1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিউজিয়ামের দর্শকই যখন ছবির বিষয়বস্তু

১৫ এপ্রিল ২০২১

চিত্রকর্ম দেখতে মিউজিয়ামে যাবার সময়ে নিজের সাজগোজ নিয়ে মাথা ঘামান কি? এক ফটোগ্রাফার আপনার ছবি দেখার সময় ফটো তোলার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকলে সে কথা তো ভাবতেই হয়!

https://p.dw.com/p/3s2WD
DW Euromaxx | People matching Artworks
ছবি: DW

দর্শক যেন শিল্পকর্মেরই অংশ৷ ছবির সঙ্গে দর্শকের মিল চোখে পড়ার মতো৷ ছবির মোটিফ সাজানো মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু আকস্মিকভাবে সেই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছিল৷

স্টেফান ড্রাশান সেই সব মুহূর্ত আবিষ্কার করতে ভালোবাসেন৷ দিনে এক থেকে পাঁচটি ভালো ছবি তোলাই তাঁর লক্ষ্য৷ মিউজিয়ামের প্রবেশপথেই অস্ট্রিয়ার এই আলোকচিত্রী দর্শকদের চুলের বাহার ও বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করেন৷ নিজের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে স্টেফান বলেন, ‘‘আমি আসলে আবিষ্কার করতে চাই, সেইসঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় তুলে ধরতে চাই৷ আমি কী দেখতে পাচ্ছি, কতটা দেখতে পাচ্ছি, কোন উপমা সৃষ্টি করতে পারি? আমার মতে, গোটা জীবনই আসলে আবিষ্কারের লক্ষ্যে ভ্রমণের মতো৷''

যে কারণে মিউজিয়াম দেখার আগে নিজেকেও দেখবেন

ইউরোপের বড় মিউজিয়ামগুলি স্টেফান ড্রাশানের দ্বিতীয় বাসার মতো৷ আজ তিনি জার্মানির পট্সডাম শহরের বার্বেরিনি মিউজিয়ামে এসে ‘পিপল ম্যাচিং আর্টওয়ার্কস' সিরিজের জন্য ছবি তুলছেন৷ ২০১৯ সালেই তার ছবির দ্বিতীয় বইটি প্রকাশিত হয়৷ ব্লগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রদর্শনীর কারণে আন্তর্জাতিক স্তরেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন৷

কখনো চুলের বিন্যাস, কখনো বা নক্সা, রং অথবা শরীরের ভঙ্গির ভিত্তিতে তিনি মানুষ ও শিল্পের মধ্যে সংযোগ খুঁজে পান৷ একবার মিউজিয়ামে প্রবেশের পাঁচ মিনিট পরেই তিনি প্রথম ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেন৷ স্টেফান ড্রাশান বলেন, ‘‘ঘটনা ঘটতে হবে এবং তার মধ্যে একটা কাব্যিক শান্তি থাকতে হবে৷ না ধরে রাখলে যে কোনো মুহূর্ত নিমেষেই শেষ হয়ে যায়৷ আমার জুতো প্রায় কোনো শব্দ করে না৷ ফ্যাশনদূরস্ত জুতো পরলে ভালই লাগতো৷ কিন্তু এর থেকে নিঃশব্দ জুতো আর পাই নি৷''

একটি ফটোর জন্য তিনি প্রায় ১১ সেকেন্ড সময় পান৷ কোনো শিল্পকর্মের সামনে দর্শকের গড় সময়ও ঠিক তাই৷ ছবির মাধ্যমে আলোকচিত্রী অতীতকে বর্তমানে নিয়ে আসেন৷ ইটালির বারোক যুগের চিত্রশিল্পী কার্ভাজোর একটি ছবির ফটো সম্পর্কে তিনি খুবই সন্তুষ্ট৷

নিজের অজান্তেই দর্শক শিল্পকর্মের অংশ হয়ে ওঠেন৷ অন্য অনেক ফটো শিল্পীর মতো তিনি ছবি তোলার পর ঘষামাজার বিষয়টিকে তেমন আমল দেন না৷ নিজের ল্যাপটপে বড়জোর ছবি কিছুটা কাটছাঁট করেন৷ স্টেফান বলেন, ‘‘আমি কখনো কোনো ফটোর পেছনে এক মিনিটের বেশি সময় নষ্ট করি না৷ ফটোশপের মাধ্যমে রদবদল অথবা আগে থেকে পরিকল্পনা করা যায় বটে, কিন্তু আমি খাঁটি মুহূর্ত চাই৷''

বহু বছর ধরে মানুষ ও বস্তুর মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে চলেছেন এই শিল্পী৷ নিজের পেশার জন্য  প্রথাগত শিক্ষা কখনো নেন নি৷ তাঁর অন্য একটি সিরিজের নাম ‘কার্স ম্যাচিং হোম'৷ তাতে গাড়ি ও বাড়ির মধ্যে মিল তুলে ধরা হয়েছে৷ ‘কাপল্স ম্যাচিং' সিরিজে ঘনিষ্ঠ দম্পতিদের ছবি দেখা যায়৷ কিছু ছবি তিনি দুই বছর ধরে নিজের কাছে রেখে তারপর প্রকাশ করেন৷ স্টেফানের মতে, ‘‘ফটোগ্রাফি, অথবা শুধু আমার তোলা ছবি আসলে জীবনের প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ হওয়া উচিত৷ তার মধ্যে প্যাশন বা আবেগের ছাপ থাকতে হবে৷ মানুষ অথবা শিল্পকর্মকে কখনো হেয় করে তুলে ধরা হয় নি৷ জীবন অনুভূতির আতসবাজির মতো হতে পারে৷''

নতুন শিল্পকর্মের অংশ হতে চাইলে পরের বার মিউজিয়ামে যাবার সময়ে জামাকাপড় ও চুলের বিন্যাসের কথা ভেবে বাসা থেকে বের হতে হবে৷

ক্রিস্টিনা লাউবে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য