নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিরিয়ায় জার্মান রাসায়নিক
২৬ জুন ২০১৯জার্মান পত্রিকা স্যুডডয়চে সাইটুং, পাবলিক ব্রডকাস্টার বায়েরিশার রুন্ডফুঙ্ক এবং সুইজারল্যান্ডের টামেডিয়া মিডিয়া গ্রুপ মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাসায়নিক দ্রব্যের পাইকারি সরবরাহকারী জার্মান প্রতিষ্ঠান ব্রেনটাগ এজি ২০১৪ সালে সুইজারল্যান্ডের এক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইসোপ্রোপানল ও ডাইইথিলামাইন নামের রাসায়নিক সিরিয়ায় বিক্রি করেছিল৷ আর এই রাসায়নিকের ক্রেতা এমন একটি সিরিয়ান ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি, যার সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে৷
প্রতিবেদকদের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, সিরিয়ায় সরবরাহ করা ডাইইথিলামাইন বেলজিয়ামের আন্টভের্পের এক কারখানায় উৎপাদন করে জার্মান প্রতিষ্ঠান বিএএসএফ৷ অন্যদিকে, হামবুর্গের এক কারখানায় আইসোপ্রোপানল উৎপাদন করে আরেক জার্মান কোম্পানি সাসোল সলভেন্টস৷
ওষুধ তৈরিতে এসব রাসায়নিক ব্যবহার করা সম্ভব, তবে এ দিয়ে সারিন গ্যাস ও ভিএক্সের মতো রাসায়নিক অস্ত্র ও নার্ভ এজেন্টও তৈরি করা যায়৷
সিরিয়া যুদ্ধে একাধিকবার সারিন গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে আসদ সরকারের বিরুদ্ধে৷ ২০১৭ সালে আইসোপ্রোপানল ব্যবহার করে সারিন গ্যস তৈরি এবং যুদ্ধক্ষেত্রে তা ব্যবহারের প্রমাণ পায় জাতিসঙ্ঘ৷ খান শাইখুন শহরে এ হামলায় অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটে৷
বেআইনি কাজ
স্যুডডয়চে সাইটুংকে ব্রেনটাগ এজি জানিয়েছে, তখনকার নিয়ম মেনেই সুইজারল্যান্ডের মাধ্যমে সিরিয়ায় রাসায়নিক পাঠানো হয়েছে৷
সিরিয়া গৃহযুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটিতে রাসায়নিক কাঁচামাল সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে৷ ২০১২ সাল থেকে ডাইইথিলামাইন এবং ২০১৩ সাল থেকে আইসোপ্রোপানল রপ্তানিতে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন নেয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়৷
নতুন আইনে শুধু সিরিয়ায় সরাসরি সরবরাহ না, বরং সুইজারল্যান্ডের মতো অন্য দেশের মাধ্যমে বিক্রির ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়৷
জার্মান ইকোনমিক্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট কন্ট্রোল জানিয়েছে, যেসময়ে ব্রেনটাগ এজির বিরুদ্ধে রাসায়নিক সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে, সেসময়ে এমন কোনো অনুমোদন তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়নি৷
২০১৪ সালেই আন্তর্জাতিক উদ্যোগে সারিয়ার রাসায়নিক মজুদে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয়৷
তদন্ত চলছে
জার্মানির পশ্চিমের শহর এসেনে ব্রেনটাগ এজির কার্যালয়৷ শহরটির তদন্তকারীরা জানিয়েছেন এরই মধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ বেলজিয়ামের তদন্তকারীরাও এ বিষয়ে খোঁজখবর করছেন৷
বার্লিন-ভিত্তিক এনজিও সিরিয়ান আর্কাইভ, সুইজারল্যান্ডের ট্রায়াল ইন্টারন্যাশনাল ও নিউ ইয়র্কের ওপেন সোসাইটি জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ এরই মধ্যে এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে৷
ওপেন সোসাইটি জাস্টিস ইনিশিয়েটিভ-এর জেমস গোল্ডস্টোন জানিয়েছেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের উচিত কোন সময়ে ঠিক কী ঘটেছে, এবং এর জন্য দায়ী কে, এ বিষয়ে তদন্ত করা৷' আমাদের দায়িত্ব হলো সত্য যাতে প্রকাশ হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা৷''
এডিকে/