‘জোরপূর্বক বোরকা’ ইস্যুতে দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশের নারীরা
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১০আদালত রায় দেন সুলতানার পক্ষে৷ বোরকা পরতে কোনভাবেই বাধ্য নন তিনি৷ বরং কোন মেয়েকে জোরপূর্বকে কোন ‘ড্রেস কোড' মানতে বাধ্য করা এক রকম যৌন হয়রানি বলে রায় দেন আদালত৷
বোরকা ইস্যুতে গত কয়েকমাসে তিনবার উচ্চ আদালত রায় দিলো মেয়েদের পক্ষে৷ গত মার্চ মাসে রংপুরে নয় জোড়া তরুণ-তরুণীকে আটক করে পুলিশ৷ অভিযোগ তরুণীরা বোরকা পরেনি৷ পরবর্তীতে আদালত কিন্তু তরুণীদেরকে কোনভাবেই দায়ী করেননি৷ বরং বোরকা না পরা কোন অপরাধ নয় বলেই মত আদালতের৷
এপ্রিলের ঘটনাতো আগেই বললাম৷ কুড়িগ্রামের এক স্কুলে সুলতানা বানুসহ পঞ্চাশ শিক্ষিকাকে মাথাও চুল সম্পূর্ণ ঢেকে স্কুলে আসতে বলেন এক সরকারি কর্তা৷ এক্ষেত্রেও আদালতের রায় মেয়েদের পক্ষেই যায়৷
সর্বশেষ গতমাসে আদালত রায় দেন শিক্ষার্থীদেরকে কোন ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবেনা৷ উত্তরাঞ্চলের এক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছাত্রীদেরকে নিকাব পরে কলেজে আসতে বলেছিলেন, এমনকি নিকাব বিনা কলেজে আসতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন তিনি৷ কিন্তু আদালত তাঁর এই বাধ্যবাধ্যকতা পুরোপুরি তুলে দিয়েছেন৷ এই বিষয়ে শিক্ষাসচিব সৈয়দ আতাউর রহমানের মন্তব্য, বোরকা বা ধর্মীয় পোশাক না পরলেও কোন মেয়েকে হয়রানি করা যাবেনা৷
তবে, বোরকা পরার পক্ষেও অবস্থান অনেক মেয়ের৷ একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সংবাদ পাঠিকা ফাহমিদা ইসলাম বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, হিজাব পরা আমার স্বাধীনতা৷ বাংলাদেশের উচিত ইসলামি মূল্যবোধকে আরো জাগ্রত করা৷
একইধরণের মত দিলেন সামিয়া ইসলাম৷ স্বামী হজ করার পর বোরকা পরতে শুরু করেছেন তিনি৷ সামিয়া বলেন, একজন মুসলিম নারী হিসেবে স্বপ্রণোদিত হয়ে বোরকা পরেছি আমি৷ আমি মনে করি অন্য নারীদেরও এটা করা উচিত৷ কেননা, এতে করে অনেক অনাকাঙ্খিত উৎপাত থেকে দূরে থাকা যায়৷
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম হলেও বোরকা পরার কোন বাধ্যবাধকতা নেই সেদেশে৷ ঐতিহ্যগতভাবেও বাংলাদেশি মহিলাদের পোশাক শাড়ি অথবা সেলোয়ার কামিজ৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার