কারাবন্দি সাংবাদিকদের প্রতি সংহতি প্রকাশ
১২ ডিসেম্বর ২০১৮রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ৩২ বছর বয়সি ওয়া লন ও ২৮ বছর বয়সি কিঁয় সোয়ে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ইয়াঙ্গনে আটক হন৷ সেই ঘটনার দশ মাস পর মিয়ানমারের বিতর্কিত ‘রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন'-এর আওতায় তাঁদের সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷
রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিক গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক দশ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যারবিষয়ে অনুসন্ধান করেছিলেন৷ দুই সাংবাদিককে আটক এবং শাস্তি দেয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় ওঠে৷ মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তাঁদের শাস্তির সমালোচনা করেন৷ তাঁদের পক্ষে আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অধিকার বিষয়ক আইনজীবী অমল ক্লুনিকে নিয়োগ দেয় রয়টার্স৷
লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটির প্রধান সম্পাদক স্টেফেন জে. আডলার এই বিষয়ে বলেন, ‘‘দুই সাংবাদিক এমন এক অপরাধের জন্য কারাভোগ করেছেন যা আসলে তাঁরা করেননি৷ এ ধরনের শাস্তি তাই গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের প্রতি মিয়ানমারের দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে৷''
প্রসঙ্গত, ওয়া লন ও কিঁয় সোয়ে বরাবরই তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁরা কেবল তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন৷ তাঁরা রাখাইনের একটি গ্রামে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১০ জন রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যার ঘটনা অনুসন্ধান করছিলেন৷ তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন পুলিশের আমন্ত্রণে৷ নৈশভোজের সময় তাঁদের হাতে কিছু নথিপত্র তুলে দিয়েছিল পুলিশ৷ সেই রেস্তোরাঁ ত্যাগ করার পরই ঐ নথিসমেত তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়৷
আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর কিঁয় সোয়ে বলেন, ‘‘সরকার আমাদের কারাবন্দি করে রাখতে পারে৷ কিন্তু জনগণের চোখ এবং কান বন্ধ করতে পারবে না৷''
উল্লেখ্য, গতবছর রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দমনপীড়ন শুরু করলে সাতলাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে৷ এই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে নিজেদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার৷
এআই/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)