পোল্যান্ডের ওয়ারশতে মাইক্রো-অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বাড়ছে
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪নগর পরিকল্পনাবিদেরা এটি সমর্থন করলেও সমালোচকেরা বলছেন, এটি পোল্যান্ডের ভবন নীতিমালার লঙ্ঘন৷
এমনই এক অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন উদ্ভিদবিজ্ঞানী আর্টুর সাগাইয়েভস্কি৷ তার অ্যাপার্টমেন্টের সাজসজ্জা দেখতে চতুর্দশ লুইয়ের প্রাসাদের মতো হলেও এর আকার মাত্র ১৮ বর্গমিটার৷
ওয়ারশতে বর্তমানে মিনিমালিস্ট বসবাসের ট্রেন্ড চলছে৷ শহরের কেন্দ্রের কাছে অ্যাপার্টমেন্ট টাওয়ার গড়ে উঠছে, যেগুলো লিটল হংকং বা চায়নাটাউন নামে পরিচিত হয়ে উঠছে৷
টোমাস ওসেভস্কি ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থপতির অধ্যাপক৷ মিনিমালিজমই ভবিষ্যৎ বলে তিনি মনে করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আপনি যখন ভেবে দেখবেন, আপনার বসবাসের জন্য, ঘুমানোর জন্য কত বড় বাসা প্রয়োজন, তখন আপনার মনে হবে, আপনার বড় অ্যাপার্টমেন্টের প্রয়োজন নেই৷''
আর্টুর সাগাইয়েভস্কি তার সঙ্গে একমত৷ এই উদ্ভিদবিজ্ঞানী অনেক দেশ ঘুরেছেন৷ এখন এই ছোট অ্যাপার্টমেন্টই তার বাড়ি৷ তিনি বলেন, ‘‘এই অ্যাপার্টমেন্ট আমার জন্য যথেষ্ট৷ আমি সবসময় নিভৃতচারী, তাই এই ছোট ও শান্ত জায়গাটাই আমার বসবাসের জন্য ঠিক আছে৷''
আর্টুর যেখানে থাকেন সেই টাওয়ারে কয়েকশ প্রতিবেশী আছেন৷ তাদের এখানে থাকতে কেমন লাগে? আমরা তাদের কাছে এই বিষয়টি জানতে চাই৷ সেজন্য প্রায় প্রতিটি তলায় কয়েক ডজন অ্যাপার্টমেন্টে আমরা চেষ্টা করেছি- কিন্তু কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে চান না৷
এতে অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই, কারণ এমন মাইক্রো-অ্যাপার্টমেন্ট আসলে অবৈধ৷
ওয়ারশর ব্যাংকিং খাতে ক্রেডিট অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করা আদ্রিয়ান ওয়াজভস্কি বলেন, ‘‘অ্যাপার্টেমেন্টের আকার অন্তত ২৫ বর্গমিটার হতে হবে৷''
মাইক্রো-অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা বাড়ছে, যদিও আকার যতটুকু হওয়া প্রয়োজন তার চেয়েও ছোট এগুলো- আর এটাই কৌশল৷
আদ্রিয়ান ওয়াজভস্কি বলেন, ‘‘ডেভেলপাররা যখন নির্দিষ্ট আকারের চেয়ে ছোট কিছু বানান তখন সেগুলো অ্যাপার্টমেন্ট নয়, বাণিজ্যিক স্পেস হিসেবে বিবেচিত হয়৷''
বিনিয়োগকারীরা এগুলো কিনে হাজার টাকায় ভাড়া দিয়ে দেন৷ তাই এটি তাদের কাছে আকর্ষণীয়৷ এলিভেটরে এগুলো অফিস হিসেবে তালিকাভুক্ত৷ সে কারণে ভবনের নিয়মনীতি মানতে হয় না৷ কমসময়ে, অল্প সময়ের জন্য অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া দেওয়া যায়৷
পোল্যান্ডের হিসেবে বিষয়টা একটু ব্যতিক্রম, কারণ, সে দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে৷
স্থপতির অধ্যাপক টোমাস ওসেভস্কি বলেন, ‘‘এটা আপনার নিজস্ব বাড়ি হতে হবে না, এটা আপনার সারা জীবনের জন্য হতে হবে না- আপনি এটা ভাড়া নিতে পারেন৷ আপনি আজ এটা নিতে পারেন, পরের বছর অন্য জায়গায় যেতে পারেন৷ আজ আপনি ওয়ারশতে থাকতে পারেন, কাল হয়ত মিউনিখ, আর দুই বছর পর আপনি হংকং বা দুবাই যেতে পারেন৷''
তবে আর্টুর দ্য ফার্স্ট তার মিনি-ভার্সেইতে অনেকদিন বাস করার পরিকল্পনা করছেন- শিগগিরই এই বাসা ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন না৷
আক্সেল রোভোল্ট/জেডএইচ