1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নয়টা-পাঁচটা নয়, ‘ফ্লেক্সিটাইম’

আন্না পেটার্স/এসি৪ মে ২০১৩

ফ্লেক্সিটাইম, বা ফ্লেক্সিবল ওয়ার্কিং টাইম বলতে বোঝায় অফিসের বাঁধা সময়ের পরিবর্তে কর্মীদের নিজের সুবিধে মতো আসা ও যাওয়া – তবে অফিসের কাজের ক্ষতি না করে এবং নিজের কাজের সময়টা পূর্ণ করে৷

https://p.dw.com/p/18S2q
ছবি: Fotolia/easyshooting.de

ক্রমেই আরো বেশি জার্মান কোম্পানিতে ফ্লেক্সিটাইম চালু করা হচ্ছে৷ তার ফলে অফিসকর্মী এবং কর্মচারীরা পেশা, পরিবার ও অবসর-বিনোদনের মধ্যে দিনের ঘণ্টাগুলো ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন৷ কিন্তু ফ্লেক্সিটাইমের সুবিধের সঙ্গে সঙ্গে কতগুলো অসুবিধেও রয়েছে৷

সে কথা পরে৷ প্রথমে জার্মানির পূর্বাঞ্চলে টুরিঙ্গিয়া রাজ্যের ডিঙেলস্টাট শহরে যাওয়া যাক৷ ধরা যাক এ'টা শুক্রবার দুপুর দু'টো৷ তাহলে দেখা যাবে উলরিকে ফের্নার এর মধ্যেই তাঁর অফিস থেকে বেরোচ্ছেন তিন বছরের ছেলেকে তার কিন্ডারগ্রুপ, বা ছোটদের খেলার গ্রুপ থেকে তুলতে৷

উলরিকে যে কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে কাজ করেন, সেটি হলো ক্রিগার অ্যান্ড শ্রাম৷ উলরিকে যদি প্রয়োজনে একটা আস্ত দুপুরও ছুটি নেন, তা-তে কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের কোনো আপত্তি নেই৷ কেননা এক বছর আগে কোম্পানিটি ‘‘পরিবার-সচেতন কাজের সময়'' বিভাগে জার্মান সরকারের তরফ থেকে জার্মানির সবচেয়ে পরিবারবান্ধব ছোট কোম্পানি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে৷

Führungswechsel bei Bosch
বশ, বিএএসএফ কিংবা ফোক্সভাগেন-এর মতো বড় বড় সংস্থা বহুবছর ধরে এই ফ্লেক্সিটাইমের সুযোগ দিয়ে উচ্চমানের কর্মী সংগ্রহ করছেছবি: picture alliance/dpa

ক্রিগার অ্যান্ড শ্রাম-এ যারা কাজ করেন, তারা তাদের ছোট ছেলে-মেয়েদের কোম্পানির খরচে কিন্ডারগার্টেনে রাখার সুযোগ পান৷ অফিসের মধ্যে কাজের ঘরেই এক কোণে টেবিল-চেয়ার রাখা আছে, যেখানে আরেকটু বেশি বয়সের ছেলে-মেয়েরা বসে তাদের স্কুলের হোমওয়ার্ক করতে পারবে – মা অথবা বাবা কিন্তু তখন নিজের টেবিলে বসে কাজ করছেন৷ একেই বলে ফ্লেক্সিটাইম৷

ক্রিগার অ্যান্ড শ্রাম তাদের কর্মীদের অন্যান্য সুযোগসুবিধাও দেয় – অফিসেই৷ যেমন নিখর্চায় ম্যাসাজ কিংবা পিঠব্যথার জন্য জিমনাস্টিক৷ এবং টুরিঙ্গিয়ার এই কোম্পানিটি কোনো ব্যতিক্রম নয়৷ জার্মানিতে ক্রমেই আরো বেশি কোম্পানি ফ্লেক্সিটাইম চালু করছে৷ ফেডারাল অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ জার্মান কোম্পানিতে ইতিমধ্যেই ফ্লেক্সিটাইম চালু করা হয়েছে৷

ফ্লেক্সিটাইম থেকে কোম্পানিরও যে কোনো লাভ নেই, এমন নয়৷ প্রথমত, কর্মচারীরা খুশি থাকলে তারা কাজ ভালো করে৷ এছাড়া অর্ডার বেশি থাকলে, কাজের চাপ বেশি থাকলে, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেশি কাজ করতে বলা যায়৷ কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হল, ফ্লেক্সিটাইম রাখলে কর্মস্থান হিসেবে কোম্পানির আকর্ষণীয়তা বাড়ে৷

বশ, বিএএসএফ কিংবা ফোক্সভাগেন-এর মতো বড় বড় সংস্থা বহুবছর ধরে এই ফ্লেক্সিটাইমের সুযোগ দিয়ে উচ্চমানের কর্মী সংগ্রহ করছে৷ তাদের লক্ষ্য হলো কম বয়সের ‘‘হাই পোটেনশিয়ালস'' বা উচ্চ সম্ভাবনার তরুণ কর্মী, যাদের কাছে পরিবার, সন্তান প্রতিপালন, পেশা এবং নানা ধরনের হবি কি খেলাধুলা, এর কোনোটাই ফেলনা নয়, বাদ দেবার নয়৷

বড় বড় কোম্পানিগুলির পক্ষে একক কর্মীদের তাদের কাজের সময় নিজের মতো করে সাজিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া অপেক্ষাকৃত সোজা৷ এমনকি পুরো সময়ের চাকরির বদলে আধাসময়ের চাকরি, যাকে বলে পার্ট-টাইম চাকরি, ক্ষেত্র বিশেষে জব-শেয়ারিং, সেটাও এই বড় কোম্পানিগুলি কাজের প্রক্রিয়ায় কোনোরকম বাধা না ঘটিয়েই দিতে পারে৷

ফ্লেক্সিটাইমের বিপদটা হলো এই যে, অফিসের কাজ আর নিজের কাজ কি ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সীমারেখাটা ক্রমশ মুছে যেতে থাকে৷ যেমন জার্মানিতে কর্মচারীদের এক-তৃতীয়াংশ নাকি ইতিমধ্যেই নিয়মিতভাবে বাড়ি থেকে কাজ করে থাকেন৷ এর ফলে নাকি তারা পেশা এবং পরিবার, দু'দিকই ভালো সামলাতে পারেন৷ অপরদিকে এই কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ একটি সমীক্ষায় বলেছেন যে, তথাকথিত ‘টেলিওয়ার্কের' ফলে তাদের ব্যক্তিগত জীবন ও পেশাগত জীবন বড় বেশিভাবে পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য