মুশাররফের দেহ ৩দিন ঝুলিয়ে রাখার আদেশ
২০ ডিসেম্বর ২০১৯পেশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ গত মঙ্গলবার অভিনব এ আদেশ দেয়ার পর পাকিস্তান জুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে৷
২০০৭ সালের নভেম্বরে অবৈধভাবে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারি করায় রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মুশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়৷ স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা মুশাররফ এখন দুবাইতে বসবাস করছেন৷ তাই রায় ঘোষণার পর জনমনে প্রশ্ন ছিল কিভাবে তা কার্যকর হবে বা আদৌ রায় বাস্তবায়ন সম্ভব কিনা৷
বৃহস্পতিবার ১৬৭ পাতার ওই রায়ের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে ওইসব প্রশ্নের উত্তর থাকলেও শুরু হয় নতুন বিতর্ক৷
কারণ, রায়ের এক অংশে অভিনব এক আদেশ দেয়া হয়েছে৷ বলা হয়, যদি মুশাররফকে জীবিত ধরা সম্ভব না হয় বা সাজা কার্যকরের আগেই তার মৃত্যু হয় সেক্ষেত্রে ‘মৃতদেহ রাজধানী ইসলামাবাদের ডি-চক-এ নিয়ে গিয়ে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখা (উচিত) হবে৷'' দেশটির পার্লামেন্টের বাইরেই ডি-চক এলাকা৷
একইসঙ্গে আদালত দেশটির সবগুলো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে চিকিৎসার নামে দুবাইয়ে থাকা মুশাররফকে গ্রেপ্তার করার সব রকমের চেষ্টা চালানোর নির্দেশও দিয়েছে৷
মৃতদেহ তিনদিন ঝুলিয়ে রাখার আদেশ প্রতীকী হলেও এটা সম্পূর্ণরূপে সংবিধানবিরোধী বলছেন আইন বিশেষজ্ঞরা৷ মুশাররফের আইনজীবীরা আগেই এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার ঘোষণা দিয়েছেন৷
এবার পাকিস্তান সরকারও বিতর্কের জন্ম দেয়া এই রায় নিয়ে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের' কাছে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে৷
বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা পোশোয়ার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ‘মানসিকভাবে অক্ষম' ঘোষণা করে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার আবেদন করবেন৷
পাকিস্তানের আইনানুযায়ী একমাত্র সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলই হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের কোনো বিচারপতিকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে পারে৷
পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনীও এ রায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে৷ সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, ‘‘এই রায় সব ধরনের মানবতা, ধর্ম এবং সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থি৷''
মুশাররফ নিজেও দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে এই রায় ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে' দেয়া হয়েছে৷
এসএনএল/এসিবি (রয়টার্স)