বিমানবন্দরে ঝক্কি কমাতে আসছে তল্লাশি যন্ত্র
৮ জুন ২০১১গোটা বিশ্বজুড়ে পাসপোর্টের অপব্যবহার বন্ধ করতে পাসপোর্টের মধ্যে ‘চিপ' বসানোর উদ্যোগ আগেই শুরু হয়ে গেছে, যাতে যন্ত্রের সাহায্যেই চিপ'এর মধ্যে সংরক্ষিত তথ্য পড়ে নেওয়া সম্ভব হয়৷ চিপ'এর মধ্যে ভরা আঙুলের ছাপ সহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে যে কোনো ব্যক্তিকে সনাক্ত করা সম্ভব৷ সেইসঙ্গে চোখের রেটিনা স্ক্যান করতে পারলে যাত্রীর পরিচয় সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহই থাকবে না৷ এই পদ্ধতি বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারলে বিমানবন্দরে চেক-ইন প্রক্রিয়া কত সহজ হয়ে উঠতে পারে, মঙ্গলবার থেকে তারই পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে৷
আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল সংগঠন ‘আয়াটা' ভবিষ্যতের এই চেকপয়েন্ট গড়ে তুলেছে বিমানবন্দরে৷ কোনো যাত্রী ৬.১ মিটার দীর্ঘ এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেলেই তাঁর শরীর ও মালপত্রের তল্লাশির কাজ হয়ে যাবে৷ জুতো বা মালপত্রের মধ্যে তরল পদার্থ বা বিস্ফোরকের মতো কোনো ক্ষতিকারক বস্তু থাকলে তা ধরা পড়ে যাবে৷ নিরাপত্তা কর্মীরা শরীর হাতড়ে বা কিছু জামাকাপড় খুলিয়ে পরীক্ষা করবেন না, সবার সামনে সুটকেস খুলে জিনিসপত্র বেরও করতে হবে না৷ কর্মীদের সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝি, কথা-কাটাকাটি, বিরক্তির কোনো কারণ থাকবে না৷ তাছাড়া তল্লাশির কাজ দ্রুত হলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিমান সংস্থার কাজও অনেক সহজ হয়ে যাবে৷ বর্তমানে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য গড়ে ৩৫ মিনিট সময় লাগে৷ নতুন পদ্ধতিতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তল্লাশি ও সনাক্ত করার কাজ সেরে ফেলা যাবে৷ সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় গত প্রায় এক দশক ধরে বিমানবন্দরে কড়াকড়ি যেভাবে বেড়ে গেছে, তার ফলে অনেক যাত্রী বিরক্ত হয়ে রেল বা সড়কপথে যাত্রা করছেন৷ নতুন ব্যবস্থা চালু করতে পারলে তাদের আবার বিমানবন্দরে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে, ব্যবসা বাড়বে বলে মনে করছে ‘আয়াটা'৷ উল্লেখ্য, বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে মুনাফা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে গেছে বলে ‘আয়াটা' জানিয়েছে৷ গত বছর ১,৮০০ কোটি ডলারের তুলনায় এবছর এখনো পর্যন্ত মাত্র ৪০০ কোটি ডলার মুনাফা এসেছে৷
মার্কিন পরিবহন কর্তৃপক্ষ আগামী ৫ বছরের মধ্যেই নতুন এই পদ্ধতি চালু করতে পারবে বলে আশা করছে৷ গত ৬ মাস ধরে অ্যামেরিকায় এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে, যার আওতায় প্রথমে ঝুঁকি অনুযায়ী যাত্রীদের ভাগ করে কাউকে বেশি, কাউকে কম তল্লাশি করা হবে৷ যারা ঘনঘন যাতায়াত করেন এবং যাদের রেকর্ড'এ কোনো কলঙ্ক নেই, তাদের অযথা বেশি তল্লাশি করার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ৷ কিছু বিমানবন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে এই ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক