1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টুক-টুকে চড়ে এশিয়া থেকে ইউরোপ

এলিসাবেটা গালা/এসি২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

থ্রি-হুইলারে চেপে ব্যাংকক থেকে ফ্রান্সের তুলুস শহর অবধি সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন ইউরোপের তিন তরুণ৷

https://p.dw.com/p/1I11D
Thailand Tschukudu Tuktuk
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Schuler

ঘণ্টায় বড়জোর সত্তর কিলোমিটার গতিতে চলে এই গাড়ি – কোনোরকম ধোঁয়া ছাড়াই৷ কেননা এটি একটি ইলেকট্রিক থ্রি-হুইলার, থাইল্যান্ডে যার নাম টুক-টুক৷ আরোহী হচ্ছেন ফ্রান্স ও জার্মানির তিন আদর্শবাদী তরুণ৷

‘‘এ হলো কারেন, আমাদের ক্যাপ্টেন৷ ও রোজ আমাদের ঠিক শহরে নিয়ে যায়৷''

‘‘এ হলো রেমি৷ ও আমাদের কমিউনিকেশনস ফ্রিক! ওর কল্যাণে আমরা তরুণ জনতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখি৷''

‘‘আর এ হলো আমাদের ইঞ্জিনিয়ার, ও জার্মান৷ গাড়ি ঘণ্টায় কতো কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খায়, এ সব প্রশ্ন উঠলে আমরা লুডভিশকে দেখিয়ে দিই৷''

প্রকল্পের জন্ম একটি খামখেয়াল থেকে৷ ব্যাংককে একটি বৈদেশিক সেমেস্টার করার পর এই তিনজন সোজা বিমান ধরে বাড়ি ফিরতে চাননি৷ এর বদলে তাঁরা এশিয়া ও ইউরোপের ১৬টি দেশের ভিতর দিয়ে বিশ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফেরেন৷ অবশ্য স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ছাড়াও কারেন, রেমি আর লুডভিশ-এর এই অ্যাডভেঞ্চারের একটা অন্য উদ্দেশ্য ছিল৷ বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্র কারেন কুলাকিয়ঁ জানালেন, ‘‘আমরা টুক-টুক ব্যবহার করেছি, কেননা এটা মানুষজনকে ইলেক্ট্রো-মোবিলিটি বা গ্রিন এনার্জি সম্পর্কে জানানোর একটা ভালো পন্থা৷''

দীর্ঘ পথ

চার মাস ধরে পথ চলেছেন তাঁরা৷ চূড়ান্ত গন্তব্য হলো ফ্রান্সের তুলুস শহর৷ সেখানে পৌঁছানোর আগে এটাই শেষ বিরতি৷ ওদের টুক-টুকটা অর্ডার দিয়ে তৈরি করানো৷ কোনোরকম বড় গোলযোগ ছাড়াই এতটা পথ চলেছে৷ রেমি ফার্নান্দেস-দঁদ্রে-ও বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্র৷ তিনি জানালেন, ‘‘এটা পুরোপুরি ইলেকট্রিকে চলে৷ সোলার প্যানেলগুলো থেকে ১৫ শতাংশ কারেন্ট আসে; কিন্তু শক্তির মূল অংশটা আসে গাড়ির নীচের লিথিয়াম ব্যাটারিগুলো থেকে৷ শুধু প্রতিদিন চার্জ করতে হয়৷'' যেটা সবসময় খুব সহজ কাজ হয় না৷

কারেন কুলাকিয়ঁ বললেন, ‘‘কিছু কিছু জায়গায়, বিশেষ করে চীনে টুক-টুক চার্জ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে৷ প্রথমে তো আমরা আমাদের গাড়ির কলকাঠি ঠিক বুঝতাম না, কোনটা ইলেকট্রিক আর কোনটা কী৷ একবার তো ভোল্টেজ কম হয়ে যাওয়ায় আর আমাদের অন্য কোনো ব্যাটারি না থাকায় টুক-টুক ঠেলে পাহাড়ে তুলতে হয়েছিল!''

পরিবেশবান্ধব রিকশাটির ওজন এদিকে এক টনের বেশি! এছাড়া কখনো রাস্তা খারাপ, কখনো আবহাওয়ার দুর্যোগ, বৃষ্টি-বাদল-ঠান্ডা! তবে সব সমস্যা সত্ত্বেও যেটা তারা সব সময়েই পেয়েছেন, সেটা হল মানুষের সাহায্য আর আতিথেয়তা৷ রেমি বললেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সাধারণভাবে মানুষদের সম্পর্কে নতুন অনেক কিছু জানতে পেরেছি৷ এছাড়া বিদ্যুৎশক্তি বাস্তবিক যানবাহনের ভবিষ্যৎ বলে আমাদের ধারণা হয়েছে৷''

ইলেকট্রো-মোবিলিটি

ব্যাটারি একবার চার্জ করেই ৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে এই টুক-টুক৷ পথে তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে ওয়ার্কশপ করেছেন ও তাদের প্রকল্পের বিবরণ দিয়েছেন৷ লুডভিশ ম্যারৎস-এর অভিমতে, ‘‘ওটাই আমাদের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বলে আমার ধারণা৷ আমাদের এই যাত্রা থেকে আমরা দেখাতে পেরেছি যে ইলেকট্রো-মোবিলিটি বা বৈদ্যুতিক পরিবহণ একটা মজার ব্যাপার৷ এছাড়া এ ধরনের একটা প্রকল্প, একটা সুদীর্ঘ যাত্রাকে একটা পরিবেশগত তাৎপর্য দেওয়া যেতে পারে৷ কাজেই আমাদের অভিযানের ফলাফল বেশ ভালো হয়েছে, বলে আমার বিশ্বাস৷''

স্পন্সরদের কল্যাণে আর ইন্টারনেটে ক্রাউড-ফান্ডিং-এর মাধ্যমে এই তিনজন তাদের প্রকল্পের অর্থায়ন করেছেন৷ এমনকি কারেন আর রেমি-র পক্ষে এই যাত্রা হলো তাঁদের এমএ থিসিস৷ তবে তিনজনেই জানেন, যানবাহনের বিকল্প ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে এই যাত্রাই তাদের শেষ যাত্রা নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান