1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অদ্ভুত নকশার টেবিল বানান মুসারিস

২৮ জানুয়ারি ২০২১

সাইপ্রাসের ডিজাইনার স্টেলিওস মুসারিসের একেকটি মডেল সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার ইউরো দামে বিক্রি হয়৷ লন্ডনে কয়েক বছর কাজ করার পর এখন নিজ দেশ সাইপ্রাসে গিয়ে কাজ করছেন৷

https://p.dw.com/p/3oVkW
Deutschland Möbelmesse imm cologne 2020
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Meissner

মুসারিসের ‘ওয়েভ সিটি টেবিল'-এ আধুনিক শহরের স্কাইলাইন দেখা যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘একবার এক রেস্টুরেন্টে বসে আমি আঁকাআঁকি করছিলাম৷ হঠাৎ মনে হলো, আরে এটাতো দেখতে দারুণ লাগছে৷ এখানে ভবন বসালে আরো ভালো হবে৷ তারপর একটা খসড়া স্কেচ এঁকে ফেললাম, আর কম্পিউটারে থ্রিডি মডেল করলাম৷ এরপর যখন প্রথম টেবিলটা বানালাম, দেখে খুব সুন্দর লাগলো৷’’

ডিজাইনার ফার্নিচারের ফ্যানদেরও তাই মনে হয়েছে৷ ফলে ওয়েভ সিটি টেবিল মুসারিসকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছে৷ এমনকি ফ্রান্সের লুভর মিউজিয়ামেও তার একটি টেবিল প্রদর্শিত হচ্ছে৷

মুসারিসের ফার্নিচার ডিজাইনের আলাদা একটা ভাষা আছে৷

তার আরও কিছু নকশা এমন- একটি কার্টুন চরিত্র সার্ফবোর্ড ধরে আছে, আলাদিনের ম্যাজিক কার্পেটের অনুপ্রেরণা দিয়ে তৈরি চেয়ার, কিংবা টেবিল টেনিসের টেবিলের নীচে তারের জাল দিয়ে তৈরি পাহাড়, যেটা ডাইনিং টেবিল হিসেবে ব্যবহারের জন্য বানানো হয়েছে৷

নিজ দেশ সাইপ্রাসের প্রকৃতি থেকে অনুপ্রেরণা পান মুসারিস৷ তিনি বলেন, ‘‘কারণ, প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে দেখুন, দারুণ৷ আপনি যদি আরও নিখুঁতভাবে দেখেন তাহলে অনন্য প্যাটার্ন আর জ্যামিতিক আকারগুলো চোখে পড়বে৷ এই সবকিছু আমাকে অভিভূত করে, কারণ আমি মনে করে প্রকৃতি হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থপতি৷’’

আজব নকশার টেবিল চেয়ার

মুসারিস তার নকশা বাস্তবায়নে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেন৷ এর সাহায্যে তিনি দ্রুত তার মডেল তৈরি করতে পারেন৷ তার দশটি থ্রিডি প্রিন্টার আছে৷

কালো ছাড়াও কাঠ রংয়ে এই টেবিল পাওয়া যায়৷ কেউ বসলে যেন টেবিল ভেঙে না যায় তা নিশ্চিত করতে একজন মিস্ত্রির সঙ্গে অনেকদিন ধরে কাজ করেছেন মুসারিস৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্টিল ব্যবহার করি৷ স্টিলের একটা বড় পাতটাকে প্রথমে নির্দিষ্ট আকারে কেটে নেয়া হয়৷ এরপর মেশিন দিয়ে নকশা অনুযায়ী বাঁকানো হয়৷ কাজটা পারফেক্ট হতে হয়৷ তাই কাজটা সহজ নয়৷ অনেকদিন ধরে অনেকবার চেষ্টার পর এখন আমরা বিষয়টি আয়ত্ত্বে আনতে সক্ষম হয়েছি৷’’

এরপর ৮০ কেজি ওজনের স্টিল পাতের উপর পাতলা কাঠের কাভার পরানো হয়৷ বেশ পরিশ্রম আর ধৈর্য্যের কাজ৷ একটুও ভুল হলে চলবে না৷ কারণ, ভুল হলে পুরো মডেলটাই নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ তাই মিলিমিটার-বাই-মিলিমিটার কাজ করে এগিয়ে যেতে হয়৷ মুসারিস বলেন, ‘‘স্টিল টেবিলকে ভারী আর শক্ত করে৷ আর উপরে কাঠের পাত থাকার কারণে মনে হয় যেন টেবিলটা কাঠ দিয়ে তৈরি৷’’

মডেল তৈরির উপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন মুসারিস৷ লন্ডনে বিশ্বখ্যাত স্থপতি নরম্যান ফস্টারের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি৷ এরপর নিজ দেশে ফিরে যান৷ তিনি বলেন, ‘‘সাইপ্রাস একটা ছোট্ট দ্বীপ৷ এখানকার পরিবেশ খুব শান্ত, যা আমার পছন্দ৷ এখানে আসার আগে আমাকে অনেকে বলেছিলেন যে, এখানে কিছু করার মতো পরিবেশ নেই৷ অবকাঠামো ভাল না, অন্যান্য সীমাবদ্ধতাও আছে৷ কিন্তু আমার মনে হয়েছে, আপনি যদি সত্যিই কিছু করতে চান তাহলে করতে পারবেন৷ আপনাকে শুধু উপায়টা খুঁজে নিতে হবে৷’’

এবং তার সফলতা তাকে ঠিক বলে প্রমাণ করছে৷ কারণ তার একেকটি মডেল সর্বোচ্চ দাম ৩৫ হাজার ইউরো দামে বিক্রি হয়৷

রেগিনা নিডেনসু/জেডএইচ