1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ওষুধ হিসেবে সামুদ্রিক শৈবাল

১৯ এপ্রিল ২০২২

শুধু পুষ্টি নয়, ঔষধির মতো গুণও আছে পৃথিবীর আদিমতম উদ্ভিদের৷ অথচ অ্যালজি বা সামুদ্রিক শৈবাল জাপানের মতো হাতে গোনা দেশ ছাড়া খাদ্য হিসেবে প্রচলিত নয়৷ বিজ্ঞানীরা এই উদ্ভিদের নতুন গুণ আকিষ্কার করে চলেছেন৷

https://p.dw.com/p/4A59h
Albanien Forscher kämpfen gegen Verschwinden der adriatischen Meereswälder
ছবি: GENT SHKULLAKU/AFP

জার্মানির উপকূলে পানির নীচে সত্যি সম্পদ পড়ে রয়েছে৷ সেটা হলো ব্রাউন অ্যালজি বা বাদামী শেওলা৷ এর প্রায় এক হাজার আটশো প্রজাতি রয়েছে৷ ইনেস লিংকে ও তার টিমের অ্যালজি খামারের দড়ির উপর এমনই এক প্রজাতি বেড়ে উঠছে৷ মেরিন বায়োলজিস্ট হিসেবে তিনি এই ‘সুগার কেল্প'-এর বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন৷ ইনেস বলেন, ‘‘অ্যালজি সত্যি এত অসাধারণ, কারণ সেগুলি সত্যি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরানো উদ্ভিদ৷ দীর্ঘ সময় ধরে এই উদ্ভিদ কীভাবে পানির নীচে ও উপকূলের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছে, তা ভাবলে সত্যি অবাক লাগে৷ অ্যালজির মধ্যে অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের বৈচিত্রও বিস্ময়কর৷''

অ্যালজি সত্যি খনিজ পদার্থ, ভিটামিন ও ডায়েটারি ফাইবারে ভরপুর৷ সে কারণে স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবেও সেটির কদর করা হয়৷ জাপানের মতো দেশে অনেক অ্যালজি খাওয়া হয়৷ সেখানকার মানুষ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকেন৷

এই দুইয়ের মধ্যে কি কোনো সম্পর্ক রয়েছে? অ্যালজি কি ভাতের তুলনায় আরও পুষ্টি দেয় এবং ইমিউন সিস্টেম আরও শক্তিশালী করে তোলে?

অ্যালজি সত্যি স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী, তা নিয়ে এখনো যথেষ্ট গবেষণা হয় নি৷ কিন্তু অ্যালজির মধ্যে ঔষধির গুণ রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন বিজ্ঞানী সুসানে আলবান৷ কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ প্রো. সুসানে আলবান বলেন, ‘‘ব্রাউন অ্যালজির মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু পলিস্যাকারাইড, অর্থাৎ দীর্ঘ শৃঙ্খলের শর্করার অণু রয়েছে, যা অনেক পরিমাণ জৈব প্রক্রিয়া ঘটায়৷ বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ হিসেবে এর প্রয়োগ অত্যন্ত আশাপ্রদ হতে পারে৷''

জীববিজ্ঞানী আলেক্সা ক্লেটনার ও তার টিমের সঙ্গে মিলে সুসানে আলবান অ্যালজির কোষের দেয়ালে দীর্ঘ শৃঙ্খলের শর্করা অণু নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন৷ তথাকথিত এই ‘ফিউকইডেন’ ভিন্ন পরিমাণে হলেও সব ব্রাউন অ্যালজির মধ্যেই রয়েছে৷

খাবার হিসেবে শৈবাল

সেই উপাদান বয়সজনিত রোগ হিসেবে চোখের ম্যাকুলার অবক্ষয় বন্ধ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এই রোগের ফলে রেটিনার যে অংশ স্পষ্ট দৃষ্টি নিশ্চিত করে, সেই ম্যাকুলা নষ্ট হয়ে যায়৷ রোগের কারণে রেটিনার নীচে রক্তনালী ফুলেফেঁপে ওঠে৷ রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তপাত ঘটায়৷

তখন ভিসুয়াল সেলের ক্ষতি হয় ও সেগুলি মরে যায়৷ এমনকি দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারানোর আশঙ্কাও থাকে৷ কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো. আলেক্সা ক্লেটনার বলেন, ‘‘বয়সজনিত কারণে ম্যাকুলার ক্ষয়ের একাধিক রূপ রয়েছে৷ বিশেষ করে ‘আর্দ্র' রূপে বিপজ্জনক ভিইজিএফ নামের বৃদ্ধি অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ কিছু ফিউকইডেন যে সেই ভিইজিএফ দমন করতে পারে, আমরা বেশ প্রাথমিক পর্যায়ে তা দেখাতে পেরেছি৷''

কিন্তু কোন অ্যালজির কোন ফিউকইডেন সেই ক্ষতিকর বৃদ্ধি সবচেয়ে ভালো প্রতিরোধ করতে পারে? গবেষকরা সেটাই জানার চেষ্টা করছেন৷ এছাড়া তাঁরা ফিউকইডেনের আরেকটি গুণের উপর নজর রাখছেন৷ সেগুলি কোষকে ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেস' থেকে রক্ষা করে৷

আলোর কারণে চোখের উপর এমন চাপ সৃষ্টি হতে পারে৷ অতি বেগুনি রশ্মি বয়সজনিত ম্যাকুলা ক্ষয়ের প্রধান কারণ হিসেবে পরিচিত৷ যে চোখের কোষে ফিউকইডেন দেওয়া হয়েছে, সেগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস যে ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং অক্ষত থাকে, ল্যাবে তা স্পষ্ট দেখা গেছে৷ প্রো. ক্লেটনার জানান, ‘‘রোগীর যখন রোগের কোনো লক্ষণ থাকে না, তখনই ফিউকইডেন দিয়ে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়৷ সেটা আমার খুব ভালো লাগে৷ রোগী না বুঝলেও চোখের ডাক্তার সেই সমস্যা টের পেতে পারেন৷ কারণ তখনও হয়তো অবস্থা তেমন খারাপ হয়নি৷ আমরা ঠিক সেই মুহূর্তে ফিউকইডেন দিতে পারলে হয়তো দৃষ্টিশক্তি হারানো বন্ধ করতে পারি৷ সেটাই আমাদের স্বপ্ন৷''

সেই লক্ষ্যে ফিউকইডেন নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ কারণ দীর্ঘ শৃঙ্খলার শর্করা অণু নানা রকম দেখতে হতে পারে৷ অথচ অ্যালজি থেকে ওষুধ তৈরি করতে হলে অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের মান একই থাকতে হবে৷ বিশেষ এই উদ্ভিদের সম্পূর্ণ ক্ষমতা আরো ভালোভাবে বুঝতে বিজ্ঞানীদের আরও কিছু সময় লাগবে৷

বির্গিট আগুস্টিন/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য