1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রেফতার সাংবাদিক অর্ণব, চলছে বিতর্ক

৫ নভেম্বর ২০২০

বুধবার গ্রেফতার হয়েছেন অর্ণব গোস্বামী। আদালত ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

https://p.dw.com/p/3ktUg
ছবি: AFP via Getty Images

গোটা দেশ যখন তাকিয়ে মার্কিন নির্বাচনের দিকে, ঠিক তখনই মুম্বইতে ঘটে গিয়েছে আর এক নাটক। সাংবাদিক এবং রিপাবলিক টিভির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। অভিযোগ, এক আর্কিটেক্ট এবং তাঁর মায়ের আত্মহত্যার জন্য দায়ী অর্ণব। বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত মুম্বইয়ের এক আদালতে অর্ণবের মামলার শুনানি হয়। বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার ফের জামিনের জন্য আবেদন করার কথা অর্ণবের।

ভারতের অন্যতম বিতর্কিত সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামী। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে সংবাদ নয়, সরকারের প্রোপাগান্ডা করেন অর্ণব। অন্য দিকে, রাজনীতির একাংশ, বিশেষ করে কেন্দ্রীয় শাসক দল অর্ণবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। স্বাভাবিক ভাবেই হাই প্রোফাইল সাংবাদিকের গ্রেফতার নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রায় গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অর্ণবের গ্রেফতারের নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে। মুম্বই সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। আবার মুম্বইয়ের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, 'অর্ণবের গ্রেফতারের সঙ্গে সংবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত বিষয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।'

ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালে। অভিযোগ, এক আর্কিটেক্টকে দিয়ে প্রচুর কাজ করিয়েছিলেন অর্ণব। কিন্তু কয়েক কোটি টাকা বকেয়া রেখে দিয়েছিলেন। বার বার চাওয়া সত্ত্বেও সেই টাকা দেননি অর্ণব। অভিযোগ, তারই জেরে আত্মহত্যা করেন ওই আর্কিটেক্ট এবং তাঁর মা। সুইসাইড নোটেও অর্ণবের কথা লিখে গিয়েছিলেন তিনি।

মামলা শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত মামলা বন্ধ করে দিয়েছিল তৎকালীন মহারাষ্ট্র সরকার। উদ্ধব ঠাকরে ক্ষমতায় এসে নতুন করে সেই মামলা চালু করেছেন ওই আর্কিটেক্টের পরিবারের অনুরোধে। তারই তদন্তে বুধবার সকালে অর্ণবের বাড়ি পৌঁছন পুলিশ অফিসাররা। তাঁরা অর্ণবের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু অর্ণব রাজি হননি। তার পরেই তাঁকে নাটকীয় ভাবে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার মুহূর্তে অর্ণব অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে। কিন্তু আদালত সে অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। পুলিশ অর্ণবের পুলিশ হেফাজত চাইলেও আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

অর্ণবের গ্রেফতার নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে ওই আর্কিটেক্টের পরিবার। সেখানে বলা হয়েছে, সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় রিয়া চক্রবর্তী সহ অনেককেই গ্রেফতারের দাবি তুলেছিলেন অর্ণব। যদিও সুশান্ত সুইসাইড নোট রেখে যায়নি। রিয়াদের নামও কোথাও বলে যাননি। কিন্তু আর্কিটেক্টের সুইসাইড নোটে অর্ণবের নাম ছিল। তাহলে কেন অর্ণবকে গ্রেফতার করা হবে না?

অর্ণবের গ্রেফতারের পর বিভিন্ন মহলে আলোড়ন উঠেছে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এর পক্ষে এবং বিপক্ষে বিবৃতি জারি করেছে। মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের একটি গোষ্ঠী স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছে, অর্ণবের গ্রেফতারের সঙ্গে খবরের কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে এ বিষয়ে তারা কোনো কথা বলবে না। আবার জাতীয় সাংবাদিকদের একটি গোষ্ঠী অর্ণবের গ্রেফতারের নিন্দা করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সমস্ত মন্ত্রী এই ঘটনার নিন্দা করে মহারাষ্ট্র সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে। যদিও প্রশ্ন উঠছে, গৌরী লঙ্কেশ থেকে শুরু করে একাধিক সাংবাদিক হত্যা, বেশ কিছু সাংবাদিককে রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতারের সময় কেন নিশ্চুপ ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা?  সম্প্রতি বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশে একাধিক সাংবাদিকের নামে মামলা করা হয়েছে, সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে তখনো সাসক দলের কেউ একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)