1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গবেষণায় নারী-পুরুষের পার্থক্য বিবেচনা করা জরুরি

৩১ মে ২০২১

অনেক বৈজ্ঞানিক গবেষণার সময় নারী-পুরুষের পার্থক্য অথবা ভিন্ন ধরনের মানুষের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা না করলে মারাত্মক ফল হতে পারে৷ এক গবেষক এমন অনেক দৃষ্টান্ত তুলে ধরে অতীতের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3uCaf
Symbolbild Quereinsteiger
ছবি: picture-alliance/imageBROKER/u. umstätter

অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে এখন শুধু মাদি কচ্ছপই দেখা যাচ্ছে৷ সে কারণে বসতিগুলির ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ পুরুষ ও মাদি কচ্ছপের সংখ্যা পরীক্ষার সময় গবেষকরা কাকতালীয়ভাবে এই আবিষ্কার করেন৷

তাহলে কি সমুদ্রেও নারী ও পুরুষের সংঘাত দেখা যাচ্ছে? সেটাই বাস্তব৷ তবে শুধু সেখানেই নয়৷ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লন্ডা স্কিবিঞ্জার মনে করেন যে, ভুল গবেষণার ফলে প্রাণ ও অর্থও নষ্ট হতে পারে৷ প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি ‘সঠিক' গবেষণার দিশা দেখাচ্ছেন৷ তার মতে, শুরু থেকেই লিঙ্গ এবং অন্যান্য বিভাজনের কথা মাথায় রাখলে তবেই কোনো গবেষণাকে সার্থক বলা চলে৷

কিন্তু এর অর্থ কী? আসলে শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জৈবিক অর্থে লিঙ্গ নির্ণয় করা হয়৷ অথচ ক্রোমোজোম, হরমোন ও জননাঙ্গ কিন্তু সব ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে নারী ও পুরুষ চিহ্নিত করতে পারে না৷ সে কারণে আধুনিক জীববিদ্যা পুরুষ ও নারীর বৈশিষ্ট্যের এক স্পেকট্রামের ভিত্তিতে বিষয়টি দেখে৷ ইংরেজি ভাষায় ‘জেন্ডার' শব্দটি সামাজিক লিঙ্গ নির্দেশ করে৷ অর্থাৎ, আরোপিত ভূমিকা, আচরণ ও পরিচয় সেখানে মূল বিষয়৷ সেগুলি সব ক্ষেত্রে জৈবিক সংজ্ঞা অনুযায়ী লিঙ্গের সঙ্গে খাপ খায় না৷

গবেষণায় নারী-পুরুষ পার্থক্য বিবেচনার গুরুত্ব

‘ইন্টারসেকশনালিটি' সেই সব বিষয় বর্ণনা করে, যেগুলি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং কিছু ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেখা যায়৷ যেমন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, জাতিগত পরিচয়, যৌন অভিমুখীতা, সামাজিক অবস্থান অথবা বয়স৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, গবেষণার ক্ষেত্রে জেন্ডারের মতো বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া কেন এত জরুরি? লন্ডা স্কিবিঞ্জার মনে করেন, ‘‘জেন্ডারের বিষয়টি বিবেচনা না করলে আমরা আবিষ্কারের সুযোগ, আরও ভালো করে কিছু করার সুযোগ হারাবো৷ কোম্পানিগুলিও নিজেদের পণ্য ভালোভাবে বিক্রি করতে পারবে না, কারণ সব রকম মানুষের জন্য সেগুলি উপযুক্ত হবে না৷''

এভাবে না ভাবলে এমনকি বিপদেরও আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করেন স্কিবিঞ্জার৷ কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসাবিদ্যার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাজারে প্রচলিত ১০টি ওষুধের ছাড়পত্র প্রত্যাহার করলো৷ প্রাণঘাতী প্রভাব এবং নারীদের উপর আটটি ওষুধের আরো মারাত্মক প্রভাব ছিল৷ এমন সব ওষুধ তৈরি করতে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করা হয়৷ অথচ বিফল হলে সেগুলি মানুষের মৃত্যু ও কষ্টের কারণ হতে পারে৷ তাই গবেষণায় ভুলভ্রান্তি সত্যি মেনে নেওয়া যায় না৷''

এমন আরো উদাহরণ রয়েছে৷ যেমন, বহুকাল ধরে লক্ষ্য করা হচ্ছে, যে গাড়ি দুর্ঘটনায় নারীরা পুরুষদের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি আহত হন৷ নতুন মডেলের গাড়ির ক্র্যাশ টেস্টের সময় শুধু পুরুষ পুতুল ব্যবহার করা হয় বলেই এমনটা ঘটে৷ সাধারণ পরীক্ষায় অন্তঃসত্ত্বা নারী, বেশি ওজনের মানুষ অথবা দুর্বল শরীরের বয়স্ক মানুষের কথা ভাবাই হয় না৷ অথচ গবেষণার সময়ে সব রকম মানুষকে বিবেচনায় রাখলে পুরুষদেরও লাভ হয়৷

অস্টেওপোরোসিস বহু কাল ধরে ‘নারীদের অসুখ' হিসেবে পরিচিত ছিল৷ এই রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা করতে দেরি হয়ে গেলে জীবনের মূল্য অনেক কমে যায়৷ সে কারণে এই রোগে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন পুরুষ৷ এমনকি এর ফলে নারীদের তুলনায় পুরুষদেরই বেশি মৃত্যু হয়৷

আনা সাকো/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য