1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষমা চেয়ে বড় হয় জার্মানি

২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আবার ক্ষমা চেয়েছে জার্মানি৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৬০ লাখ মানুষ হত্যা যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, সেখানে গিয়ে এবার ক্ষমা চেয়েছেন জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷ অতীতের ভুল, অপরাধ যা-ই বলি না কেন, স্বীকার করে ক্ষমা চাইলে কি কেউ ছোট হয়?

https://p.dw.com/p/3OsgU
Polen Gedenken Zweiter Weltkrieg Warschau | Frank-Walter Steinmeier
ছবি: AFP/J. Skarzynski

হয় না৷ বরং এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয় যা শান্তির আলোকিত পথে যাত্রা শুরু করে৷ জার্মানিকে এই পথে নিয়েছিলেন ভিলি ব্রান্ট৷ সাবেক এই জার্মান চ্যান্সেলর পোল্যান্ড গিয়ে অপরাধী যেভাবে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে, অনেকটা সেভাবেই হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চেয়েছিলেন পোলিশদের কাছে৷ শুরুতে সবাই খুব খোলা মনে তাঁকে বাহবা দিতে পারেননি৷ কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে জার্মানি তাঁর দেখানো পথ ধরেই এগিয়েছে৷ সরকার এসেছে গিয়েছে, নতুন নতুন চ্যান্সেলর এসেছেন, কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বের পাপমোচনের সদিচ্ছা থেকে একচুলও সরেনি জার্মানি৷

এবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ৮০ বছর পূর্তিতেও পোল্যান্ডে গিয়েছেন ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ হিটলারের নাৎসিবাহিনীর অপকর্মের কথা অসীম লজ্জা আর গ্লানি নিয়ে স্মরণ করে বলেছেন, ‘‘আমার দেশ এমন ভয়ঙ্কর এক যুদ্ধ বাধিয়েছিল যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ৷ যুদ্ধ করে অপরাধ করেছিল জার্মানি৷ পোলিশদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, পোল্যান্ডকে যে আঘাত জার্মানি দিয়েছিল, তা আমরা ভুলবো না৷ পোল্যান্ডের পরিবারগুলোকে যে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়ছিল, জনগণ যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল, তা আমরা ভুলবো না৷''

১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের ভিয়েলুইন শহরে বোমা মেরে বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিল জার্মান বাহিনী৷ ৮০ বছর পরও যেভাবে সেইদিনটিকে স্মরণ করে সারা বিশ্বের কাছে লজ্জায় নত হয়, ক্ষমা চায়, তাতে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না জার্মানির৷ সমৃদ্ধিতে ভাটা পড়ছে না৷ ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে না৷এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলেই হয়ত পৃথিবীতে হানাহানি, বৈরিতা কমে যেতো৷

মানুষ হিসেবে, একজন বাংলাদেশি হিসেবে এমন এক সময়ে জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর ভিলি ব্রান্টকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি৷ তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ নামের দেশটির অভ্যুদয়ের একটা সম্পর্ক রয়েছে৷ ব্রান্ট নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯৭১ সালে৷ ১০ ডিসেম্বর পুরস্কার তুলে দেয়া হয় তাঁর হাতে৷ বাংলাদেশ তখন স্বাধীন হওয়ার অপেক্ষায়৷ অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরস্কার নেয়ার সময় ব্রান্ট বলেছিলেন, ‘‘সুধীবৃন্দ, আপনারা যখন আমার হাতে এবারের শান্তি পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন ঠিক তখন যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি নতুন দেশ জন্ম নিচ্ছে, তার নাম বাংলাদেশ৷'' 

Ashish Chakraborty
আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/T. Mehedi

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজের দেশের অপকর্মের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে, ইউরোপে ঐক্য স্থাপনে ভূমিকা রেখে শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন ভিলি ব্রান্ট৷ পুরস্কার গ্রহণের সময় শুধু মুখের কথায় মানুষের অধিকার আদায়ের অধিকারকে সম্মান জানাননি, পরবর্তীতে নিজের দেশের কলঙ্কজনক অতীতকে স্মরণ করে ক্ষমা চেয়েছেন আর এভাবেই নিজেকে, নিজের দেশকে তুলে নিয়েছেন অন্য উচ্চতায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য