1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাষির জীবনে স্বস্তি আনছে মোবাইল সোলার প্যানেল

১৬ নভেম্বর ২০২২

সৌরশক্তি কাজে লাগিয়ে চাষের কাজ অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারে৷ কিন্তু বাস্তবে নানা সমস্যা সেই পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রয়োগের অন্তরায় হয়ে ওঠে৷

https://p.dw.com/p/4Jd7i
মোবাইল সোলার প্যানেল
মোবাইল সোলার প্যানেলছবি: Reuters

ভারতের এক চাষি এক বাস্তব সমাধানসূত্র খুঁজে পেয়েছেন৷

নিজের মোবাইল পাওয়ার প্লান্টের সাহায্যে হরজিন্দর সিং নিজের খেতে সেচের প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ খামারে পৌঁছানোর পরেই তিনি সবার আগে সৌর প্লান্ট চালু করেন৷ তার মতে, দুই জন হাত লাগালো পাঁচ থেকে ছয় মিনিটের বেশি সময় লাগে না৷ আগেও তিনি ফসল ফলানোর সময়ে সৌরশক্তি ব্যবহার করে সেচের কাজ করেছেন বটে, কিন্তু চোরের উপদ্রবে তাকে উদ্ভাবনী সমাধানসূত্র বার করতে হয়েছে৷ সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে হরজিন্দর বলেন, ‘‘আমাদের খামারে আগে সোলার প্লান্ট বসানো ছিল৷ কিন্তু সোলার প্যানেল চুরি যেতে লাগলো৷ সেই সমস্যার কারণে আমরা ট্রাকটর ট্রলির উপর এমন প্যানেল বসিয়েছি৷''

ট্রাকটর ট্রলিতে বসানো এই মোবাইল সোলার প্লান্টে ২৪টি প্যানেল রয়েছে৷ হরজিন্দর সিংয়ের মতে, তাঁর খেতে সেচের জন্য সেই প্লান্টের শক্তি যথেষ্ট৷ দিনের বেলায় সূর্ষের অবস্থান অনুযায়ী প্যানেলগুলি ঘোরানো যায়৷ এভাবে পানির পাম্পের জন্য আরও শক্তির ব্যবস্থা করা সম্ভব৷ হরজিন্দর সিং বলেন, ‘‘আমরা ফার্মের মধ্যেই যে কোনো দিকে এই ট্রলি রাখতে পারি৷ সূর্যের আলো অনুযায়ী প্যানেল ঘোরানো যায়৷ ট্রলি সরানোর প্রয়োজন হয় না৷''

গুরদর্শন সিংয়ের ওয়ার্কশপে হরজিন্দর সিংয়ের মোবাইল সোলার প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে৷ হরজিন্দর নিজের আইডিয়া নিয়ে তাঁর কাছে এসেছিলেন৷ আইডিয়া পছন্দ হওয়ায় তিনি সেই স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন৷ গুরদর্শন বলেন, ‘‘একটি ফার্মে পাকাপাকিভাবে এমন প্লান্ট বসালে সেটি অন্য ফার্মে নিয়ে সেচের কাজ করা যায় না৷ আমি এমনভাবে প্লান্ট তৈরি করেছি, যাতে সেটি বন্ধ করে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ এখন এটি সম্পূর্ণ সচল ও কার্যকর৷ ফলে চুরির ভয় নেই৷''

চাষে সহায়ক মোবাইল সোলার প্যানেল

গুরদর্শন সিং অনেক বছর ধরে কৃষি সরঞ্জাম তৈরির ব্যবসা করছেন৷ কিন্তু তাঁর এই উদ্ভাবন আরও মানুষের কাছে এই প্রযুক্তি পৌঁছানোর সুযোগ করে দিচ্ছে৷ তিনি বলেন, ‘‘কখনো ভাবি নি যে এত সংখ্যক মানুষ এটা দেখতে আসবেন৷ তবে জানতাম এই সমাধানসূত্র ভালো হবে৷ প্রথমে নক্সা এঁকে তারপর তৈরি করেছিলাম৷ ভালো হবে জানতাম বটে, কিন্তু ভাবতে পারি নি যে এটা এত বিখ্যাত হয়ে উঠবে৷''

এই সোলার প্লান্টের কারণে চাষি হিসেবে হরজিন্দর সিংয়ের জীবন অনেক সহজ হয়ে উঠেছে৷ এখন তিনি খামারের বিভিন্ন অংশে নির্মল জ্বালানির সাহায্যে সেচের ব্যবস্থা করতে পারেন৷ বিশাল অর্থের বিনিয়োগ সত্ত্বেও তাঁর মনে কোনো আক্ষেপ নেই৷ হরজিন্দর বলেন, ‘‘আমি ট্রাকটর ট্রলির জন্য প্রায় দেড় লাখ এবং সোলার প্যানেলের জন্য আড়াই লাখ ভারতীয় টাকা খরচ করেছিলাম৷ তবে সেই ব্যয়ের সুফল এখন ভোগ করছি৷''

সেচের কাজের শেষে সোলার প্লান্ট ঠিক যেভাবে খোলা হয়েছিল, আবার সেভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলো৷ ট্রাকটারে করে সহজেই সেটি অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব৷

এখন সেটি হরজিন্দর সিংয়ের বাসায় আনা হয়েছে, যেখানে চুরির ভয় নেই৷ ফসলে পানি দেবার প্রয়োজন পড়লেই সেটি আবার খেতে নিয়ে যাওয়া হবে৷

শর্মা/কুমার/এসবি