1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা জার্মানিতে কম নয়!

২৫ নভেম্বর ২০২০

জার্মানিতে প্রতিদিন একজন পুরুষ তার বর্তমান বা সাবেক পার্টনারকে হত্যা করার চেষ্টা করে থাকে৷ আর এ ধরনের অপরাধীরা প্রতি তিনদিনের একদিন সফল হয়ে থাকে৷ এসব অপরাধীদের জন্য যথেষ্ট শাস্তি নেই বলে অভিযোগ দেশের নারী অধিকার সংগঠনের৷

https://p.dw.com/p/3loj2
কবরস্থানে এক নারী
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Klose

প্রায় দু'বছর আগে ফ্রাংকফুর্ট শহরে ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৫ বছর বয়সি একজন ডাক্তারকে তার সাবেক পার্টনার ১৮ বার ছুরিকাঘাত করে ৷ তার কয়েক মিনিট পরেই এই নারীকে বাড়ির সামনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ৷সেসময় প্রসিকিউটর ইউলিয়া শেফার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ ওই হত্যাকাণ্ডকে একটি বিশেষ ঘটনা ছিলো বলে উল্লেখ করে ইউলিয়া শেফার বলেন, হত্যাকারী এবং তার সাবেক পার্টনারের মধ্যে যোগাযোগে নিষেধাজ্ঞা ছিলো, পুলিশ তা জানত৷ তা সত্ত্বেও পুরুষটি তার সাবেক সঙ্গীকে ফিরে পেতে চেয়েছে৷ হত্যার দিন তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে বলে নারীটি জানালে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়৷

হেসে রাজ্যের আইন মন্ত্রণালয়ের ঘরোয়া সহিংসতা বিষয়ক অফিসের প্রধান ইউলিয়া শেফার বলেন ‘‘পার্টনারকে হত্যা করার ঘটনা কখনো হঠাৎ করে ঘটেনা, এগুলোর শুরু সাধারণত ঘরোয়া সহিংসতা, অপমান, লাঞ্ছনা এবং অর্থনৈতিক চাপের কারণে হয়৷ এর পেছনে থাকে দীর্ঘ ইতিহাস৷’’

এসব হত্যার ঘটনাগুলো প্রায়ই পারিবারিক ট্র্যাজেডি, হিংসা বা প্রেমের নাটক অভিহিত করে দেশের গণমাধ্যমকে জানানো হয় বলে অভিযোগ করে জার্মানির নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলো৷ নারী অধিকার সংগঠন টেরে ডেস ফেমেস এর ভানেসা বেল এ বিষয়ে অভিযোগ করে বলেন, গণমাধ্যমকে সেসব কথা বলার কারণে এসব খুন সামগ্রিকভাবে সমাজের সমস্যার চেয়ে ব্যক্তিগত বিষয় এবং একক ঘটনা হয়ে ওঠে৷ নারী সংহিসতার বিষয়গুলো এখনো জার্মানিতে ট্যাবু বিষয় ৷ ২০১৪ সালের ইইউ-এর করা এক গবেষণায় জানা যায়, ঘরোয়া সহিংসতা বা গৃহ নির্যাতনের ঘটনার প্রতি তিনটির একটি পুলিশকে রিপোর্ট করা হয়ে থাকে৷ ফ্রাংকফুর্টের ঘটনায় হত্যার দায়ে অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে ঠিকই তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এধরনের অপরাধীরদের দশ বছরের কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের৷

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা সব সমাজের সকল শ্রেণিতেই ঘটে থাকে এবং সর্বত্রই তা প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন ভেনেসা বেল ৷ আইনজীবী জুলিয়া শোফার বলেন, ‘‘ঘরোয়া সহিংসতা ধর্ম, জাতীয়তা বা শিক্ষার প্রশ্ন নয়৷ অনেকেই গৃহ নির্যাতনের ঘটনাকে পারিবারিক বিষয় বলে দূরে সরে থাকেন৷ বরং নারীর প্রতি সহিংসতা কমাতে  সকলকেই এগিয়ে আসা উচিত৷’’

জার্মানির নারী অধিকার সংগঠনগুলো আশা করে যে, আগামীতে নারী সহিংসতার বিষয়ে বিচারক এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ আরো জোরদার করা হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানসিক এবং আইনি পরামর্শের প্রসার ঘটবে৷ জার্মানিতে গৃহ নির্যাতনের শিকার নারীদের জন্য যেসব আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোতে প্রতি বছর ১৬ হাজার নারী আশ্রয় নেয়৷ সেখানে বর্তমানে প্রয়োজন দ্বিগুণ জায়গার৷

এনএস/রিনা গোল্ডেনব্যার্গ