ইউরোপের ‘সেকেলে’ ধর্ষণ আইন বদলের আহ্বান
২৪ নভেম্বর ২০১৮ইউরোপের অনেক দেশে এখনো কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ ইউরোপের ৩১টি দেশের মধ্যে ২৩টিতে ধর্ষণ বলতে যৌন সম্পর্কের সঙ্গে সহিংসতা, হুমকি কিংবা অন্যান্য বলপ্রয়োগের বিষয়কে বোঝানো হয়৷ কিন্তু অসম্মতির বিষয়টিকে এক্ষেত্রে বিবেচনায় আনা হয় না৷
বাকি আটটি দেশ অর্থাৎ জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ব্রিটেন, সাইপ্রাস, আইসল্যান্ড, লুক্সেমবুর্গ এবং সুইডেনে কারো অসম্মতি সত্ত্বেও যৌনমিলনকেও ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷
অ্যামনেস্টির নারী অধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আনা ব্লুস এই বিষয়ে বলেন, ‘‘সম্মতি ছাড়া যৌনসম্পর্ক ধর্ষণ৷ এটাই চূড়ান্ত৷ যতদিন পর্যন্ত সরকারগুলো এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আইন প্রণয়ন না করছে, ততদিন ধর্ষকরা অপরাধ করেও পার পেয়ে যেতে থাকবে৷''
প্রসঙ্গত, জার্মানি ২০১৬ সালে যৌন অপরাধ সংক্রান্ত মামলায় পরিবর্তন আনে৷ এতে বলপ্রয়োগের পাশাপাশি অসম্মতিতে যৌনমিলনকেও ধর্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷
তবে, কিছু দেশে এখনো অসম্মতি সত্ত্বেও যৌনমিলনকে জোরপূর্বক অর্থাৎ সহিংস আচরণ, হুমকি কিংবা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে যৌনমিলনের তুলনায় কম অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়৷ মাল্টায় যৌন অপরাধকে পরিবার বিষয়ক এক আইনের আওতায় বিচার করা হয়৷ এছাড়া, সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডে এক নারীর তোলা ধর্ষণের অভিযোগ আদালতে টেকেনি কেননা যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার আইনজীবী আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে অভিযোগকারী নারী অন্তর্বাস হিসেবে ‘থং' পরেছিলেন যা আইনজীবীর ভাষায় ‘যৌনমিলনে সম্মতির ইঙ্গিত বহন করে৷' আদালত তাই ধর্ষণে অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিকে রেহাই দিয়ে দেন, যার প্রতিবাদে দেশটিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন নারী অধিকারকর্মীরা৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ফান্ডামেন্টাল রাইটস' বিষয়ক এজেন্সির হিসেবে ১৫ বছর বয়স থেকে হিসেব করলে নয় মিলিয়নের মতো নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন৷ অর্থাৎ ইউরোপে প্রতি বিশজনের মধ্যে একজন নারী ধর্ষণের শিকার৷
উল্লেখ্য, ২৫ নভেম্বর নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার অবসান ঘটানোর আর্ন্তজাতিক দিবস৷ এই দিবসের প্রাক্কালে অ্যামনেস্টি ইউরোপে ধর্ষণ আইন বিষয়ক পর্যালোচনা প্রকাশ করেছে৷
প্রতিবেদন: আলেক্সান্ডার পিয়ারসন/এআই