1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সেরা বাদ্যযন্ত্র পাওয়া যায় জার্মানির যে শহরে

২৩ অক্টোবর ২০২০

জার্মানির পূর্ব সীমান্তের ছোট একটি শহর বিশ্বের অনেক সংগীতশিল্পীর কাছে পরিচিত৷ কয়েকশো বছর ধরে সেখানে অসাধারণ সব বাদ্যযন্ত্র তৈরি হচ্ছে, কারখানায় তৈরি সংস্করণের সঙ্গে যেগুলির কোনো তুলনাই চলে না৷

https://p.dw.com/p/3kJip
বাদ্যযন্ত্র তৈরির কাজ চলছেছবি: DW

মার্কনয়কিয়ের্শেন এক কথায় সংগীতশিল্পীদের স্বর্গ৷ জার্মানির পূবের সীমানায় অবস্থিত এই শহরের জনসংখ্যা আট হাজারেরও কম৷ কিন্তু সেখানে প্রায় একশো বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারক রয়েছে৷ কয়েকজন বেহালা কারিগর প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে এই ধারা শুরু করেছিলেন৷

বাদ্যযন্ত্রের প্রয়োজন হলে কাসেল স্টেট অর্কেস্ট্রার কাটিয়া ভিক-এর মতো সংগীতশিল্পীরা আজ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সেখানে আসেন৷ বিখ্যাত বেহালা প্রস্তুতকারক একার্ড সাইডেল তাঁর ছেলে ও শিক্ষানবিসের সঙ্গে দীর্ঘ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন৷ তাঁরা ইটালির বিখ্যাত বাদ্যযন্ত্রের কারিগর আন্টোনিও স্ট্রাডিভারি ও স্থানীয় কারিগরদের পদ্ধতি কাজে লাগান৷ একার্ড বলেন, ‘‘আমাদের প্রত্যেকটি বাদ্যযন্ত্র নির্দিষ্ট কোনো সংগীতশিল্পীর জন্য আলাদা করে প্রস্তুত করা হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই নিজেদের গুণ অনুযায়ী অর্ডার দেন৷ বলতে পারেন, আমরা ধ্বনির ক্ষেত্রে দরজির মতো কাজ করি৷’’

স্মিট মাউথপিস মেকারও ১৭৯০ সাল থেকে পারিবারিক ব্যবসা চালিয়ে আসছে৷ তারাও অর্ডার অনুযায়ী বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে৷ মাক্স হ্যার্টলাইন ও তাঁর পিতামহ মাউথপিস, ট্রাম্পেট ও ব্রাসের মতো বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেন৷ দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায়ও সেগুলির ক্রেতা রয়েছে৷ হাতে তৈরি ট্রাম্পেটের দাম তিন হাজার ইউরো হতে পারে৷ কারখানায় তৈরি সাধারণ বাদ্যয়ন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করলে তবেই এমন বস্তুর মূল্য বোঝা সম্ভব৷ মাক্স বলেন, ‘‘আমরা চিরায়ত পদ্ধতি কাজে লাগাই৷ পিটিয়ে, হাতুড়ি মেরে, পালিশ করে ধাতুর আকার স্থির করি৷ গোটা প্রক্রিয়ার ফলে অত্যন্ত পাতলা অথচ মজবুত উপকরণ তৈরি হয়, যা স্পষ্ট ধ্বনির জন্য জরুরি৷’’

সংগীতশিল্পীদের স্বর্গ মার্কনয়কিয়ের্শেন

রনে হেনকেট নেদারল্যান্ডসের তারকা বেহালাবাদক ও কন্ডাকটর আন্দ্রে রিউ-র অর্কেস্ট্রায় ট্রাম্পেট বাদক৷ তিনি মাউথপিস কিনতে এখানে আসেন এবং সেই সুযোগে নানা বাদ্যযন্ত্র ঘেঁটে দেখেন৷ রনে বলেন, ‘‘এই ট্রাম্পেটগুলি বাজিয়ে দেখলে সত্যি অনুভব করা যায়, যে কোনো পুরানো ধাতুর টুকরো হাতে নেই৷ সেটি সৃষ্টির পেছনে যত্ন টের পাওয়া যায়৷ সংগীতশিল্পী হিসেবে এমন অনুভূতি ভালো লাগে৷’’

টর্স্টেন প্রয়েস শিক্ষানবিস হিসেবে মার্কনয়কিয়ের্শেন শহরে এসেছিলেন৷ তারপর তিনি নিজেই সেখানে দোকান খোলেন৷ তাঁর ‘প্রয়েস গিটার্স’ কোম্পানি ইলেকট্রিক, ওয়েস্টার্ন ও কনসার্ট গিটার তৈরি করে৷

গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের দামী কাঠ থেকে শুরু করে নানা উপকরণ দিয়ে সেই সব গিটার তৈরি হয়৷ তবে কাঠ যথেষ্ট পুরানো হতে হবে, যাতে তার আকার বদলে না যায়৷ প্রত্যেকটি গিটার হাতে করে তৈরি করা হয়৷ জমজমাট হানোফার শহর থেকে এখানে এসে টর্স্টেনের মনে কোনো খেদ নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমাদের একটা সম্প্রদায়, একটা অবকাঠামো রয়েছে, যা বহু প্রজন্ম ধরে গড়ে উঠেছে৷ এই এলাকার গভীর ঐতিহ্য রয়েছে৷ অন্য কোথাও এমনটা পাবেন না৷ একইসঙ্গে আমরা সমসাময়িক প্রবণতার দিকে নজর রাখি৷’’

মার্কনয়েনকিয়ের্শেন শহরে ঐতিহ্য ও উদ্ভাবনী শক্তির মেলবন্ধনও দেখা যায়৷ বাদ্যযন্ত্র প্রস্তুতকারীরা নিখুঁত কাজ করেন এবং স্বর্গীয় ধ্বনি সৃষ্টির সুযোগ করে দেন৷

ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি