ঠপোষক সংগীতশিল্পীদের সহায়তা করে আসছেন৷ নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে মেসন বলেন, ‘‘প্রথমবার এই বাদ্যযন্ত্র বাজানোর সময় আমি অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম৷ নানা পরীক্ষিনিরীক্ষা করতে উদ্ধুদ্ধ হয়েছিলাম৷ প্রাথমিক ধারণা পেয়ে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম৷ বাজাতে বাজাতে আরও সম্ভাবনা আবিষ্কার করলাম৷ এই বাদ্যযন্ত্রের কল্যাণে আমার বাজানোর হাতও আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে৷’’
জার্মান বংশোদ্ভূত বেহালা বিশেষজ্ঞ ফ্লোরিয়ান লেওনহার্ড সেই সংযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন৷ তিনি অসাধারণ বাদ্যযন্ত্রগুলিকে তরুণ প্রতিভাবান সংগীতশিল্পীদের নাগালে আনার চেষ্টা করেন৷ লন্ডনে তার দফতরে অত্যন্ত মূল্যবান বাদ্যযন্ত্রগুলি উপযুক্ত সংগীতশিল্পীদের অপেক্ষায় থাকে৷ ফ্লোরিয়ান সেগুলিরই কয়েকটি বর্ণবা করে বলেন, ‘‘এখানে স্ট্রাডিভারিস কোম্পানির দুটি বেহালা রয়েছে৷ একটি পরবর্তী পর্যায়ের, অন্যটি স্বর্ণযুগের৷ এখানে কার্লো বারগনৎসি নামের বিখ্যাত ক্রেমোনিজ বেহালা প্রস্তুতকারীর সৃষ্টি রয়েছে৷ প্রতিটি বাদ্যযন্ত্রের দাম ১০ লাখ ইউরোর বেশি৷ স্ট্রাডিভারিস কোম্পানি হলে দাম আজকাল এক কোটিরও বেশি হতে পারে৷ বিশ্বব্যাপী চাহিদার তুলনায় অনেক কম বাদ্যযন্ত্র তৈরি হয় বলেই এমন কদর৷’’
শেকু কানে মেসন যেখানেই বাজাতে যান, সঙ্গে ৩০ লাখ ইউরো মূল্যের বাদ্যযন্ত্রটি থাকে৷ ফলে মনের উপর চাপ সৃষ্টি হতে পারে বৈকি৷ এমন চাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘হাঁটার সময় আমি খুব সতর্ক থাকি৷ তখন সেটি কাছেই থাকে৷ তবে আসলে কিন্তু সেটির মূল্য নিয়ে তেমন মাথা ঘামাই না৷’’
বড় প্রতিভার সঙ্গে প্রথম সারির বাদ্যযন্ত্রের মেলবন্ধন অসাধারণ এক ঐকতান রচনা করে৷
ইয়ানা ওর্টেল/এসবি
গত সেপ্টেম্বরের ছবিঘরটি দেখুন...