1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফ্রান্সের উপকূল শৈবালমুক্ত করার উদ্যোগ

১০ নভেম্বর ২০২১

অ্যালজি বা সামুদ্রিক উদ্ভিদ পচে গেলে যে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হতে পারে, অনেকেই সে কথা জানেন না৷ ফ্রান্সের উপকূলে সেই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে৷

https://p.dw.com/p/42ndX
Albanien Forscher kämpfen gegen Verschwinden der adriatischen Meereswälder
ছবি: GENT SHKULLAKU/AFP

ফ্রান্সের ব্রিটানি অঞ্চলের স্যাঁ ব্রিয়কের কাছে সুন্দর খাঁড়ির আর বেশি কিছু অবশিষ্ট নেই৷ সৈকত বন্ধ রাখা হয়েছে৷ প্রায় সর্বত্র বালুর নীচে সবুজ সামুদ্রিক অ্যালজি পচছে৷ ‘স্টপ দ্য গ্রিন ফ্লাড' গোষ্ঠী সেই দুর্দশার মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে৷ গোষ্ঠীর প্রতিনিধি অঁদ্রে অলিভ্রোর হাতে সময় নেই৷ বাতাসে হাইড্রোজেন সালফাইডের মাত্রা পরিমাপ করছেন তিনি৷ বিষাক্ত এই গ্যাস দুর্গন্ধে ভরা বস্তু থেকে বালুতে মিশে যাচ্ছে৷ সেই কাজের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘'২৫ পিপিএম মাত্রা ছুঁলেই দূরে চলে যেতে হয়৷ কারণ সেটা অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ আমাকে মাস্ক পরতে হয়েছে৷ এমন ভয়ংকর পরিবেশে বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না৷ এখানে ভেসে আসার ঠিক পর অ্যালজি লেটুসের মতো দেখতে লাগে৷ মোটেই বিষাক্ত হয় না৷ কিন্তু বালুতে পড়ে থাকতে থাকতে শক্ত আস্তরণের নীচে ভেঙে গেলে এক প্রক্রিয়ায় ২০টি গ্যাস নির্গত হয়৷''

সেই অঞ্চলে চিরকাল সবুজ অ্যালজি দেখা যেত৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পানিতে নাইট্রেটের মাত্রা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় অ্যালজির পরিমাণ আর সামলানো যাচ্ছে না৷ অঁদ্রে বলেন, কম দূরত্বে শুকর, মুরগি ও অন্যান্য প্রাণীর খামারের সংখ্যা বেড়ে চলায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷

খামারের প্রাণীর বিষ্ঠা ও সার থেকে বের হওয়া নাইট্রেট নদীর মাধ্যমে সমুদ্রে এসে পড়ে৷ গোটা অঞ্চলে কৃষিকাজ বেড়ে চলায় এমনটা ঘটছে৷ খাঁড়ির অগভীর পানিতে সামুদ্রিক উদ্ভিদের সংখ্যাও বাড়ছে৷

ফ্রান্সের উপকূল কি শৈবালমুক্ত হবে?

ইয়ান ইয়োবেস আর এমন অবস্থা সহ্য করতে পারেন নি৷ খাঁড়ি থেকে দশ কিলোমিটার দূরে তাঁর খামার রয়েছে৷ তিনি পুরোপুরি অরগ্যানিক পদ্ধতিতে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন৷ গরু এখন শুধু ঘাস আর খড় খায়৷ কৃত্রিম সার একেবারেই ব্যবহার করা হয় না৷ তবে খামার ছোট বলেই এমন রূপান্তর সহজ হয়েছে৷

খামারের আকার যত বড়, দূষণের মাত্রাও তত বেশি হয় বলে ইয়ান নিশ্চিত৷ আর্থিক প্রণোদনা ছাড়া খুব বেশি পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন৷ তাঁর মতে, কিছু পরিবর্তন করলে চাষিদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে এই মুহূর্তে সেটা হচ্ছে না৷

প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে স্যাঁ-মিশেল-অঁ-গ্রেভ শহরে ঠিক সেই পরীক্ষাই চলছে৷ ৩০ বছর আগে সবুজ অ্যালজির কারণে সেখানে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল৷ মেয়র হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করে ফ্রঁসোয়া পঁশঁ চাষিদের সঙ্গে মিলে এক বোনাস সিস্টেম চালু করেছেন৷ এর আওতায় উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলেই হাতে টাকা আসছে৷ এলাকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ চাষিই সেই উদ্যোগে শামিল হচ্ছেন৷

প্রতিদিন সৈকতে অ্যালজি দূর করা হচ্ছে৷ ফলে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে৷ দশ বছর আগে বছরে প্রায় ২০,০০০ টন অ্যালজি জমা হতো৷ এখন সেই পরিমাণ অর্ধেকেরও কম হয়ে গেছে৷ স্যাঁ-মিশেল-অঁ-গ্রেভ শহরের মেয়র ফ্রঁসোয়া পঁশঁ বলেন, ‘‘আমরা চাই জায়গাটি সত্তরের দশকের মতো পরিষ্কার হয়ে উঠুক৷ তাতেই সবার উপকার হবে৷ স্বাস্থ্য, পর্যটন, জীববৈচিত্র্যের জন্য সেটা কল্যাণকর হবে৷''

অতীতে স্যাঁ-মিশেল-অঁ-গ্রেভ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সৈকতের মধ্যে পড়তো৷ এখন জায়গাটি আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে৷

‘স্টপ দ্য গ্রিন ফ্লাড' নামের সংঘের সদস্যরা অনেক দশক ধরে হস্তক্ষেপ না করায় রাজনীতি জগতের সমালোচনা করেন৷ আঞ্চলিক স্তরে সবুজ অ্যালজি থেকে সুরক্ষার একাধিক পরিকল্পনায় কোনো কাজ হয় নি বলে তারা মনে করেন৷ অঁদ্রে অলিভ্রো বলেন, ‘‘বাস্তবে পরিকল্পনার রূপায়ন ঘটে নি৷ কেউ কিছু বদলাতে চায় নি৷ কারণ সে ক্ষেত্রে কৃষিক্ষেত্র ও জনসাধারণের উপর চাপ পড়তো৷''

অঁদ্রে অবশ্য ছোট এক সাফল্য পেয়েছেন৷ ফ্রান্সের কৃষি মন্ত্রণালয় সবুজ অ্যালজির সমস্যা সরাসরি সমাধানের অঙ্গীকার করেছে৷ কোনো এক সময়ে তাঁর খাঁড়ি পুরোপুরি অ্যালজি-মুক্ত হবে বলে তিনি আশা করেন৷

ফ্রিডেরিকে হোফমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য