1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাল্টিটাস্কিং স্মৃতির জন্য মোটেই ভালো নয়

মার্টিন রিবে/এসবি১ ডিসেম্বর ২০১৪

মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ফেসবুক চ্যাট, হাতে রান্নার খুন্তি – এমন দৃশ্য তেমন বিরল নয়৷ কিন্তু এমন ‘মাল্টিটাস্কিং’ নাকি স্মৃতিভাণ্ডারের জন্য মোটেই ভালো নয়৷

https://p.dw.com/p/1DxQe
Symbolbild - Multitasking
ছবি: picture-alliance/ANP

বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে শর্ট টার্ম ও লং টার্ম মেমারি-র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা গেছে৷

ব্রাউনশোয়াইগ শহরের নিউরো বায়োলজিস্ট অধ্যাপক মার্টিন কর্টে মস্তিষ্ক গবেষক৷ নতুন কিছু শিখলে তা ‘লং টার্ম মেমরি' বা স্মৃতিভাণ্ডারে রাখা এত কঠিন হয় কেন, নিজের টিমের সঙ্গে তা জানার চেষ্টা করছেন তিনি৷ মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলি প্রোটিন অণু পেতে প্রতিযোগিতার দৌড়ে নামে৷ দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষার জন্য এই প্রোটিন জরুরি৷ অধ্যাপক কর্টে বলেন, ‘‘এর কারণ এক আণবিক প্রাচীর, যা স্থির করে দেয় ঠিক কতটা তথ্য শর্ট টার্ম মেমরি থেকে লং টার্ম মেমরি-তে পাঠানো সম্ভব৷''

এই পরীক্ষার জন্য গবেষকরা ইঁদুরের মস্তিষ্ক কেটে ভাগ করেছেন৷ তাঁদের মূল আগ্রহ ‘হিপোক্যাম্পাস'-কে ঘিরে, মস্তিষ্কের যে অংশ তথ্য গ্রহণ করার জন্য অত্যন্ত জরুরি৷ এই পরীক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হয়৷ পরীক্ষার জন্য যে ইঁদুর মারা হয়েছে, তার মস্তিষ্কের কোষ জীবন্ত রাখতে হবে৷ মস্তিষ্কের পরিবেশের নকল করে, এমন এক বিশেষ তরল দ্রব্য সেই কাজ করে৷

মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ মস্তিষ্কের অন্যান্য কোষের সঙ্গে যুক্ত৷ তাদের মধ্যে ১০,০০০ পর্যন্ত যোগাযোগ সম্ভব৷ মস্তিষ্কের কোষগুলির মধ্যে এই সংযোগকে ‘সিন্যাপ্স' বলা হয়৷ মস্তিষ্কের এই অংশেই শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়া চলে৷ অধ্যাপক কর্টে বলেন, ‘‘এখানে আমরা মস্তিষ্কের কোষগুলির মধ্যে সংযোগের অংশ দেখতে পাচ্ছি, যাকে সিন্যাপ্স বলা হয়৷ এখানে তথ্য জমা রাখা হয় সিন্যাপ্স-কে আরও শক্তিশালী করে তুলে৷ এটা করা যায় আপস্ট্রিম ও ডাউনস্ট্রিম কোষ একই সঙ্গে সক্রিয় হলে৷''

দুটিরই সিন্যাপ্স সক্রিয় করলে কোষে ন্যাট্রিয়াম প্রবেশ করে৷ ক্যালসিয়ামও ঢোকে, যার ফলে সিন্যাপ্সের মধ্যে প্রোটিনের নতুন অণু তৈরি হয়৷ স্মৃতির চিহ্ন অবশ্য তখনই অক্ষত থাকে, যদি হুবহু একই সিন্যাপ্স-এর মধ্যে তাকে আরও স্টিমুলেট করা হয়৷ তখন সেই স্মৃতি লং টার্ম মেমরি-তে চলে যায়৷

ইঁদুরের মস্তিষ্ক কেটে বিজ্ঞানীরা ঠিক সেটাই দেখাতে পেরেছেন৷ ইলেকট্রোডের মাধ্যমে তাতে ইলেকট্রিক স্টিমুলেশন সৃষ্টি করা হয়েছিল৷ একই সিন্যাপ্স বার বার স্টিমুলেট করায় স্মৃতির চিহ্ন আরও স্থিতিশীল হয়ে ওঠে৷ কিন্তু মস্তিষ্কের কোনো কোষের আলাদা আলাদা সিন্যাপ্স স্টিমুলেট করা হলে আগের স্মৃতির চিহ্ন মুছে যেতে পারে৷ অধ্যাপক কর্টে বলেন, ‘‘এখানে আমরা এমন সিন্যাপ্স দেখতে পাচ্ছি, যা শিক্ষার স্টিমুলেশনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হয়েছে৷ শিক্ষার স্টিমুলেশনের মাধ্যমে নতুন প্রোটিন মলিকিউল তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যে যদি নতুন করে কিছু শেখা হয় বা মনোযোগ অন্য দিকে চলে যায়, তখন কিন্তু আগের স্মৃতি মুছে যেতে পারে৷ তখন প্রোটিন মলিকিউল আর এই সিন্যাপ্সে থাকবে না, নতুন চিহ্নের দিকে চলে যাবে৷ সেটি আগেরটির তুলনায় অনেক দুর্বল হলেও প্রোটিন মলিকিউল চুরি করে শক্তিশালী হয়ে উঠবে৷ প্রথম শিক্ষা তখন সরে যাবে, দ্বিতীয়টি মনে দাগ কাটবে৷''

এই প্রক্রিয়া শিক্ষার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে৷ অর্থাৎ শিক্ষার যে সব স্টিমুলেশন একই সিন্যাপ্সে এসে পরস্পরকে শক্তিশালী করে তোলে, সেগুলিই লং টার্ম মেমারি-তে স্থান পেতে পারে৷ তাই ভালো করে শেখার একটা কায়দা রয়েছে৷ অধ্যাপক কর্টে বলেন, ‘‘আমাদের পরীক্ষা থেকে দেখা যাচ্ছে, মাল্টিটাস্কিং এড়িয়ে চলাই ভালো৷ কারণ সে ক্ষেত্রে কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এমন সব সিন্যাপ্স শক্তিশালী করে তোলা হয়, যা হয়ত আমরা চাই না৷ দ্বিতীয়ত শিক্ষার সময় কম রাখা উচিত, যাতে শেষের অংশ শুরুর অংশ মুছে না দেয়৷''

কোষের স্তরে এই পরীক্ষাগুলি মনস্তত্ত্ববিদদের বক্তব্যকেই সমর্থন করে৷ তাঁরা বহুকাল আগেই বুঝতে পেরেছিলেন মাল্টিটাস্কিং ক্ষতিকর হতে পারে এবং ছোট ছোট লার্নিং ইউনিট মনে রাখা অনেক সহজ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান