চীনা ভবন নির্মাতা এভারগ্র্যান্ড দেউলিয়ার আশঙ্কায় কেন?
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
‘থ্রি রেড লাইনস' নামের নতুন এই আইন অনুযায়ী, কোনো ভবন নির্মাতা ঋণ নিতে চাইলে তাদের কিছু শর্ত মানতে হবে৷ অর্থাৎ আগের মতো চাইলেই ঋণ পাওয়া যাবেনা৷ তাই মঙ্গলবার এভারগ্র্যান্ড স্বীকার করে নিয়েছে, পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে তারা হয়ত তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেনা৷ এই ঘোষণায় অ্যাপার্টমেন্টের জন্য এভারগ্র্যান্ডকে আগাম টাকা দেয়া ক্রেতা, কন্ট্রাক্টর ও বন্ড হোল্ডারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে৷ তিনদিন ধরে বেশ কিছু ক্রেতা বর্তমান অবস্থা জানতে এভারগ্র্যান্ড কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন৷
বর্তমানে এভারগ্র্যান্ডের ঋণের পরিমাণ ৩০০ বিলিয়ন ডলার বা ২৫ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার বেশি৷
এভারগ্র্যান্ডের পরিচিতি
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এভারগ্র্যান্ড চীনের ২৮০টি শহরে প্রায় ৯০০-র মতো আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করেছে৷ চীনে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কারণে ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়তে থাকায় এভারগ্র্যান্ডের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা বেশ ভালো চলছিল৷ ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সেই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করতো এভারগ্র্যান্ড৷ এখন দেউলিয়া হওয়ার মুখে পড়ায় ১০ লাখের বেশি ক্রেতা ফ্ল্যাট পাবেন কিনা সেই আশংকা দেখা দিয়েছে৷
এভারগ্র্যান্ড সংকটের প্রভাব
চীনের প্রবৃদ্ধির অন্যতম বড় চালিকাশক্তি আবাসন ব্যবসা৷ দেশটির মোট আর্থিক লেনদেনের প্রায় ২৯ শতাংশ হয়ে থাকে এই খাতে৷
লন্ডনভিত্তিক অর্থনীতি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক উইলিয়ামস বলছেন, এভারগ্র্যান্ড যদি দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে গত কয়েক বছরের মধ্যে সেটা হবে চীনের আর্থিক ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা৷
বিনিয়োগকারীরা আশংকা করছেন, এভারগ্র্যান্ড দেউলিয়া হলে তার প্রভাব অন্য ডেভেলপারদের উপর পড়তে পারে৷ এছাড়া চীনের ব্যাংক ব্যবস্থাও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে৷
অবশ্য চীনের রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিনোইনসাইডার মনে করছে, বেইজিং এভারগ্র্যান্ডকে দেউলিয়া হতে দেবেনা কারণ এটা সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে৷
এভারগ্র্যান্ড চীনের যে রাজ্যে অবস্থিত সেই গুয়ানডং ইতিমধ্যে এভারগ্র্যান্ডকে বেইলআউট করার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ৷ তবে এভারগ্র্যান্ডের কাঠামো ঠিক করার জন্য অ্যাকাউনটেন্ট ও আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল গঠন করেছে৷
নিক মার্টিন/জেডএইচ