কর্দোবার ফেস্টিভাল
১৫ জুলাই ২০১৬লোকে বলে, কর্দোবা হলো সেই শহর, যেখানকার বাড়িগুলোর ভেতরের প্রাঙ্গণ নাকি সারা স্পেনের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর৷ প্রতিবছর এখানে ‘ফেস্টিভাল অফ দ্য পাটিওস', অর্থাৎ আঙিনা উৎসব উদযাপন করা হয়৷ অবশ্য সে আঙিনা বাসন ধোওয়া কিংবা ময়লা ফেলার উঠান নয়, বরং ফুলের গাছ আর টব দিয়ে সাজানো ভিতরের প্রাঙ্গণ৷ যেমন রাফায়েল কর্দোবার প্রাঙ্গণ৷ তিনিও প্রাঙ্গণ উৎসবে অংশ নিচ্ছেন৷
পাটিও-র মালিক রাফায়েল কর্দোবা, ‘‘অনেক ফুল আছে, প্রায় চারশ' ফুলের টব৷ শুকিয়ে যাওয়া লতাপাতাগুলো সব ফেলে দিতে হবে৷ ফুলগাছে জল কিংবা সার দিতে হবে; হয়ত কোথাও চুনকাম করতে হবে৷ ষোড়শ শতাব্দীর বাড়ি, কত পুরনো বুঝতেই পারছেন৷''
ওদিকে প্রথম দর্শকরা আসার আগে আরাসেলি লোপেস একটি লম্বা লাঠির ডগায় টিন বসিয়ে গাছগুলোয় জল দিচ্ছেন – এটাই নাকি মেপে মেপে জল দেবার সেরা পন্থা, বলেন তিনি৷ মাত্র কিছুদিন হল তিনি এই বাড়িটি কিনেছেন, অর্থাৎ তিনিও পাটিও-র মালিক৷ আরাসেলি বলেন, ‘‘পরিবারের সবাই মিলে বাড়িটা কেনার সিদ্ধান্ত নিই, যাতে এই পুরনো প্রাঙ্গণটাকে বাঁচাতে পারি৷ উঠানটারই বয়স সাড়ে তিনশ বছর৷''
বাড়ির উঠান সাজানোর প্রথা চলে আসছে রোমক আমল থেকে৷ পরে আরব মুর-রা যখন এদেশে আসে, তখন তারাও গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে পরিত্রাণের জন্য একটি প্রাঙ্গণকে ঘিরে তাদের বাড়িঘর তৈরি করতো৷ ১২৩৬ সালে খ্রিষ্টানরা মুর-দের কাছ থেকে কর্দোবা শহরটি পুনর্বিজয় করে৷ পাটিও বান্ধব সমিতির মিগেল আনখেল রলদান, ‘‘রং আর গন্ধ এসেছে আরবদের সঙ্গে৷ ওরা এখানে ওদের নিজেদের মতো করে থেকেছে৷ আরবরা এই ধরনের ওপর দিকে উঠে যাওয়া বাগান পছন্দ করত৷ সে বাগান কিন্তু ছিল শুধু তাদের নিজেদের জন্য৷ দরজা বন্ধ করলেই প্রাঙ্গণটা শুধু তাদের নিজেদের হয়ে যেত৷''
কর্দোবা শহরে প্রায় চার হাজার আঙিনা বা প্রাঙ্গণ আছে৷ পাটিও ফেস্টিভালে ৬০টির বেশি আঙিনা ঘুরে দেখা যাবে৷ শুধু কর্দোবার বাসিন্দা আর টুরিস্টরাই নয়, একটি জুরি সব আঙিনা ঘুরে দেখেন, কেননা এই প্রাঙ্গণ উৎসব একটি প্রতিযোগিতাও বটে৷ বাছা হয় সবচেয়ে সুন্দর পুরনো ধরনের আঙিনা, আর সবচেয়ে সুন্দর হালফ্যাশানের আঙিনা৷