1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মস্তিষ্কের উপর চাপ সৃষ্টি করছে মাল্টিটাস্কিং

১৫ এপ্রিল ২০১৯

ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে আমাদের ব্যস্ততার শেষ নেই৷ সেইসঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের ‘মাল্টিটাস্কিং' বা একসঙ্গে একাধিক কাজ সারার চাপ তো রয়েছেই৷ আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে তা সামাল দিচ্ছে, বিজ্ঞানীরা তা জানার চেষ্টা করছেন৷

https://p.dw.com/p/3GlgM
Young woman multitasking (picture alliance / PhotoAlto)
ছবি: picture-alliance/PhotoAlto

অতীতে মানুষের মস্তিষ্ক খেলাচ্ছলে বেশিরভাগ উদ্দীপনায় সাড়া দিতে পারতো৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে  মস্তিষ্কের সামনে চ্যালেঞ্জ বেড়ে চলেছে৷ আগে শুধু ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে আমরা আরও ঘনঘন তথ্য পেতাম৷

 আর আজ? আজকের ডিজিটাল জগতে সবকিছু ও সবাই এক নেটওয়ার্কের অংশ হয়ে পড়েছে বলে মনে হয়৷ ফলে আমাদের মস্তিষ্ককে অবিরাম উদ্দীপনার ঢেউ সামলাতে হচ্ছে৷ এমন পরিস্থিতি কিন্তু মোটেই আদর্শ নয়৷ স্নায়ুবিজ্ঞানী ইয়ানা ফান্ডাকোভা বলেন, ‘‘স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে একটি উদ্দীপক আমাদের কাছে আসে৷ ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে এক প্রক্রিয়া চলে৷ তারপর পরবর্তী উদ্দীপকের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হয়৷''

কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ সেই সুযোগ পান না৷ তাদের অবিরাম তথ্যের বন্যার মুখে পড়তে হয় এবং অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কাজ সারতে হয়৷ মস্তিষ্ক কীভাবে এই চাপ সামলায়, স্নায়ুবিজ্ঞানী হিসেবে ইয়ানা ফান্ডাকোভা তা জানতে চান৷

তিনি স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছেন৷ তাঁদের সামনে কিছু কঠিন দায়িত্ব ছিল৷ পরীক্ষার সময় তাদের এই সব দানবের মধ্যে ৯টি পার্থক্য শনাক্ত করতে হয়েছিল৷ একই সময় বিভিন্ন বোতাম টিপে সঠিক বৈশিষ্ট্য বেছে নিতে হয়েছিল৷ কঠিন এই কাজের সময় গভীর মনোযোগের প্রয়োজন৷

এর মাধ্যমে ইয়ানা এমন এক পরিস্থিতির নকল করেছেন, যা আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততায় ভরা জীবনযাত্রায় দেখা যায়৷ আমাদের পর পর ও দ্রুত বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়৷

স্বেচ্ছাসেবীরা কত দ্রুত সহজ কাজগুলি করতে পারেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সবার আগে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ তারপর তাঁদের আরও দ্রুত গতিতে আকার-আকৃতি, রং ও নক্সার প্রতি নজর দিতে হয়৷ ইয়ানা ফান্ডাকোভা বলেন, ‘‘এগুলি এমন পরিস্থিতি, যখন মস্তিষ্ককে বিভিন্ন কাজ আলাদা করতে হয়৷ এ সব কাজ সাধারণত আমরা অবচেতন মনেই করি৷ কিন্তু নেপথ্যে আমাদের  মস্তিষ্ক কঠিন পরিশ্রম করে৷''

ইয়ানা পরীক্ষার সময় স্ক্যানারের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবীদের উপর নজর রাখেন৷ তিনি সরাসরি তাঁদের মস্তিষ্কে উঁকি মেরে দেখতে চান, মস্তিষ্কের কোন কোন অংশ সক্রিয় হয়ে উঠছে৷ যেমন খুব জটিল কাজের সময় ফ্রন্টাল লোব-এর প্রয়োজন পড়ে৷ ইয়ানা বলেন, ‘‘মস্তিষ্কের এই অংশ ঠিক কপালের পেছনে রয়েছে৷ কোন কাজের জন্য কতটা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে, এই অংশই তা স্থির করে দেয়৷ যে সব পরিস্থিতিতে আমাদের একই সময়ে একাধিক কাজ করতে হয়, তখন নির্বিঘ্নে কাজগুলি সম্পন্ন করতে মস্তিষ্কের এই অংশকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়৷''

শিশু ও কিশোররা এমন কাজ কীভাবে সামলায়? তারা এমন এক জগতে জন্মগ্রহণ করেছে, যেখানে প্রতিদিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নানা কাজ করতে হয়৷ তাছাড়া নতুন প্রযুক্তি তাদের কাছে জলভাত৷ তারা কি প্রাপ্তবয়স্ক স্বেচ্ছাসেবীদের তুলনায় আরও দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারে? ইয়ানা ফান্ডাকোভা মনে করেন, ‘‘আমাদের ও অন্যান্য বিভিন্ন গবেষণার ফল বলছে, যে এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের সাড়া দিতে একটু বেশি সময় লাগে৷ তারা বড়দের তুলনায় সত্যি ঘনঘন ভুল করে৷''

দ্রুত ও পর পর কাজ বদল করলে ফ্রন্টাল লোব বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বাম দিক ও শিশুদের ক্ষেত্রে ডান দিক সেই কাজ করে৷ ২০ বছর বয়স পর্যন্ত ফ্রন্টাল লোব-এর বিকাশ চালু থাকায় শিশুরা বড়দের মতো এত দ্রুত বিভিন্ন ধরনের কাজ সামলাতে পারে না৷

বেড়ে চলা চাপ  মস্তিষ্কের বিকাশের উপর ঠিক কতটা প্রভাব ফেলছে, তা জানতে কমপক্ষে ১০ বছর সময় লাগবে৷ স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের সঙ্গে বেড়ে ওঠা প্রজন্ম প্রাপ্তবয়স্ক হলে সেই রহস্যের সমাধান হতে পারে৷

বারবারা পেটারমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান