আফগানিস্তানে সামরিক কৌশল নিয়ে নতুন বিতর্ক
১৫ নভেম্বর ২০১০মূলত আফগানিস্তানে জঙ্গি দমনে মার্কিন সামরিক কৌশলের বিরুদ্ধেই তাঁর এই হুঁশিয়ারি৷ তাঁর দাবি, সামরিক তৎপরতা হ্রাস করে বরং জনগণের জীবন মান উন্নয়নে বেসামরিক উদ্যোগ বাড়াতে হবে৷ ‘ওয়াশিংটন পোস্ট'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিষয়টি আরো ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, সেখানে প্রায় এক লাখ মার্কিন সৈন্যের উপস্থিতি এবং বিশেষ করে রাতের বেলা আফগানদের বাড়ি-ঘরে মার্কিন বাহিনীর তল্লাশি অভিযান জনগণের আবেগকে উস্কে দিচ্ছে এবং তরুণ আফগানদের জঙ্গি তৎপরতায় যোগ দিতে উৎসাহিত করছে৷
স্পষ্ট ভাষায় তিনি বললেন, ‘‘এসব অভিযান সবসময়ই একটি সমস্যা৷ এটা আগেও সমস্যা ছিল এবং এখনও সমস্যা৷ তাদেরকে এটা বাদ দিতে হবে৷ আফগান জনগণ এমন অভিযান পছন্দ করে না৷ যদি কোন তল্লাশি অভিযান চালাতেই হয়, তা আফগান আইনের আওতায় আফগান সরকার চালাবে৷ এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েই গেছে৷'' অবশ্য বিদেশি সৈন্যদের একবারে হঠাৎ করেই প্রত্যাহার করার পক্ষে নন কারজাই৷ বরং তিনি চান, মার্কিন সৈন্যদের তৎপরতা সেনাঘাঁটি ভিত্তিক সীমিত করা হোক এবং প্রয়োজন অনুসারে পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকা বরাবর অভিযান চালানো হোক৷
কারজাই এর এসব বক্তব্যে হতাশ হয়েছেন মার্কিন নীতি নির্ধারকরা৷ মার্কিন সিনেটে সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম বিষয়ক কমিটির সদস্য রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, রাতের এসব অভিযান বন্ধ করাটা হবে খুব বড় বিপর্যয়৷ ঠিক একই ধরণের মন্তব্য করলেন ন্যাটোর এক সামরিক কর্মকর্তা৷ বললেন, ‘‘শীঘ্রই এ ধরণের অভিযানের কোন বিকল্প পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি না৷'' এবিসি টেলিভিশনে গ্রাহাম বলেন, ‘‘আমাদের সামরিক শীর্ষ কর্তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে, রাতের এসব অভিযান তালেবান এবং সার্বিকভাবে জঙ্গিদের উপর বেশ প্রভাব ফেলেছে৷''
এদিকে, যুক্তরাজ্যের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ডেভিড রিচার্ডস বললেন, পশ্চিমা গোষ্ঠী আল কায়েদা এবং অন্যান্য ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে পরাজিত করতে সক্ষম হবে না, বরং শুধু দমন করতে পারবে৷ ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইসলামি জঙ্গিদের পরাজিত করাটা ‘‘অপ্রয়োজনীয় এবং তা কখনও অর্জিত হবে না৷'' তবে সুস্পষ্ট বিজয় সম্ভব না হলেও আল কায়েদাকে এতোটা দমন করা সম্ভব হবে যে যুক্তরাজ্যের জনগণ নিরাপদ থাকতে পারবে৷ রিচার্ডস আরো বলেন, আফগানিস্তানে ঝুঁকির মাত্রা অনুধাবন করতে পারেনি যুক্তরাজ্য৷ এছাড়া সেখানে নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ন্যাটো বাহিনীর অক্ষমতায় আফগানিস্তানের মানুষ বেশ বিরক্ত বলেও মন্তব্য করেন রিচার্ডস৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম