ফ্রান্সে আন্দোলন, বিমানবন্দর নির্মাণ বন্ধ
২৭ জানুয়ারি ২০১৮এ ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী৷ আন্দোলনকারীদের শত শত কর্মী উদযাপন করছেন তাদের এ ‘বিজয়'৷ আসছে ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ তাঁরা একটি বিজয় উদযাপনের পার্টিও করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন৷
তবে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা রাস্তা বন্ধ করে গড়ে তোলা অস্থায়ী ক্যাম্প সরিয়ে না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন৷
যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটছে, পশ্চিম ফ্রান্সের সেই নঁতের মেয়র ইয়োহানা ওঁলাদ অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তে খুশি নন৷ তিনি বলেন, জাতীয় সরকার ব্ল্যাকমেইল ও হুমকির কাছে নতজানু হয়ে গেছে৷ এর আগে প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ বলেন, ‘‘নত্রদাম-দে-লন্দ প্রকল্প বাতিল করা হবে৷ এই প্রকল্প নিয়ে যা হয়েছে তাতে এটাই যৌক্তিক সিদ্ধান্ত৷''
তিনি মনে করেন, ৫০ বছর আগে হাতে নেয়া প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক অনেক আগেই শেষ হওয়া উচিত ছিল৷
বছরের পর বছর ধরে আন্দোলনকারীরা রাস্তা দখল করে যে ক্যাম্প তৈরি করেছে, তা তুলে দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই এ এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা দখলে রাখা এলাকাতে সামাজিক, পরিবেশগত ও কৃষিনির্ভর পরীক্ষামূলক কর্মকাণ্ড চালানো যেতে পারে বলে দাবি করেন৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দর নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা রীতিমতো কঠিন ছিল৷ কারণ, এটি নির্মাণের পক্ষে ও বিপক্ষে দু'রকমই মত আছে৷ কিন্তু আন্দোলনকারীদের উত্তেজনা প্রশমন করতে এই সিদ্ধান্ত দরকার ছিল৷
‘‘গত দশ বছরে এখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছে, তার শেষ হওয়া দরকার৷'' বলেন তিনি৷
যাঁরা এই বিমানবন্দরের পক্ষে, তাঁদের যুক্তি, সেই অঞ্চলের অর্থনৈতিকে গতিশীল রাখতে বড় বিমানবন্দর দরকার৷ আর বিরোধীরা বলছেন, এটার কোনো প্রয়োজন নেই৷ এতে বৈশ্বিকীকরণের অপব্যবহার হবে৷
প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জানান, সে অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে নঁতে ও রেন বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হবে৷
ফ্রান্সের পশ্চিমাঞ্চলের এই বিমানবন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত হয় ৫০ বছর আগে৷ তখন থেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন সে অঞ্চলের অনেকেই৷ বিশেষ করে, স্থানীয় অনেক কৃষক এই বিমানবন্দরবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন৷
এর আগে, এই বিমানবন্দর হবে কিনা এ নিয়ে রেফারেন্ডামও হয়েছে৷ তখন বিমানবন্দর তৈরির পক্ষেই সিংহভাগ ভোট পড়েছিল৷ যাঁরা বিমানবন্দরের পক্ষে, তাঁরা বলছেন, সরকারে এ সিদ্ধান্তে গণতন্ত্রের পরাজয় ঘটল৷
তবে ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘‘সবচেয়ে সুখের বিষয় হলো, নানা মতের, নানা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার মানুষ এক ছাতার নিচে আসতে পেরেছেন এবং দাবি আদায় করতে পেরেছেন৷ ''
জেডএ/এসিবি (এপি, এএফপি)
প্রতিবেদনটি নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷