1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দর্শকের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বদলে যায় যে ছবি

১ এপ্রিল ২০২১

ম্যাজিক শো মানেই জাদুকরের তৈরি বিভ্রম৷ এক ব্রিটিশ চিত্রশিল্পীও বিভ্রমের কৌশল কাজে লাগিয়ে অসাধারণ শিল্প সৃষ্টি করে চলেছেন৷ তার কেরামতিতে দর্শকদের নজর অনুযায়ী স্থিরচিত্র কার্যত সচল হয়ে উঠছে৷

https://p.dw.com/p/3rUQV
DW Euromaxx 06.02.21 Patrick Hughes
ছবি: Patrick Hughes

ত্রিমাত্রিক সারফেসের উপর চোখের বিভ্রম৷ ট্র্যাপেজয়ে়ড ও দৃষ্টিকোণ নিয়ে খেলার মাধ্যমে দর্শকদের চোখে ফাঁকি দিয়ে যা নেই তা দেখানো হচ্ছে৷ ব্রিটিশ শিল্পী প্যাট্রিক হিউস একে বলেন ‘রিভার্সপেক্টিভ' বা উলটো দৃষ্টিভঙ্গি৷ চিত্রকর হিসেবে তিনি নিজেই এই কৌশল সৃষ্টি করেছেন৷ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘এটা সত্যি অসাধারণ, কারণ আপনাকে ব্যবহার করেই মুভমেন্ট বা সঞ্চালন সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ কিছু শিল্পী এমন শিল্প সৃষ্টি করেন, যার মধ্যে রাখা যন্ত্র সেটিকে চালায়৷ আমার সৃষ্টিকর্ম আপনার নড়াচড়া অনুযায়ী সরে যাচ্ছে বলে মনে হয়৷''

লন্ডনের স্টুডিওয় পাঁচ জন তাকে সাহায্য করেন৷ সৃষ্টির গোটা প্রক্রিয়া বেশ জটিল৷ একটি ছবির কাজ শেষ করতে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে৷ সবার আগে কাঠ খোদাই করে ত্রিমাত্রিক ভিত্তি তৈরি করতে হয়৷ তারপর প্যাট্রিক হিউস নিজের আইডিয়াগুলি এঁকে নেন৷ কম্পিউটারের সাহায্যে তিনি নিজের ডিজাইনগুলি ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন৷ তারপর তিনি ও তার টিম তেল রং দিয়ে ছবি আঁকেন৷

প্যাট্রিক অন্য শিল্পীদের সৃষ্টিকর্মকে ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পছন্দ করেন৷ এর কারণ ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘অন্য অনেক মানুষের মতো আমিও ব্যানস্কির কাজ পছন্দ করি বলে তার কাজ বেছে নিয়েছি৷ দেওয়ালও এর মূল কারণ৷ যে কোনো গ্র্যাফিটি শিল্পী কংক্রিট প্রাচীরের উপর কাজ করতে ভালোবাসেন৷ কিন্তু আমরা বিষয়টা এমনভাবে সাজাচ্ছি, যে মনে হবে তারা ইটের দেওয়ালে কাজ করছেন৷''

ইটালির ভেনিস প্যাট্রিক হিউসের খুবই পছন্দের শহর৷ তার সৃষ্টিকর্মেও বিষয়বস্তু হিসেবে ভেনিস উঠে এসেছে৷ প্যাট্রিক বলেন, ‘‘এমন চিত্রকর্মে দৃষ্টিভঙ্গি আগে থেকেই স্পষ্ট৷ ফলে এটা বেশ কঠিন কাজ৷ প্রাসাদগুলি ধীরে ধীরে আকাশের দিকে সরে যাচ্ছে৷ উপহ্রদের শেষে জুদেকা দ্বীপও দেখা যাচ্ছে৷ যে প্রাসাদগুলি এঁকেছি, মনে হবে সেগুলি যেন প্রেক্ষাপটের সঙ্গে সঙ্গে সরে যাচ্ছে৷ আপনি সরে গেলে সেগুলিও সরে যাবে৷ ঠিক যেন নাচের তালে তালে আপনার সঙ্গী ঘুরে চলেছে৷''

প্যাট্রিক হিউস ১৯৬৪ সালে তার প্রথম রিভার্সপেক্টিভ ছবি সৃষ্টি করেন৷ সেটির নাম দেন ‘স্টিকিং আউট রুম'৷ ১৯৯০-এর দশকের আগে তিনি অবশ্য সেই কৌশল নিখুঁত করার কাজে হাত দেন নি৷ ২০১৬ সালে ‘জ্যাজ' নামের সৃষ্টিকর্ম তাকে বিশ্ববিখ্যাত করে তোলে৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি আশেপাশের স্থাপত্য থেকে নিজের প্রকল্পগুলির জন্য প্রেরণা পান৷ এমন দৃষ্টিভঙ্গির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনি প্যাট্রিক বলেন, ‘‘ছোটবেলায় মনে হতো, ভবনগুলি কেন আপেল, নাশপাতি, ঘোড়ার মতো দেখতে হয় না? কল্পনাশক্তির কেন এত অভাব? আজ আর পরোয়া না করলেও ভবনগুলি আসলে সত্যি বড় ক্লান্তিকর৷ সেগুলিকে আরও প্রাণবন্ত ও ইন্টারেস্টিং করে তোলা উচিত৷''

রিভার্সপেক্টিভ সৃষ্টিকর্মের আকার-আয়তনের বিশাল বৈচিত্র্য রয়েছে৷ দামও তার উপর নির্ভর করে৷ কয়েকটি ছবি এমনকি এক লাখ ষাট হাজার ইউরো দামে বিক্রি হয়েছে৷ প্যাট্রিক হিউস মনে করিয়ে দেন, ‘‘আমার সৃষ্টিকর্ম শুধু দেখা যায় না, সেগুলি অনুভবও করা যায়৷ একটা গোটা মানুষের সংমিশ্রণের মতো৷ আপনার পা ও হাঁটু আপনাকে তা বলে দেবে৷ শরীর, পেট ও চোখও আপনাকে উপলব্ধি করাবে৷ বুদ্ধিজীবী হিসেবে মনে হত সবকিছুই মনের ব্যাপার৷ আসলে শরীর ও মন – দুইয়েরই উপলব্ধি হয়৷''

বিভ্রম যত নিখুঁত, অভিজ্ঞতাও তত পরিপূর্ণ হয়৷ প্যাট্রিক হিউস আমাদের জগতকে অসাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার সুযোগ করে দেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য