স্টান্ট পাইলটের কেরামতি
২ ডিসেম্বর ২০১৬ঘণ্টায় ৪২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিবেগে ফ্রান্সের নিকোলা ইভানফ আকাশ-বাতাস ভেদ করে উড়ে চলেন৷ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সত্যি একেবারে আলাদা জগত৷ পাহাড়, হ্রদ, গাছের উপর উড়লে উপর থেকে সব দেখা যায়৷ সত্যি অসাধারণ৷''
নিকোলা ইভানফ বিশ্বের সেরা স্টান্ট পাইলটদের অন্যতম৷ রুশ বংশোদ্ভূত এই মানুষটি কর্সিকা দ্বীপে জন্মেছেন ও বড় হয়েছেন৷ তাই তাঁর ডাকনাম ‘দ্রুত কর্সিকান'৷ আকাশে ওড়ার আকর্ষণ তাঁর চিরকাল ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রজীবনে আমি যাত্রীবাহী বিমানের পাইলট হতে চেয়েছিলাম৷ তারপর প্রশিক্ষণের সময় এয়ারোব্যাটিক কায়দা শিখলাম৷ মজা নিতেই সেটা করতাম৷ তারপর এয়ারোব্যাটিক কনস্ট্রাকটর টিচার হিসেবে চাকরি পেলাম৷ তারপর এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিলাম৷ অতএব, না চাইলেও ধাপে ধাপে এদিকে এগিয়ে গেলাম৷''
২০০৩ সালে ‘এয়ার রেস' নামে বিশ্বের দ্রুততম স্টান্ট উড়াল প্রতিযোগিতার সূচনাপর্ব থেকেই নিকোলা অংশ নিয়ে আসছেন৷ বিশেষ এই ক্যাটাগরিতে যত দ্রুত সম্ভব নির্দিষ্ট ‘দ্বার'-এর মধ্য দিয়ে পাক খেয়ে যেতে হয়৷ ৮টির মধ্যে ষষ্ঠ পর্যায় বার্লিন শহরের কাছে আয়োজিত হয়েছিল৷
প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতায় স্টান্ট পাইলটরা পয়েন্ট অর্জন করেন৷ শেষে যিনি সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট পান, তিনিই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন৷ এমন উড়ালের সময় শরীরের উপর অত্যন্ত চাপ পড়ে৷ তা সত্ত্বেও বয়সের কোনো সীমা স্থির করা হয় নি৷ কিন্তু বিষয়টি শুধু মজার নয়, অনেক টাকাপয়সাও এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে৷ বিজ্ঞাপন বাবদ আয়ের অঙ্ক স্টান্ট বিশ্বকাপে পাওয়া স্থানের উপরও নির্ভর করে৷
মাটির কাছাকাছি লুপিং বা পাক খাওয়া, ঝাঁপ মারা – উত্তেজনা ও রোমাঞ্চের শেষ নেই৷ তিনি ভেতরে স্নায়ুর চাপ সত্ত্বেও বাইরে নিজেকে খোশমেজাজি ও শান্ত দেখানোর চেষ্টা করেন৷
স্টান্ট ফ্লাইয়িংয়ের ক্ষেত্রে স্নায়ুর চাপ ও ঝুঁকি কম নয়৷ তবে নিকোলা ইভানফ তার পরোয়া করেন না৷ উড়তে পারলেই তিনি খুশি৷ তবে ওড়ার সময় তিনি নিসর্গ উপভোগ করতে পারেন কি না, সেই রহস্য তিনি ফাঁস করেন না৷
কিয়র্স্টিন শুমান/এসবি