টিউনিশিয়ায় হরতাল
৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩শোকরিবেলাইদ-এর অন্ত্যেষ্টির দিনেই দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছিল টিউনিশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী শ্রমিক সংগঠন৷ রাজধানী টিউনিস কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ শহরের প্রধান বিমানবন্দরেও বিমান চলাচল বন্ধ ছিল৷
বেলাইদ-কে শেষ বিদায় জানাতে প্রায় দশ হাজার মানুষ পথে নেমেছে৷ সারা দেশ থেকে মানুষ রাজধানীতে আসে৷ প্রয়াত নেতার মরদেহ নিয়ে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার তারা হেঁটেছে৷ অনেকে কবরখানার বাইরে সরকারের পতনের ডাক দিচ্ছিল৷ কিছু তরুণ আশেপাশে গাড়ি ভাঙচুর করছিল৷ পুলিশ প্রথমে শূন্যে গুলি চালায় ও তারপর বিক্ষোভকারীদের দিকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসও ছুঁড়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়৷ আকাশে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে৷ শোকরি বেলাইদ-এর শোকগ্রস্ত মা নিজের ছেলেকে শহিদ হিসেবে বর্ণনা করেন৷
বুধবার নিজের বাসভবনের সামনে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ ধর্মনিরপেক্ষ এই আইনজীবী ও রাজনীতিক ক্ষমতাসীন ইসলামপন্থি এনাদা পার্টির কঠোর সমালোচক ছিলেন৷ ৪৮ বছর বয়স্ক বামপন্থী জোটের এই নেতার পরিবার সরাসরি এনাদা পার্টিকেই এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করছে৷
বেলাইদ-এর হত্যাকাণ্ডের জের ধরে রাজধানী টিউনিস ও দেশের কেন্দ্রস্থলে গাফসা-য়খনি এলাকায় সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখা গেছে৷ রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে প্রধানমন্ত্রী হামাদি জেবালি বুধবারই এক টেলিভিশন ভাষণে আমলাদের নিয়ে নতুন প্রশাসন গঠনের অঙ্গীকার করেছিলেন৷ কিন্তু তাঁর এনাদা পার্টির মধ্যেই এই পরিকল্পনার বিরোধিতা দেখা যাচ্ছে৷ বৃহস্পতিবার সংসদীয় দলের নেতা সাহবি আতিগ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন৷ ফলে দলের মধ্যে বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে নানা রকম উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে৷
টিউনিশিয়ার রাজনৈতিক আঙিনা বহু বছর ধরে ধর্মনিরপেক্ষ থাকার পর ইসলামি ভাবধারায় অনুপ্রাণিত কিছু দলের শক্তি বেড়ে গেছে৷ বেন আলি-র পতনের পর গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতা বাড়াতে পেরেছে বটে, কিন্তু দেশের সব মানুষ তাদের সব কার্যকলাপ মেনে নিতে পারছে না৷ শোকরি বেলাইদ-এর হত্যাকাণ্ডের জের ধরে সেই ক্ষোভ আরও প্রবল হয়ে উঠেছে, শুক্রবারের হরতালেও যার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে৷ তবে কোনো পক্ষই যাতে ব্যাপক হিংসার পথে না যায়, তার জন্য দেশে-বিদেশে আবেদন শোনা যাচ্ছে৷
এসবি/ডিজি(এপি, রয়টার্স, এএফপি)