ইসলামাবাদে সিনেমা হল
২৭ জুন ২০১৩পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ বেশ জমজমাট শহর৷ তবে ছিল না কোনো সিনেমা হল৷ ২০০৬ সালে শেষ সিনেমাটি বন্ধ হয় যায়৷ সন্ত্রাসবাদ, উগ্র রক্ষণশীল মতবাদের বিকাশ ইত্যাদি কারণে একে একে সিনেমাগুলি বন্ধ হয়ে যেতে থাকে৷ শুধু রাজধানী নয়, গোটা দেশেই একই প্রবণতা৷ ফিল্ম বিষয়ক পত্রিকা মজহার-এর সূত্র অনুযায়ী ১৯৯৫ সালে যেখানে প্রায় ৭৫০টি সিনেমা হল ছিল, ২০০৭ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১৩৯-এ৷
২০০৩ সালে উন্মত্ত জনতা ইসলামাবাদের সবচেয়ে পুরানো সিনেমা হল মেলোডি-তে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ এক বে-আইনি সুন্নি সংগঠনের নেতার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সেখানে চলছিল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ৷ ১৯৬৬ সালে ইসলামাবাদে তৈরি হয়েছিল হলটি৷ আরও বেশ কয়েকটি হল বিভিন্ন কারণে একে একে বন্ধ হয়ে যায়৷
এতদিন পর আবার চালু হলো নতুন একটি হল৷ আসলে বিশাল শপিং মল, যার মধ্যে সিনেমা ঘর৷ একটি নয়, একেবারে পাঁচটি হলের আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির মাল্টিপ্লেক্স৷ নাম ‘সেন্টুরাস'৷ প্রায় সবকটি হলেই ৫০০ লোকের বসার ব্যবস্থা রয়েছে৷ একটি হল শুধু কূটনীতিক ও অন্যান্য ভিআইপি-দের জন্য৷ সেখানে মাত্র ১৭টি আসন৷ হলিউডের পাশাপাশি বলিউড ছবিও দেখানো হচ্ছে৷ ‘দ্য গ্রেট গ্যাটসবি'-র পাশেই চলছে ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি'৷
সিনেমা হলের কোম্পানির প্রধান আমির হায়দার সহজে হার মানার পাত্র নন৷ গত বছরই জনতা করাচিতে তাঁর কোম্পানির একটি সিনেমা হলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো৷ তার পরেও ইসলামাবাদে নতুন হল খুলতে দ্বিধা করে নি কোম্পানি৷ তাঁর মতে, পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ আমোদ করতে ভালোবাসেন৷ তাদের ভালো কিছু দেখালে অবশ্যই দেখবেন৷ তবে পাকিস্তানের নিজস্ব চলচ্চিত্র শিল্প প্রায় ভেঙে পড়ায় আপাতত হলিউড ও বলিউড-ই ভরসা৷ বলিউড ছবি এমনিতেই বেশ জনপ্রিয়৷ আইনি বা বে-আইনি পথে মানুষ সেগুলি ঠিকই দেখে নেন৷
মল-এর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করিডোরে সব বয়সের মানুষ ভিড়৷ কী নেই সেখানে! আছে উর্দু ও হিন্দি গানের সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারাওকে-র ব্যবস্থা৷ দক্ষিণ কোরিয়ার ‘গ্যাংনাম স্টাইল'-এ নাচতেও বাধা নেই৷ এমন সুযোগ পেয়ে শহরের মানুষ বেশ উত্তেজিত৷ সব বয়সের মানুষ ভিড় করছে৷ রাত দশটার পরেও মানুষ ও গাড়ির ভিড় চোখে পড়ার মতো৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ)