ড্রোন হামলায় ‘বাংলাদেশি’ জঙ্গি নিহত, ব্রিটেনে বিতর্ক
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর হত্যা, ধর্ষণ, নারী এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি চরম অবমাননাকর, অমানবিক আচরণকে আগেও অনেক দেশের অনেক ইসলামি চিন্তাবিদ ‘অনৈসলামিক' আখ্যা দিয়েছেন৷ আইএস জঙ্গিদের ‘প্রকৃত মুসলমান' না মানার পক্ষে যুক্তিও দেখিয়েছেন তাঁরা৷ ভারতের বিশিষ্ট ইমামরাও সে কথা বলেছেন আনুষ্ঠানিক বিবৃতির মাধ্যমে৷ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও এসেছে সে খবর৷
ওদিকে ব্রিটেনেও আইএস জঙ্গিরা এখন আলোচনায়৷ আইএস জঙ্গিরা ‘মুসলমান' কিনা, তাদের আচরণ এবং কাজকর্ম মানবিক নাকি অমানবিক – তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন ওঠেনি৷ ইসলামি খেলাফত কায়েমের নামে আইএস যে চরম নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করছে এবং এর ফলে তারা যে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করছে সে সম্পর্কে জঙ্গিদের অনেক স্বজনও একমত৷ তারপরও বিতর্ক এবং বিতর্কটা মূলত আইএস জঙ্গি হত্যার প্রক্রিয়া নিয়ে৷
সম্প্রতি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন রুহুল আমিন এবং রিয়াদ খান নামে দুই ব্রিটিশ জঙ্গিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যা করার কথা সংসদকে জানিয়েছেন৷ তারপর থেকেই চলছে বিতর্ক৷ প্রশ্ন উঠেছে – কাউকে বিচারের মুখোমুখি না করে ড্রোন হামলা চালিয়ে মেরে ফেলা কতটা বৈধ?
কারো কারো মতে, এভাবে ড্রোন হামলা চালিয়ে কোনো ভয়ংকর অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাও অন্যায়৷
ব্রিটেনের প্রচলিত আইন যে এমন পদক্ষেপকে সমর্থন করে না, সে বিষয়টিও তুলে ধরেছেন কেউ কেউ৷
তবে অনেকেই মনে করেন, অপরাধীর অপরাধ সীমা ছাড়িয়ে গেলে এবং তাকে বা তাদেরকে ধরে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো প্রায় অসম্ভব মনে হলে ড্রোন হামলা অবশ্যই সমর্থনযোগ্য৷ সাধারণ মানুষ এবং রাজনীতিবিদরা তো বটেই, এমনকি জঙ্গিদের নিকটাত্মীয়রাও বলছেন এই কথা৷
ড্রোন হামলায় নিহত আইএস জঙ্গিদের মাঝে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকও আছেন৷ তার নাম রুহুল আমিন৷ ঘরে ঘরে যিনি পিৎসা দিয়ে আসতেন, তিনি কীভাবে, কাদের প্ররোচনা বা আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ভয়ংকর জঙ্গি হয়ে উঠেছিলেন সেই কাহিনিও উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে৷
বিবিসি-কে রুহুল আমিনের এক বন্ধু জানিয়েছেন, দুর্ধর্ষ জঙ্গি হিসেবে রুহুল তাঁর প্রাপ্যই পেয়েছেন বলে তিনি মনে করেন৷ তিনি আরো জানান, রুহুল আমিনের জঙ্গি হয়ে মানুষ হত্যায় নেমে পড়ার পেছনে তার পরিবারের কোনো ভূমিকা নেই৷ সে কারণে পরিবারটির প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি৷
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ