ডেনমার্কের মানুষের প্রিয় টিভোলি পার্ক
২২ আগস্ট ২০১৮কোপেনহেগেন শহরে টিভোলি বিশ্বের প্রাচীনতম থিম পার্কগুলির অন্যতম৷ সেখানে শুধু রোলার কোস্টার ও নাগরদোলা নয়, সংস্কৃতি ও খাদ্যরসের স্বাদও পাওয়া যায়৷ ডেনমার্কের মানুষ ও বাকি বিশ্ব থেকে আসা পর্যটকরা সেই অনবদ্য পরিবেশ উপভোগ করেন৷
পার্কের মধ্যে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো ১০০ বছরেরও বেশি পুরানো কাঠের রোলার কোস্টার৷ প্রত্যেক কামরার মধ্যে একটি করে ব্রেক রয়েছে৷ সঠিক জায়গায় গতি কমাতে সেটি কাজে লাগতে হয়৷ রোলার কোস্টার কর্মী স্টেফান ইয়োর্গেনসেন বিষয়টি বুঝিয়ে বললেন, ‘‘মানুষই গোটা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে, কম্পিউটার বা অন্য কিছু নেই৷ সবই আমার হাতে৷ অর্থাৎ আমি ভুল করলে আমরা দেওয়ালে ধাক্কা খাবো৷ অতএব গুড লাক!''
দিনে ৮০ থেকে ১,২০০ বার রোলার কোস্টার চালানো হয়৷ সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার৷
১৭৫ বছর ধরে টিভোলি চালু রয়েছে৷ প্রথমদিকে সমালোচনা শোনা যেত৷ নিন্দুকরা বলতেন, মনোরঞ্জনের জন্য টাকা নষ্ট না করে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ কাজে মন দেওয়া উচিত৷ কিন্তু এমন কণ্ঠ বহুকাল আগেই স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ আজ টিভোলি কোপেনহেগেন শহরের ডিএনএ হয়ে উঠেছে৷ টিভোলির দীর্ঘদিনের কর্মী এলেন ডাল বলেন, ‘‘ডেনমার্কের সব মানুষ, বিশেষ করে কোপেনহেগেন এলাকার সব মানুষের টিভোলি নিয়ে শৈশবের স্মৃতি রয়েছে৷ তাই টিভোলিতে এলে শুধু রোলার কোস্টার চাপা, খাদ্য বা কনসার্ট নয়, শৈশবের স্মৃতি জেগে ওঠে৷ নির্দিষ্ট কিছু আবেগ নিজের সন্তান বা অন্য প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়৷''
১৭৫ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে চলতি মরসুমে প্রতিদিন টিভোলির মধ্য দিয়ে বড় প্যারেড হয়৷ ২২ জন অভিনেতার জন্য এই কাজ নিছক চাকরি নয়৷ অনেকে বহু বছর ধরে তাতে অংশ নিচ্ছেন৷ তাঁদেরই একজন রবিন বার্নাডেট৷ তিনি বলেন, ‘‘কখনোই রুটিন কাজ মনে হয়নি৷ কারণ পার্কে সব সময়ে কিছু না কিছু হচ্ছে৷ কয়ার থেকে গসপেল সংগীত, গ্রিনল্যান্ড দিবস থেকে ‘৫০ সেন্ট' গোষ্ঠীর কনসার্ট৷ তাই পার্কে একঘেয়েমীর কোনো জায়গা নেই৷ সবসময়ে নতুন কিছু ঘটছে৷''
উদ্বোধনের এত বছর পরেও মূল লক্ষ্য আজও প্রাসঙ্গিক রয়েছে৷ বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ এখানে আসেন৷ এলেন ডাল বলেন, ‘‘অবশ্যই আজ অন্য ধরনের প্রতিযোগিতা রয়েছে৷ কারণ সময় ও অর্থ ব্যয় করার কত জায়গা হয়েছে৷ তবে আমরা চিরকাল যা করেছি, টিভোলি সেটাই করে৷''
কোপেনহেগেন শহরের টিভোলি ঐতিহ্যে ভরা এক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, যা অনেক দর্শকের মাথা ঘুরিয়ে দেয়৷
ইয়েন্স ফন লার্শার/এসবি